ফাইল চিত্র।
করোনার টিকা নিয়ে টানাপড়েনের পরে ডেঙ্গি ও চিকুনগুনিয়া মোকাবিলায় অর্থ বরাদ্দ নিয়েও কেন্দ্র ও পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে চাপান-উতোর শুরু হয়েছে। রাজ্য সরকারের অভিযোগ, ২০২১-’২২ অর্থবর্ষে বাংলায় মশাবাহিত ডেঙ্গি ও চিকুনগুনিয়া রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে এক টাকাও বরাদ্দ করেনি কেন্দ্র। এই নিয়ে আবার কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগ তুলছে নবান্ন। আর কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের বক্তব্য, টাকা বরাদ্দের নির্দিষ্ট নিয়মবিধি রয়েছে।
সম্প্রতি জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, ডেঙ্গি ও চিকুনগুনিয়া ব্যবস্থাপনায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে প্রায় এক কোটি ২৯ লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি ওই দু’টি রোগ প্রতিরোধে ভেক্টর কন্ট্রোল, পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা, ধোঁয়ার যন্ত্র কেনা ইত্যাদি খাতে টাকা চাওয়া হয়েছিল। কেন্দ্র টাকা বরাদ্দ তো করেইনি। উল্টে ‘মতামত কলাম’-এ তারা জানিয়েছে, ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে এখনও পর্যন্ত ওই দু’টি রোগ এবং তা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে কোনও তথ্যই দেয়নি রাজ্য সরকার। তাই টাকা বরাদ্দ করা হয়নি। রাজ্য প্রশাসন এই অভিযোগ পুরোপুরি মানতে রাজি নয়। এক আধিকারিক বলেন, “পুরনো সমস্ত তথ্যই পাঠানো হয়েছে। তার পরেও এখনও কেন এমন দেখানো হচ্ছে, তা বলতে পারব না।”
রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ২০১৮ থেকে যে-সব তথ্য বাকি ছিল, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতেই তা বিস্তারিত ভাবে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রশাসনের অন্দরের খবর, কয়েক দিন আগে তারা জানতে পারে, মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের কাছে পাঠানো হলেও তা ‘প্রোগ্রাম-ডিভিশন’-এর কাছে জমা পড়েনি। এটা জানার পরে সমস্ত তথ্য আবার পাঠানো হয়েছে এবং কেন্দ্রের তরফে তার প্রাপ্তিও স্বীকার করা হয়েছে বলে দাবি স্বাস্থ্য শিবিরের কর্তাদের। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ২০১৯ সালে দেশের মধ্যে বঙ্গে সব থেকে বেশি মানুষ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন। সংখ্যাটি ছিল ৪০ হাজারের উপরে। ২০২০-তে সেই সংখ্যা ছিল পাঁচ হাজারের কাছাকাছি। চলতি বছরের ১৬ জুন পর্যন্ত রাজ্যে ডেঙ্গি-আক্রান্তের সংখ্যা ২৩৪।
রাজ্যে ২০২০ থেকে অতিমারির পরিস্থিতি চলছে। কিন্তু তার আগের বছরগুলির তথ্য কেন নির্দিষ্ট সময়ে জমা দেওয়া হয়নি, প্রশাসনিক মহলে তার সদুত্তর মেলেনি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন বছরের তথ্য আপলোড করতে সময় লাগবে। তিন মাস অন্তর অর্থ বরাদ্দ করা হয়। তার জন্য ‘ইউটিলাইজ়েশন সার্টিফিকেট’ বা সদ্ব্যবহার শংসাপত্র দিতে হয় সংশ্লিষ্ট রাজ্যকে। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে সেগুলিও খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ও পুরমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “যেখানে জনগণের স্বার্থ জড়িত, সেখানে রাজনীতির আঙিনা তৈরি করে বিমাতৃসুলভ আচরণ করা অনুচিত। নির্বাচনের সময় যাঁরা বড় বড় কথা বলে গিয়েছিলেন, তাঁরা আজ আর মানুষের কথা ভাবছেন না। সমস্ত তথ্য তো দেওয়া হয়েছে। তার পরেও ওঁরা গড়িমসি করে চলেছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy