Advertisement
E-Paper

‘কম নম্বর পাওয়া’ ববিতার নিয়োগ বাতিল চেয়ে হাই কোর্টে অনামিকা! দাবি, তাঁকে চাকরি দেওয়া হোক

নিয়োগের জটিলতার কথা জানিয়ে সোমবারই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ববিতা। তার পর দিনই হাই কোর্টে এলেন, নিজেকে ‘যোগ্য প্রার্থী’ হিসাবে দাবি করা শিলিগুড়ির অনামিকা রায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২৩ ১২:৪৮
চাকরির প্রশ্ন ওঠার পরই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন ববিতা। তার পর দিনই হাই কোর্টে হাজির  নতুন দাবিদার অনামিকা।

চাকরির প্রশ্ন ওঠার পরই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন ববিতা। তার পর দিনই হাই কোর্টে হাজির নতুন দাবিদার অনামিকা। ফাইল চিত্র ।

মন্ত্রীকন্যার জায়গায় স্কুলশিক্ষিকার চাকরি পাওয়া ববিতা সরকারের বিরুদ্ধে এ বার হাই কোর্টে গেলেন অনামিকা রায়। নিজেকে যোগ্য প্রার্থী হিসাবে দাবি করে অনামিকা হাই কোর্টে আর্জি জানিয়েছেন ববিতার চাকরি বাতিল করে ওই চাকরি তাঁকে দেওয়া হোক। অবশ্য ২৪ ঘণ্টা আগে ববিতা নিজেই নিজের নিয়োগে অনিয়ম হয়েছে জানিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন হাই কোর্টের। মঙ্গলবার অনামিকা হাই কোর্টকে জানিয়েছেন, বেশি নম্বর পাওয়ায় তিনিই ওই চাকরির যোগ্য দাবিদার।

নিয়োগ মামলায় দীর্ঘ লড়াইয়ের পর আদালতের নির্দেশে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরিটি পেয়েছিলেন ববিতা। তবে সম্প্রতি সেই চাকরির বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। জানা যায়, স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর কাছে আবেদন করার সময় ববিতার স্নাতক স্তরের শতকরা নম্বর বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে। যার ফলে তাঁর ‘অ্যাকাডেমিক স্কোর’ বেড়ে যায়। এ নিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়ার পরেই ববিতা জানিয়েছিলেন, তিনি নিজেই বিষয়টি উচ্চ আদালতের নজরে আনবেন। সেই মতো সোমবারই হাই কোর্টে যান ববিতা। আদালত সূত্রে খবর, তাঁর আবেদন গ্রহণও করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এমনকি, ববিতার আবেদনের ভিত্তিতে মামলায় এসএসসি যুক্ত করতেও বলেন বিচারপতি। জানিয়ে দেন, বুধবার ববিতার আবেদনের পরবর্তী শুনানি হবে। ববিতার চাকরি বাতিলের দাবিতে করা অনামিকার আবেদনটিও বুধবারই হাই কোর্টে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চেই শুনানি হবে বলে আদালত সূত্রে খবর। মঙ্গলবার বিচারপতি অমৃতা সিংহের বেঞ্চ অনামিকাকে ওই মামলা দায়েরের অনুমতিও দিয়েছেন।

সম্প্রতি এসএসসি-র কাছে জমা দেওয়া ববিতার আবেদনপত্রের একটি ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেটির সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি। কিন্তু সেই আবেদনপত্রে দেখা যাচ্ছে, স্নাতক স্তরে ৮০০ নম্বরের মধ্যে ৪৪০ নম্বর পেয়েছেন ববিতা। অর্থাৎ, শতকরা হিসাবে ৫৫ শতাংশ। অভিযোগ, ‘ভুল’ সেখানেই! স্নাতক স্তরের প্রাপ্ত নম্বরের শতকরা হিসাব ৬০ শতাংশ বা তার বেশি উল্লেখ করা হয়েছে আবেদনপত্রে। যে কারণে ববিতার ‘অ্যাকাডেমিক স্কোর’ গণনায় ভুল হয়েছে। নিয়োগের দাবিতে আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থাকা চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের দাবি, এই অভিযোগ যদি সত্যি হয়, সে ক্ষেত্রে ববিতার ‘অ্যাকাডেমিক স্কোর’ ৩৩-এর বদলে কমে ৩১ হবে। এতে র‌্যাঙ্কিংয়েও অনেকটাই পিছিয়ে পড়বেন ববিতা! প্রসঙ্গত, চাকরিপ্রার্থীদের মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতকস্তর-সহ সব পর্যায়ের শিক্ষাগত যোগ্যতা (এডুকেশনাল কোয়ালিফিকেশন)-র উপর কিছু নম্বর ধার্য করা হয়। যাকে ‘অ্যাকাডেমিক স্কোর’ বলা হয়।

আবেদনপত্রে ‘ভুল’ তথ্যের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরেই তালিকায় ববিতার পিছনে থাকা অনামিকা রায় নামে এক চাকরিপ্রার্থী জানান, অভিযোগ যদি সত্যি হয়, তা হলে ওই চাকরিটি আসলে তাঁর পাওয়ার কথা। এ প্রসঙ্গে অনামিকার আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত এবং বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার নম্বর কেউ জানত না। হাই কোর্টের নির্দেশে বিস্তারিত তথ্য-সহ নম্বর প্রকাশ পায়। অতএব, কে কত পেয়েছেন সবাই জানেন। আবার ববিতা মামলা করে অনেক আগে নিজের প্রাপ্ত নম্বর জানতে পেরেছেন। ফলে তিনি জানতেন যে তাঁকে অ্যাকাডেমিক স্কোরে বেশি নম্বর দেওয়া হয়েছে। চাকরি নেওয়ার আগে আদালতে তা জানানো উচিত ছিল। কিন্তু তিনি তা না করে চাকরি নিয়েছেন। প্রসঙ্গত, এসএসসি-র চেয়ারম্যান গত বছর ১৭ মে ববিতার নম্বর আদালতে জানান। সেই মোতাবেক বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জুন মাসে অঙ্কিতার চাকরি ববিতাকে দেওয়ার নির্দেশ দেন।

ববিতার আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের যুক্তি, ববিতার নম্বর আদালতে এসএসসি জানায়। তার প্রেক্ষিতেই চাকরি হয়। ববিতা ফর্ম পূরণ করার সময় স্নাতকে নিজের প্রাপ্ত নম্বর ঠিক দিয়েছেন। সেখানে কোনও ভুল নেই। কিন্তু শতাংশের বিকল্প নির্বাচনের ক্ষেত্রে কোনও ভুল হয়ে থাকলে সেই তথ্য যাচাই করার দায়িত্ব এসএসসি-র। যদি কোনও প্রার্থী ফর্ম পূরণে ভুল তথ্য দেয় তবে এসএসসি-র দায়িত্ব ব্যবস্থা নেওয়ার। তবে এখন আদালত যা নির্দেশ দেবে তা মেনে নেওয়া হবে।

রাজ্যের মন্ত্রী পরেশচন্দ্র অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতাকে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে বেআইনি ভাবে চাকরি দেওয়া হয়েছে এই দাবি করে হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন ববিতা। আদালতের নির্দেশে চাকরি যায় অঙ্কিতার। সেই জায়গায় চাকরি পান ববিতা। সঙ্গে অঙ্কিতার বেতনের ১৫ লাখ টাকাও তাঁকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।

West Bengal SSC Scam Babita Sarkar Ankita Adhikary
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy