পাঁচ মাস আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়ি ঘিরে গোলমালের ঘটনায় ছেলেটিকে তলব করেছিল পুলিশ। অত্যন্ত মর্যাদার মারি কুরি ফেলোশিপ নিয়ে স্পেনের গ্রেনাডায় পিএইচডি-রত যাদবপুরের সেই প্রাক্তনী হিন্দোল মজুমদার পুলিশের চিঠির জবাবও দিয়েছিলেন। তবু ছুটিতে দেশে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে লুকআউট নোটিসের ভিত্তিতে দিল্লিতে তাঁকে গ্রেফতার হতে হয়েছে। বৃহস্পতিবার হিন্দোলকে দিল্লির পাটিয়ালা হাউস কোর্টে তোলা হলে বিচারক তাঁকে সোমবারের মধ্যে কলকাতায় আলিপুর কোর্টে হাজির করানোর নির্দেশ দেন। হিন্দোলকে ট্রেনে করে কলকাতায় এনে আদালতে হাজির করা হবে বলে আদালতে জানিয়েছে পুলিশ।
সুদূর স্পেনে বসে যাদবপুরের গোলমালে কী ভাবে হিন্দোল এক জন চক্রান্তকারী হিসেবে চিহ্নিত হলেন, তা নিয়ে নানা মহলেই প্রশ্ন উঠছে। যাদবপুরের বিক্ষোভারীদের সঙ্গে ঘটনার দিন চ্যাটে হিন্দোলের কিছু কথা হয়েছিল। কলকাতায় এ দিনই হিন্দোলের গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ব্রাত্য বলেন, “বিষয়টা আমি মিডিয়া থেকে জানতে পেরেছি। পুলিশের সঙ্গে এ বিষয়ে আমার কোনও কথা হয়নি।”
হিন্দোলের বাবা চন্দন মজুমদার যাদবপুরে কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মা শাশ্বতী মজুমদার ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। চন্দন এ দিন বলেন, “মার্চে হিন্দোলের নামে পুলিশ অভিযোগ দায়ের করায় আমরা উপযুক্ত বিধি মেনেই সাড়া দিই। নগরপালের কাছেও জবাব পাঠানো হয়েছিল। লুকআউট নোটিসের বিষয়টি জানানোই হয়নি।” শাশ্বতী সংবাদমাধ্যমে বলেন, “যাঁরা এত বাঙালি অস্মিতার কথা বলেন, তাঁরাই বিদেশে মর্যাদার ফেলোশিপ নিয়ে গবেষণারত ছাত্রকে হেনস্থা করছেন।”
এ দিন বিকেলে প্রতিবাদে উত্তাল হয় যাদবপুরের ক্যাম্পাস। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি পার্থপ্রতিম বিশ্বাস এবং সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “এই গ্রেফতারি প্রতিহিংসাপরায়ণ পুলিশি রাষ্ট্রের চেহারাই সামনে এনেছে।” নিন্দায় সরব হয়েছে যাদবপুরের প্রাক্তনীদের সংগঠন পুরাতনীও।
শিক্ষামন্ত্রীর গাড়িতে যাদবপুরের এক ছাত্রের আহত হওয়ার ঘটনায় এপিডিআর-এর তরফে ব্রাত্য ও তাঁর চালকককে গ্রেফতারের দাবি তোলা হয়। যাদবপুর-কাণ্ডে এর আগে তিন জনকে পুলিশ ধরলেও তাঁরা প্রমাণাভাবে কোর্টে জামিন পান।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)