বাগুইআটিতে নিত্যযাত্রীদের ভিড়। মঙ্গলবার, বামেদের ডাকা ধর্মঘটের প্রথম দিনে। ছবি: সুমন বল্লভ।
ধর্মঘটে স্কুলবাসের ছাড় ছিল না। কিন্তু এমন তাণ্ডবের মধ্যে পড়তে হবে ভাবেননি আমিনা বিবি।
প্রতিদিনের মতো মঙ্গলবারও সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ বারাসতের চাঁপাডালি মোড় থেকে ছ’বছরের মেয়েকে নিয়ে স্কুলবাসে চড়েছিলেন কাজীপাড়ার বাসিন্দা আমিনা। ময়নার একটি স্কুলে তিনি বাচ্চাদের দেখভাল করেন। তাঁর মেয়েও পড়ে সেই স্কুলে।
আমিনা জানান, আরও ১২ জন পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের ওই বাসে ওঠার কথা ছিল। কিন্তু, কিছু দূর গিয়েই মিছিলে আটকে যায় বাসটি। আচমকা কিছু লোক মিছিল থেকে বেরিয়ে বাসের গায়ে চড়-থাপ্পড় মারতে থাকে। চালককে গালাগালি শুরু করে। বাসের আয়না খুলে তা দিয়ে তাঁকে মারধর করা হয়। ভাঙা হয় জানালার কাচ। বাসের চাবি ছিনিয়ে নেওয়ারও চেষ্টা করে তারা।
আতঙ্কে আসনের নীচে মেয়েকে নিয়ে লুকিয়ে পড়েন আমিনা। এই অবস্থায় কোনও মতে বাস নিয়ে পালিয়ে যান চালক। পরে আমিনাই ফোন করে স্কুলে পুরো ঘটনা জানান। কর্তৃপক্ষের কথামতো চালক বাস নিয়ে স্কুলে চলে যান। অন্য অভিভাবকদের ফোন করে স্কুলে আসতে বারণ করা হয়। ছুটি দিয়ে দেওয়া হয় স্কুল। আমিনা বলেন, ওই ঘটনার পর থেকে আতঙ্কে সিঁটিয়ে রয়েছে তাঁর মেয়ে।
অভিযোগ, যে মিছিল থেকে হামলা হয়, তার নেতৃত্বে ছিলেন ফব নেতা সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘আমি কাছাকাছি থাকলেও ঘটনাস্থলে ছিলাম না।’’
এই ঘটনায় তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করে সুজন চক্রবর্তী-সহ একাধিক সিপিএম নেতার বিরুদ্ধে শো-কজ নোটিস জারি করেছে রাজ্য শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন। পাশাপাশি, তৃণমূলের পক্ষ থেকে বারাসত থানায় ডিওয়াইএফ নেতা দিলীপ সাহা, এসএফআই নেতা সুদীপ্ত সাহা এবং সিটু নেতা জনৈক সমীরণের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
এ দিনই উত্তরপাড়া স্টেশন রোডে একটি বেসরকারি স্কুলবাসের চাকার হাওয়া খুলে দেয় বন্ধ সমর্থকেরা। পরীক্ষা থাকায় সমস্যায় পড়ে পড়ুয়ারা। বন্ধের দিনে স্কুলবাসে ভাঙচুরের ঘটনা এর আগেও ঘটেছে। ঘটনার নিন্দায় তখন সব পক্ষই সরব হলেও, কাজের কাজ যে কিছু হয়নি এ দিনের ঘটনাই তার প্রমাণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy