সরকারি পরিষেবার বিষয়ে ভিন্ন ধারণা তৈরি করতে ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ কর্সমূচি শুরু করেছে রাজ্য সরকার। যার মূল বিষয় হল, বুথস্তরে সাধারণ মানুষ তাঁদের সমস্যার কথা বলবেন। সেই মতো প্রতি বুথের ছোটখাটো সমস্যা চিহ্নিত করে বুথ প্রতি ১০ লক্ষ টাকা দেবে রাজ্য। নভেম্বর পর্যন্ত সেই কর্মসূচি চলার কথা। কিন্তু এর মধ্যেই চিহ্নিত সমস্যার সমাধানে টাকা ছাড়া শুরু করে দিল নবান্ন।
অর্থ দফতর সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিভিন্ন জেলার জন্য প্রায় ৮০ কোটি টাকা ছেড়েছে রাজ্য সরকার। গত ২ অগস্ট থেকে শুরু হয়েছে ‘আমাদের পাড়া, আমাজের সমাধান’ কর্মসূচি। নবান্ন সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত ২৪ হাজারের কাছাকাছি শিবির হয়েছে। সেই শিবিরগুলি থেকে যে যে সমস্যা উঠে এসেছে, তার মধ্যে ১০ লক্ষ টাকার মধ্যে যা যা সমাধান করা যায়, তা চিহ্নিত করাও হয়ে গিয়েছে বেশ কিছু বুথে। তেমন বুথের জন্য জেলাভিত্তিক টাকা পাঠানো শুরু করেছে রাজ্য সরকার। রাজ্যে মোট বুথের সংখ্যা ৮০ হাজারের কিছু বেশি। ইতিমধ্যে এক চতুর্থাংশের বেশি বুথে শিবির হয়ে গিয়েছে। এ বার শুরু হল টাকা ছাড়া।
আরও পড়ুন:
যে পরিমাণ টাকা নবান্ন ছেড়েছে তা প্রায় ৮০০ বুথের। পুজোর পরেই এই সব বুথে কাজ শুরু হয়ে যাবে। নবান্নের এক কর্তার কথায়, ‘‘সরকার চাইছে ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যে সমস্যা সমাধানের কাজ শেষ করতে। সেই মতোই প্রক্রিয়া চলছে।’’ সব মিলিয়ে ৮ হাজার কোটি টাকা খরচ করবে রাজ্য।
সমস্যা চিহ্নিত করার বিষয়ে যাতে স্থানীয় মানুষ প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ করেন, সেটাই চাইছে নবান্ন। ১০ লক্ষ টাকা হয়তো বড় অঙ্কের অর্থ নয়। তবে সরকারি আধিকারিকদের বক্তব্য, বুথস্তরে ছোটখাটো সমস্যা সমাধানে ১০ লক্ষ টাকা কমও নয়। গ্রামাঞ্চলে ছোট সেতু নির্মাণ, সংস্কার, রাস্তায় টিউবওয়েল, রাস্তা সংস্কার বা নির্মাণের মতো কাজ করা সম্ভব। এই কর্মসূচিতে প্রতি শিবিরে থাকছেন সরকারি আধিকারিক। মানুষের সমস্যার কথা শুনে শংসাপত্র দিয়ে তাঁরা প্রকল্পে সিলমোহর দিচ্ছেন। প্রশাসনের পাশাপাশি শাসকদলও সমান্তরাল ভাবে সংগঠনকে এই কাজে নামিয়েছে। পঞ্চায়েত বা পুরসভা স্তরে রাজ্যের সিংহভাগ জায়গাতেই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি তৃণমূলের। ফলে তাঁদের পক্ষে মানুষকে শিবিরে আনা এবং কাজ করানোর সুযোগ রয়েছে। বিধানসভা ভোটের আগে নবান্ন এই ধারণা তৈরি করতে চাইছে যে, পাড়ায় পৌঁছে সরকার মানুষের সমস্যার কথা শুনছে এবং সমাধান করছে।