আগামী শনিবার (৯ অগস্ট) নবান্ন অভিযান কারা ডাক দিয়েছেন? নেপথ্যে কারা রয়েছেন? বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টে জানাল রাজ্য সরকার। শুধু তা-ই নয়, রাজ্যের যুক্তি, এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে কোনও হিংসার ঘটনা ঘটুক, তা বাঞ্ছনীয় নয়। গত বারের নবান্ন অভিযানের বিশৃঙ্খলার কথাও উদাহরণ হিসাবে আদালতে জানিয়েছে রাজ্য। পাশাপাশি, এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে, এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মামলাকারীও। সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর রায়দান স্থগিত রেখেছে বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চ।
শনিবারের নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছেন আরজি কর-কাণ্ডে নিহত মহিলা চিকিৎসকের বাবা-মা। তাঁদের ওই কর্মসূচিতে সমর্থন জানিয়েছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। শনিবারের ওই কর্মসূচির বিরোধিতায় জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় বুধবার। সেই মামলার শুনানিতে বৃহস্পতিবার মামলাকারীর আইনজীবী সঞ্জয়কুমার সাউ এবং রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত সওয়াল করেন। কেন এই কর্মসূচির বিরোধিতা করা হচ্ছে, তার যুক্তি দেওয়া হয়েছে।
মামলাকারীর আইনজীবীর সওয়াল, ‘‘নবান্ন সংলগ্ন এলাকায় অনেক প্রতিষ্ঠান এবং দোকান রয়েছে। আমার মক্কেলও হাওড়ার এক জন ব্যবসায়ী। এই ধরনের কর্মসূচিতে অতীতে ব্যাপক গন্ডগোলের উদাহরণ রয়েছে। এ বারও তেমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু কোনও অপ্রীতি ঘটনা ঘটলে তার দায় কর্মসূচির উদ্যোক্তারা নেবেন না।’’ তাঁর আবেদন, ‘‘এই সব কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত।’’
অপ্রীতিকর এবং হিংসার ঘটনার আশঙ্কা করেছেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলও। উদাহরণ হিসাবে গত বারের নবান্ন অভিযানের কথা জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘গত বার ৪৭ জন পুলিশ কর্মী আহত হন। এক জন পুলিশের চোখ নষ্ট হয়ে যায়। ওই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ১৪০ জনের বেশি লোককে গ্রেফতার করা হয়। আমরা হিংসার পুনরাবৃত্তি চাই না। রাজ্য ইতিমধ্যে প্রতিবাদের জন্য একটি নির্দেশিকা তৈরি করেছে। যে কেউ যেখানে খুশি প্রতিবাদ কর্মসূচি করতে পারেন না।’’
আরও পড়ুন:
তার পরেই অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, নির্দিষ্ট কোনও সংগঠন প্রকাশ্যে ওই কর্মসূচির দায় নিচ্ছে না। ‘ছাত্র সমাজ’ নামে একটি সংগঠন ডাক দিয়েছিল, কিন্তু পুলিশ তাদের খুঁজে পায়নি। আরজি করের নির্যাতিতার পরিবার কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। তারা রাজনৈতিক দলের সমর্থন চেয়েছেন। একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলের নেতা বলেছেন তিনি সমর্থন করবেন। কিশোর দত্তের কথায়, ‘‘আমরা বুঝতে পেরেছি, এই বছর তিন জন ব্যক্তি এই কর্মসূচির নেপথ্যে রয়েছেন।’’ শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রেখেছেন বিচারপতিরা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এই মামলার রায় ঘোষণা করবে আদালত।