আবাস যোজনার ১২ লক্ষ উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে গত ডিসেম্বরেই প্রথম কিস্তির টাকা পৌঁছে গিয়েছিল। তার পরে কেটে গিয়েছে দেড় মাস। পঞ্চায়েত দফতর সূত্রের খবর, এই পর্বে কাজের ‘অগ্রগতি’ কেমন, সেই সংক্রান্ত বিষয়ে তদারকি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা এবং মহকুমা প্রশাসনকে।
উপভোক্তারা যাতে ন্যায্যমূল্যে ইমারতি দ্রব্য পান তা নিশ্চিত করতে পঞ্চায়েত দফতরের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে প্রশাসনকে। পাশাপাশিই বলা হয়েছে, মে মাসের মধ্যে যাতে প্রথম দফার কাজ শেষ হয়, তা-ও সুনিশ্চিত করতে হবে। কারণ, জুন মাসে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাবেন উপভোক্তারা। প্রথম কিস্তি দিতে রাজ্য সরকারের খরচ হয়েছে ৭,২০০ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:
নিচুতলায় আবাসের টাকা নিয়ে যাতে কোনও অনিয়ম না হয়, সে ব্যাপারে গোড়া থেকেই সক্রিয় রাজ্য সরকার। পঞ্চায়েত দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘কেন্দ্রীয় প্রকল্পের গোটা টাকাই রাজ্য দিচ্ছে। ফলে রাজ্য সরকার চাইবে উপভোক্তাদের মধ্যে যাতে কোনও অসন্তোষ না তৈরি হয়। বার বার রিপোর্ট চেয়ে তা নিশ্চিত করা হচ্ছে।’’ এর আগে পঞ্চায়েত দফতরের তরফে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। নির্মাণসামগ্রী কেনার বিষয়ে উপভোক্তাদের যেন স্থানীয় স্তরে জোর না করা হয়। তাঁরা কোথা থেকে ইট-বালি-সিমেন্ট-পাথর কিনবেন, তা তাঁরাই ঠিক করবেন। প্রশাসনের তরফে ওই বার্তাকে অনেকেই স্থানীয় স্তরের রাজনীতির সঙ্গে জুড়ে দেখেছিলেন। অনেকের বক্তব্য ছিল, উপভোক্তাদের যাতে সিন্ডিকেটের খপ্পরে পড়তে না হয়, সেটাই নিশ্চিত করতে চেয়েছিল সরকার। এ বার তা আরও সুনির্দিষ্ট করে বলা হয়েছে, যাতে উপভোক্তারা ন্যায্যমূল্যে নির্মাণসাগ্রী পান, তা নিশ্চিত করতে হবে জেলা, মহকুমা এবং ব্লক প্রশাসনকে। পানীয় জলের সংযোগ পেতেও যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তা-ও দেখতে বলা হয়েছে। অর্থাৎ, বাড়ি হল কিন্তু জলের সংযোগ হল না, তা যেন না হয়।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন, চলতি বছরের ডিসেম্বরে আরও ২৮ লক্ষ মানুষকে আবাসের টাকা দেবে রাজ্য। অর্থাৎ, ২০২৬ সালের ভোটের আগে রাজ্যের মোট ২৮ লক্ষ পরিবার মাথার উপর ছাদ পেয়ে যাবেন। সেই মর্মে অর্থের সংস্থানও রাখা হয়েছে রাজ্য বাজেটে, যা বিধানসভা ভোটে শাসকদলের অন্যতম ‘হাতিয়ার’ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সরকারি আধিকারিকদের অনেকের বক্তব্য, সে দিকে তাকিয়েই প্রশাসন ‘সুষ্ঠু’ ভাবে বাড়ি তৈরির বিষয়ে তৎপর। সে কারণেই নির্দিষ্ট সময়ান্তরে জেলা প্রশাসনকে ঝাঁকুনি দেওয়া হচ্ছে। তাতে কাজও হচ্ছে বলে দাবি পঞ্চায়েত দফতর সূত্রের।