বেসরকারি চিকিৎসা ক্ষেত্রে খরচে স্বচ্ছতা আনতে চেয়ে পুরনো আইন সংশোধন করছে রাজ্য সরকার। বিধানসভার চলতি অধিবেশনেই ‘ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট অ্যাক্ট’-এর সংশোধনী পাশ করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে লাগামছাড়া খরচ নিয়ে অভিযোগ এবং বিতর্ক বহু দিনের। মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে এই নিয়ে একাধিক বার হুঁশিয়ারি শোনা গিয়েছে, পদক্ষেপের কথাও এসেছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসার খরচে লাগাম রাখতেই ফের এক বার সক্রিয় হয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। সরকারি সূত্রে খবর, বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা ও চিকিৎসা সংক্রান্ত পরীক্ষার খরচে ‘অস্বচ্ছতা’র যে অভিযোগ ওঠে, তার নিষ্পত্তি করতেই এই আইনি সংশোধনীর কথা ভাবা হয়েছে। এই সংশোধনীর মাধ্যমে রোগীদের ‘প্যাকেজ চিকিৎসা’ সম্পর্কিত খরচের ক্ষেত্রে হয়রানি বন্ধ করার কথা ভাবা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে কোনও রোগী কোনও রোগের চিকিৎসায় বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হলে গোড়াতেই তাঁকে প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসার খরচ সংক্রান্ত নির্দিষ্ট অঙ্ক জানাতে হবে। এই প্রস্তাবিত সংশোধনী কার্যকর হলে কোনও প্রতিষ্ঠানেই চিকিৎসা শেষে ওই অঙ্কের বেশি তাঁর কাছ থেকে নেওয়া যাবে না।
চিকিৎসার জন্য বেসরকারি হাসপাতালের খরচ ও তাতে অস্বচ্ছতা নিয়ে অভিযোগ পুরনোই। আগেও একাধিক বার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক ও আলোচনা হয়েছে রাজ্য সরকারের শীর্ষ স্তরে। তবে এই ‘প্যাকেজ চিকিৎসা’ নানা ভাবে ঊর্ধ্বমুখী হতে থাকায় এ বার তা নিয়ে আইনি পদক্ষেপ করার কথা ভাবা হয়েছে।
সাধারণ ভাবে চিকিৎসার খরচে এই অসঙ্গতি থাকলেও সম্প্রতিক অতীতে বিষয়টি নিয়ে নাড়াচাড়া হয়েছে রাজনৈতিক স্তরেও। রাজ্য বিধানসভার একাধিক বিধায়কের চিকিৎসার খরচে ওই রকম ‘অসঙ্গতি’র ইঙ্গিত পেয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এই রকম একাধিক বিল নজরে আসার পরে বেসরকারি হাসপাতাল ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের ডেকে বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এ বার আইনি স্তরে পদক্ষেপ করে খরচে স্বচ্ছতা আনার কথা ভেবেছে স্বাস্থ্য দফতর।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)