ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে কিছুটা ‘ধীরে চলো’ অবস্থান নিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলীয় স্তরে প্রস্তুতি চললেও নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকার জন্যই অপেক্ষা করছেন দলীয় নেতৃত্ব। তৃণমূল সূত্রে খবর, এই কর্মসূচিতে দলের ভূমিকা কী হবে, তা কমিশনের নির্দেশিকা দেখেই ঘোষণা করা হবে।
তালিকা সংশোধন নিয়ে গত এপ্রিল মাস থেকেই সাংগঠনিক স্তরে প্রস্তুতি শুরু করেছিল তৃণমূল। মূলত দিল্লির নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকেই এই সংশোধনের কাজে দলের ভূমিকা নির্দিষ্ট করে সেই প্রস্তুতি চলছিল। তবে বিহারে কমিশনের ঘোষিত ‘বিশেষ ও নিবিড় সংশোধন’ বা এসআইআর-এর পর এই কাজে বিশেষ মাত্রা যোগ হয়েছে বলে মনে করছেন দলীয় নেতৃত্ব। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘বিহারের পরিস্থিতি দুটি আলাদা বিষয় সামনে এনেছে। এক, নাম অর্ন্তভূক্তি বা নথিবদ্ধকরণ প্রক্রিয়া এবং দুই, নীতিগত আপত্তি।’’ এই অবস্থায় দলের প্রস্তুতিতেও বদল করার সম্ভাবনা দেখছেন দলীয় নেতৃত্ব। সাধারণ ভাবে বুথ, ব্লক ও জেলা স্তরে তৃণমূলের নির্দিষ্ট সাংগঠনিক কাঠামো অনেকটাই তৈরি হয়ে গিয়েছে। সংশোধনে কমিশন রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধি বা বিএলএ-দের নাম ও ফোন নম্বর চেয়ে কমিশন যে চিঠি দিয়েছে, সে ব্যাপারেও আপাতত নীরব থাকছে রাজ্যের শাসকদল।
আসন্ন সংশোধনে যে দু’টি বিষয়কে তৃণমূল বিবেচনায় রাখছে একটি এই প্রক্রিয়া। এই অর্ন্তভূক্তি বা বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে এ রাজ্যে কমিশন ঠিক কোন বিষয়গুলিকে মাপকাঠি হিসেবে রাখে, তাই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে তৃণমূল। কারণ বিহার ও পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক- সামাজিক ইতিহাস এবং পটভূমি ভিন্ন। তাতে দুই রাজ্যে এই দুই কাজে শর্ত আলাদাও হতে পারে। তা দেখেই সংশোধন প্রক্রিয়া নিয়ে দলের অবস্থান চূড়ান্ত ভাবে জানাবেন দলীয় নেতৃত্ব। এর সঙ্গেই নীতিগত বিষয়টিও জড়িয়ে রয়েছে। কারণ বিহারের কর্মসূচিকে ঘুরিয়ে ‘এনআরসি’ বলে চিহ্নিত করে ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে নিজেদের আপত্তি জানিয়ে রেখেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেক্ষেত্রে এ রাজ্যে কমিশন যে শর্তাবলী নির্ধারন করবে, তার উপরে নির্ভর করছে তাঁদের এই নীতিগত অবস্থানের ভবিষ্যতও। পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টে যে মামলা চলছে, তাও অন্যান্য বিরোধীদের মতো তৃণমূলের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা ঠিক করে দিতে পারে।
আগামী মঙ্গলবার দলের সর্বস্তরের নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে প্রাথমিক কিছু ধারণা দিতে পারেন অভিষেক। সেই সঙ্গেই রাজ্য সরকার যে ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচি নিয়েছে, তাকে পূর্ণমাত্রায় জনসংযোগের কাজে লাগাতে পরামর্শও দেবেন তিনি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)