বোলপুরের আইসি-কে ফোনে হুমকি ও তাঁর পরিবারের মহিলাদের কু-কথা বলার অভিযোগে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা হয়েছে বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত (কেষ্ট) মণ্ডলের বিরুদ্ধে। দু’বার তলব এড়িয়ে, শেষ পর্যন্ত পুলিশের কাছে হাজিরা দিয়েছেন কেষ্ট। তবে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত আগাম জামিনের আবেদন করেননি। এই পরিস্থিতিতে, আগামী শনিবার তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের ডাকা বৈঠকে কেষ্ট কলকাতায় যাবেন কি না, তা নিয়ে জোর চর্চা চলছে বীরভূম তৃণমূলের অন্দরে।
অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রের দাবি, কলকাতার বৈঠকে কেষ্ট হাজির না-ও থাকতে পারেন। কারণ, আগাম জামিন না নিয়ে দলের বৈঠকে যোগ দিলে, নতুন বিতর্ক হতে পারে। কী হতে চলেছে কেষ্টর আইনি পদক্ষেপ তা জানতে তাঁর আইনজীবী বিপদতারণ ভট্টাচার্যকে এ দিন একাধিক বার ফোন করা হলেও, তিনি ধরেননি। জবাব মেলেনি মোবাইল-বার্তার।
কেষ্টর বিরুদ্ধে কেন পুলিশ কড়া পদক্ষেপ করছে না, সে প্রশ্ন নিয়মিত তুলছে বিরোধী-সহ বিভিন্ন মহল। সোমবার বোলপুরে বিজেপির ‘নারী সম্মান যাত্রা’ থেকে অনুব্রতর গ্রেফতার চেয়ে সরব হন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডলের কটাক্ষ, ‘‘পুলিশের সদিচ্ছা নেই। তাই কোনও ব্যবস্থা হল না। জামিন না নিয়ে উনি যদি দলের বৈঠকে যোগ দেন, সে ক্ষেত্রে ওদের দল বুঝবে, কী করবে। তবে মহিলাদের প্রতি এই অপমানের জবাব আগামী দিনেদেবেন মহিলারাই।’’
কেষ্টকে মঙ্গলবার বোলপুরে দলীয় দফতরেই দেখা গিয়েছে। বিকেল সাড়ে ৪টে থেকে প্রায় আড়াই ঘণ্টা দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করেন। হাজির ছিলেন তৃণমূলের জেলা কোর কমিটির সদস্য সুদীপ্ত ঘোষ, জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়-সহ জেলার নেতা-কর্মীরা। সূত্রের দাবি, সেখানে কেষ্ট এক সঙ্গে চলা ও ঐক্যবদ্ধ থাকার বার্তা দেন। তবে অডিয়ো-বিতর্ক বা কলকাতায় যাওয়া নিয়ে কথা হয়নি।
সোমবার কেষ্টর সঙ্গেই জেলার আর এক দাপুটে তৃণমূল নেতা তথা বীরভূম জেলা সভাধিপতি কাজল শেখকেও বিঁধেছিলেন শুভেন্দু। কাজলের ‘বাড়বাড়ন্ত’ কমানোর কথা বলে শুভেন্দু দাবি করেন, কাজল তাঁর সঙ্গে কোলাঘাটে দেখা করতে যেতেন। এ দিন কাজল বলেন, ‘‘তখন উনি তৃণমূলে ছিলেন। জানতাম না, শুভেন্দু অধিকারী বড় ডাকাত। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তা ধরে ফেলেন।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)