ফাইল চিত্র।
কারণে-অকারণে আলু, পেঁয়াজ-সহ কৃষিপণ্যের দাম যাতে বেড়ে না-যায় অথবা বেড়ে গেলেও তা যাতে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সেই জন্যই গড়া হয়েছিল টাস্ক ফোর্স। কিন্তু কেন্দ্রীয় কৃষি আইন পাশ হয়ে যাওয়ায় সেই টাস্ক ফোর্সের অস্তিত্ব নিয়েই জল্পনাকল্পনা শুরু হয়েছে রাজ্যের প্রশাসনিক স্তরে। কৃষি দফতরের অনেক কর্তারই ধারণা, এ বার বাজারে বিক্রেতাদের কাছে টাস্ক ফোর্স গুরুত্বহীন হয়ে যাবে।
আনাজের দাম বাড়লেই ফড়েদের দাপাদাপি ঠেকিয়ে দামের লাগাম ধরতে টাস্ক ফোর্সকে বাজারে বাজারে পাঠিয়ে দেয় রাজ্য সরকার। সেখানে বিক্রেতাদের কাছে ‘পারচেজ় স্লিপ’ বা কেনাকাটার চিরকুট দেখতে চান টাস্ক ফোর্সের সদস্যেরা। পাইকারি ক্রয়মূল্য থেকে বিক্রয়মূল্য ২-৩ টাকা বেশি হলে আপত্তি তোলা হয় না। কিন্তু ফারাক অনেক বেশি হলে ওই চিরকুট মিলিয়ে আড়তের ক্রয়কেন্দ্র পর্যন্ত ধাওয়া করে টাস্ক ফোর্স। সেখানে কী দামে বিক্রেতাকে আনাজ দেওয়া হয়েছে, বেশি দাম নিলে তার কারণ কী— সব কিছু খতিয়ে দেখে এবং ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে কথা বলে সরকারকে রিপোর্ট দেন টাস্ক ফোর্সের সদস্যেরা।
এখন কৃষিকর্তাদের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় আইনের ফলে বিক্রেতারা আর টাস্ক ফোর্সকে জবাবদিহি করতে বাধ্য নন। বরং কোন এক্তিয়ারে টাস্ক ফোর্সের লোকজন জবাবদিহি চাইবেন, এ বার সেই প্রশ্ন তুলতে পারেন বিক্রেতারা। টাস্ক ফোর্সের এক সদস্য বলেন, “চাষি যে-ফসল উৎপাদন করেন, তা খুচরো বাজারে পৌঁছয় অন্তত চার হাত ঘুরে। দামটা সেখানেই বেড়ে যায়। এনফোর্সমেন্ট বিভাগ থাকায় অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি কিছুটা হলেও ঠেকানো যায়।”
কৃষি দফতরের এক কর্তা অবশ্য জানান, টাস্ক ফোর্স থাকায় বেআইনি মজুত এবং মাঠ থেকে বাজার পর্যন্ত ফসল পৌঁছনোর প্রক্রিয়ার উপরে নজরদারি চালানো যায়। অন্তত এত দিন যেত। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আর সেটা সম্ভব নয়।
“টাস্ক ফোর্স অকেজো হবে না। চাষির ক্ষতি করে মুখ্যমন্ত্রী কিছু করবেন না। উপযুক্ত সিদ্ধান্তই নেবেন তিনি। রাজ্য সরকার কৃষকদের পাশে থাকায় কেন্দ্র আইন করে তাঁদের ক্ষতি করতে পারবে না,” বলেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়।
কিন্তু রাজ্য প্রশাসনেরই অনেক কর্তা মনে করছেন, কেন্দ্রের আইন রাজ্যে আটকানো মুশকিল। কৃষি রাজ্যের এক্তিয়ারভুক্ত বিষয় ঠিকই। কিন্তু আন্তঃরাজ্য কৃষিপণ্য চলাচল নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ তালিকাভুক্ত। এই দিকটা ভেবেই কৃষি আইন প্রণয়ন করেছে কেন্দ্র। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের মোকাবিলা করার পথ খুঁজছে রাজ্য সরকার। নেওয়া হচ্ছে আইনি পরামর্শ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy