যে কোনও রাজ্যের বাজেট অধিবেশন শুরু হয় সেই রাজ্যের রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে। কিন্তু সোমবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বাজেট অধিবেশনের সূচনায় রইল না রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের ভাষণ। শোকপ্রস্তাব পাশ করে প্রথম দিনের অধিবেশন মুলতুবি হয়ে গিয়েছে সোমবার। মঙ্গলবার হাওড়া পুরসভা সংক্রান্ত বিল পেশ করা হবে। বুধবার রাজ্য বাজেট পেশ করবেন অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
রাজ্যপালের ভাষণ ছাড়া বাজেট অধিবেশন শুরু হওয়া নিয়ে সোমবার দুপুর পর্যন্ত রাজভবনের তরফে কোনও বিবৃতি মেলেনি। তবে রাজনৈতিক মহলের অনেকেই সমগ্র বিষয়টিকে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজভবনের চলমান সংঘাতের নতুন অংশ হিসেবে দেখছেন। উল্লেখ্য, এ বার বাজেট অধিবেশনে যে রাজ্যপালের ভাষণ থাকবে না, সেই ইঙ্গিত মিলেছিল গত শীতকালীন অধিবেশনেই। কারণ, স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অধিবেশন শেষ না করেই অধিবেশন মুলতুবি করে দিয়েছিলেন। অর্থাৎ, বাজেট অধিবেশন কোন ‘নতুন অধিবেশন’ নয়। এটি শীতকালীন অধিবেশনেরই প্রলম্বিত বা বাকি অংশ। ফলে সেখানে শুরুতে রাজ্যপালের ভাষণ না থাকলেও চলে। যদিও সরকারপক্ষ চাইলে পরে আলোচনার ভিত্তিতে শীতকালীন অধিবেশন চালানো যেত এবং অধিবেশন শেষ করা যেত। কিন্তু তা হয়নি। তাই এ বছর বাজেট অধিবেশনের শুরুতে রাজ্যপালের ভাষণ রাখা হয়নি।
আরও পড়ুন:
-
তৃতীয় কন্যাসন্তানকে খুনই প্রথম ‘কীর্তি’ নয়! বড় দুই মেয়েকেও বিক্রি বা খুনের চেষ্টা ডোমকলের দম্পতির
-
এল নিনোর কবলে চার দিন ধরে পুড়ছে চিলি! দাবানলের আগুনে মৃত্যু শতাধিক, পুড়ে ছাই বহু বাড়ি, গাড়ি
-
কেরলে গিয়ে বিপদে ইমন! স্বামীকে পাশে নিয়েও ভয়ে ঠক ঠক করে কাঁপছেন গায়িকা
-
শতরানের পর ‘উধাও’ শুভমন, চতুর্থ দিন মাঠেই দেখা গেল না ভারতীয় ক্রিকেটারকে, কেন?
লোকসভা ভোটের কারণে কেন্দ্রীয় সরকারও এ বার পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করেনি। গত ১ ফেব্রুয়ারি লোকসভায় ‘অন্তর্বর্তী বাজেট’ পেশ করেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। নতুন সরকার শপথ নেওয়ার পরে পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করা হবে। এ ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারগুলির কাছে দু’বার বাজেট পেশ করার সুযোগ রয়েছে। তাই পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই বাজেটের পর আবারও লোকসভা ভোটের পর বাজেট পেশ করতেই পারে। সেই বাজেট অধিবেশনে রাজ্যপালের ভাষণ হতে পারে। তবে নবান্নের তরফে এখনও সে ব্যাপারে কোনও ইঙ্গিত মেলেনি। যদিও প্রশাসনের একাংশের বক্তব্য, ভেবেচিন্তেই এ বছর বাজেট অধিবেশনে রাজভবনকে শামিল না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন।
রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে শাসকদলের মধ্যে ‘ক্ষোভ’ রয়েছে। আবার বিরোধী দল বিজেপিও খোলাখুলি বলছে, এই রাজ্যপাল সঠিক ভাবে তাঁর দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দু’দিন আগেও বলেছেন, রাজ্যপালের যা করা উচিত, তা তিনি করছেন না। অন্যদিকে, নবান্নের সঙ্গে বিবিধ বিষয়ে রাজভবনের দ্বন্দ্ব, সংঘাত প্রকাশ্যে এসেছে। বাজেট অধিবেশনকে ঘিরে তা আরও একবার প্রকাশ্যে এল। অতীতে বাজেট অধিবেশনে রাজ্য সরকারের লিখে দেওয়া বক্তৃতা না পড়তে চাওয়ায় জগদীপ ধনখড়কে ঘিরে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটেছিল বিধানসভায়। গোটা ভাষণ না পড়ে নেমে আসতে চাওয়ায় শাসকদলের মহিলা বিধায়কেরা কার্যত ঘিরে ফেলেছিলেন তৎকালীন রাজ্যপাল ধনখড়কে। রাজ্যপাল বোসকে অবশ্য বিধানসভার মধ্যে এখনও ততটা ঘোরাল অবস্থায় পড়তে হয়নি।