Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

সবংয়ে পিটিয়ে ছাত্র খুনে কাঠগড়ায় তৃণমূলই

শিক্ষাঙ্গনে ফের লাগল রক্তের দাগ। ২০১০-এর ১৬ ডিসেম্বর রাজ্যের দুই কলেজে সংঘর্ষে প্রাণ গিয়েছিল এক ছাত্রের, চোখ গিয়েছিল আর এক জনের। বছর পাঁচেক আগের ছাত্র রাজনীতির সে লজ্জার দিন শুক্রবার মনে পড়াল পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং সজনীকান্ত মহাবিদ্যালয়। কলেজ চত্বরেই কৃষ্ণপ্রসাদ জানা (২০) নামে বি এ পাস কোর্সের প্রথম বর্ষের ছাত্রকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল।

হাসপাতালে ভাইয়ের দেহ আঁকড়ে কান্না দাদা হরিপদ জানার। রয়েছেন সবংয়ের কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।

হাসপাতালে ভাইয়ের দেহ আঁকড়ে কান্না দাদা হরিপদ জানার। রয়েছেন সবংয়ের কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৫ ০৩:২৮
Share: Save:

শিক্ষাঙ্গনে ফের লাগল রক্তের দাগ।

২০১০-এর ১৬ ডিসেম্বর রাজ্যের দুই কলেজে সংঘর্ষে প্রাণ গিয়েছিল এক ছাত্রের, চোখ গিয়েছিল আর এক জনের। বছর পাঁচেক আগের ছাত্র রাজনীতির সে লজ্জার দিন শুক্রবার মনে পড়াল পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং সজনীকান্ত মহাবিদ্যালয়। কলেজ চত্বরেই কৃষ্ণপ্রসাদ জানা (২০) নামে বি এ পাস কোর্সের প্রথম বর্ষের ছাত্রকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল।

ছাত্র পরিষদের সক্রিয় কর্মী কৃষ্ণপ্রসাদ হত্যায় শাসক দলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) দিকেই আঙুল উঠেছে। টিএমসিপি-র তিন কর্মী-সমর্থককে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘটনার দায় কৌশলে ছাত্র পরিষদের উপরে চাপাতে চেয়েছেন বলেই বিরোধীদের অভিযোগ। ঘটনার যে বিবরণ মুখ্যমন্ত্রী দিয়েছেন, প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণের সঙ্গে তার বিস্তর ফারাক।

ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে রাজ্যের কলেজে-কলেজে ছাত্র সংঘর্ষ নতুন নয়। কিন্তু এখন ভোটের মরসুম নয়। তাই সবংয়ের কলেজের এই ঘটনার পিছনে কারণ কী, সেটাই হয়ে দাঁড়িয়েছে বড় প্রশ্ন।

কলেজ সূত্রের খবর, প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের ফি জমা নেওয়া হচ্ছিল এ দিন। ইতিমধ্যে প্রচার করা হয়, রাজ্যের জলসম্পদমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র সবংয়ের বানভাসি এলাকায় যাবেন। মন্ত্রীর কর্মসূচিতে হাজির থাকার জন্য টিএমসিপি-র কলেজ শাখার কর্মীরা শেখ মুন্নার নেতৃত্বে ক্লাসে ক্লাসে গিয়ে প্রচার করেন। ছাত্র পরিষদ (সিপি) পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সৌমেন গঙ্গোপাধ্যায় সেই প্রচারে বাধা দিলে বচসা বাধে। সৌমেনের বক্তব্য ছিল, মন্ত্রী আসবেন বলে পড়ুয়ারা কেন ক্লাস কামাই করবেন? বিবাদের নিষ্পত্তি না হওয়ায় দু’পক্ষই অধ্যক্ষ কানাইলাল পড়িয়ার কাছে যায়। তবে সেখানেও মিটমাট হয়নি। রেগেমেগে ঘর থেকে বেরিয়ে যান মুন্না।

ছাত্র পরিষদ নেতা সৌমেনের অভিযোগ, এর পরেই মুন্না-সহ টিএমসিপি-র সদস্যেরা ছাত্র সংসদের ঘরে তালা ঝুলিয়ে দেন। সিপি-র ছেলেরা সেই তালা খুলতেই টিএমসিপি-র কর্মীরা লাঠি, বাঁশ নিয়ে ইউনিয়ন রুমে চড়াও হন। সৌমেনের দাবি, ‘‘দুপুর ১টা নাগাদ টিএমসিপি-র শেখ মুন্না, অসীম মাইতিরা আমাদের উপরে হামলা চালায়। কৃষ্ণপ্রসাদ পালাতে যায়। পরে নতুন লাইব্রেরির সামনে ফাঁকা জায়গায় ওকে একা পেয়ে টিএমসিপি-র কর্মীরা বাঁশ দিয়ে মাথার পিছনে মারে।’’ সেখানেই লুটিয়ে পড়েন কৃষ্ণপ্রসাদ। বন্ধুরা তাঁকে সবং গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে ততক্ষণে মৃত্যু হয়েছে ওই ছাত্রের। অধ্যক্ষ কানাইলালবাবু বলেন, ‘‘দু’পক্ষের বচসা আমার সামনেও মেটেনি। পরে জানলাম, ওই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।’’

ঘটনাচক্রে ২০১০ সালের ১৬ ডিসেম্বর যে দু’টি কলেজে তুমুল গোলমাল হয়েছিল, সে দু’টিতেও ছাত্র সংসদ টিএমসিপি-র দখলে ছিল না। হাওড়ার আন্দুলের প্রভু জগবন্ধু কলেজ এবং কলকাতার আশুতোষ কলেজের ছাত্র সংসদে ক্ষমতাসীন ছিল এসএফআই। পশ্চিম মেদিনীপুরে এই মুহূর্তে মাত্র দু’টি কলেজ রয়েছে বিরোধীদের দখলে। তার মধ্যে একটি সবংয়ের এই কলেজ।

জেলার ছাত্র রাজনীতির আনাচকানাচ সম্পর্কে ওয়াকিবহালদের দাবি, কৃষির হাত ধরে দীর্ঘকালের বর্ধিষ্ণু এলাকা সবং। কলেজ পড়ুয়াদের অনেকেই সম্পন্ন পরিবারের সন্তান। ফলে কলেজে ছাত্র সংসদের বিভিন্ন কর্মসূচি, বিশেষ করে নবীনবরণ, বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য মোটা টাকা তোলা কঠিন কাজ নয়। কলেজের ছাত্র সংখ্যাও তিন হাজার। নতুন পড়ুয়া ভর্তির সময়ে ছাত্র সংসদের ফি (ইউনিয়ন ফি) বাবদ মাথাপিছু ১০০ টাকা করে নেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। ফলে ছাত্র সংসদের হাতে আসা টাকার অঙ্কটা নেহাত কম নয়। তা ছাড়া বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য বিজ্ঞাপন বাবদও ছাত্র সংসদ ভাল টাকাই পায়।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক জেলারই এক কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের কাছ থেকে চাঁদা, স্পনসর এবং কলেজ কর্তৃপক্ষের বরাদ্দ করা টাকা মিলিয়ে শুধু বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য লাখ তিনেক টাকা তোলা কোনও ব্যাপারই নয়। তার মধ্যে খরচ হয় বড়জোর দেড় লাখ।’’ এই সূত্র ধরেই এসএফআইয়ের জেলা সম্পাদক সৌগত পণ্ডার মন্তব্য, ‘‘আমাদের মনে হয়, ওই টাকাটাকেই পাখির চোখ করেছে টিএমসিপি। সে জন্যই ছুতো করে অশান্তি বাধাচ্ছে।’’

কংগ্রেস এবং ছাত্র পরিষদ নেতৃত্বের একাংশ আবার মনে করিয়ে দিচ্ছেন, শুধু টাকা নয়, কলেজে রাজনৈতিক আধিপত্য কায়েম করতেও দীর্ঘদিনই সক্রিয় শাসক দল। তৃণমূলের এক জেলা পরিষদ সদস্য কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি হতে চেয়ে ভোটে লড়ে হেরে গিয়েছেন। তার পরেও হাল না ছেড়ে তিনি ভোটের প্রক্রিয়াগত ত্রুটির প্রশ্ন তুলে বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বারস্থ হন। সেই সুবাদেও টিএমসিপি-র সঙ্গে ছাত্র পরিষদের সংঘাতের ক্ষেত্র তৈরি ছিল।

টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি রমাপ্রসাদ গিরি ‘সব মিথ্যা অভিযোগ’ বলে দাবি করলেও এ দিনের অশান্তির পিছনে টিএমসিপি-র ভূমিকা চোখে পড়েছে প্রত্যক্ষদর্শীদের একটা বড় অংশেরই। এলাকায় অনেকেই বলছেন, ‘‘টিএমসিপি তো বলছিল, মন্ত্রী আসবেন। সেটা হল কোথায়?’’ মন্ত্রী সৌমেনবাবুও বলেছেন, ‘‘মেদিনীপুরে বন্যা নিয়ে বৈঠক করতে গিয়েছিলাম ঠিকই। কিন্তু সবং যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল না।’’ তা হলে কেন মন্ত্রী আসবেন বলে কলেজে প্রচার করা হল? সবংয়ের জেলা পরিষদ সদস্য তৃণমূলের অমূল্য মাইতির দাবি, ‘‘মন্ত্রীর ব্লক অফিসে বৈঠক করার কথা ছিল। কলেজের ঘটনার পরে
আর আসেননি।’’

বস্তুত এ দিনের ঘটনা নিয়ে শাসক দলের সর্বস্তরের ব্যাখ্যাতেই বিভ্রান্তি বেড়েছে।

উত্তরবঙ্গ থেকে ফিরে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সবং কলেজে ছাত্র সংঘর্ষে কৃষ্ণপদ (আসলে প্রসাদ) জানা নামে একটি ছেলে মারা গিয়েছে। ছেলেটি ছাত্র পরিষদের। ঘটনাটি মর্মান্তিক। আমি এর নিন্দা করছি।’’ এর পরেই মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ‘‘ছাত্র পরিষদের ইউনিয়ন রুমের ভিতরে সংঘর্ষ হয়। ইউনিয়নটি কংগ্রেসের ছাত্র পরিষদের। তৃণমূলের ইউনিয়নয়। ইউনিয়ন রুম লক করে সংঘর্ষ হয় ভিতরে। ব্যাটের আঘাতে মারা যায়।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘নিজেদের মধ্যে ধস্তাধস্তি করে ছেলেটি মারা গিয়েছে। ঘটনাটা না ঘটলেই পারত।’’

মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি এমন দাবি করেননি যে, ঘটনাটি ছাত্র পরিষদ কর্মীদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জের। কিন্তু যে ভাবে তিনি বারবার ছাত্র পরিষদের কথা উল্লেখ করেছেন, তাতে ইঙ্গিতটা সেই দিকে বলেই বিরোধীদের বড় অংশের দাবি। পরে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও মুখ্যমন্ত্রীর সুরেই বলেন, ‘‘জানা গিয়েছে, নিজেদের মধ্যে গোলমালেই এই ঘটনা। ওই কলেজের ৩১টি আসনের সব ক’টিই তো ছাত্র পরিষদের দখলে! এরা কলেজের অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে রেখেছিল।’’

কিন্তু পুলিশ তো এ দিন রাতে তৃণমূলেরই তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। সে খবর পাওয়ার পরে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, ছাত্র সংসদের ঘরে সংঘর্ষ হয়েছে। সেখানে অনেক কিছু থাকে। একটা ক্রিকেট ব্যাটও ছিল। সংঘর্ষের সময়ে আত্মরক্ষার তাগিদে কেউ তা চালিয়ে থাকতে পারে।

পাশাপাশি এ দিনের ঘটনায় শিক্ষামন্ত্রী বহিরাগতের তত্ত্বও হাজির করেছেন। যে কোনও ছাত্রের মৃত্যুই তাঁর কাছে দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেও পার্থবাবু বলেছেন, ‘‘শোনা যাচ্ছে, তিনি (কৃষ্ণ) ছাত্র ছিলেন না। অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, তিনি একাধিক বার অকৃতকার্য হয়েছিলেন।’’ কিন্তু কলেজ সূত্রের দাবি, ২০১৩ এবং ২০১৪-র পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলেও কৃষ্ণপ্রসাদ ওই কলেজেই পড়তেন।

সংঘর্ষের সময়ে কলেজের অধ্যক্ষ কেন পুলিশকে জানালেন না? মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, অধ্যক্ষ পুলিশকে বলেছেন, তাঁকেও ঘরে বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। তাই পুলিশকে জানাতে পারেননি। যদিও ঘেরাও চলাকালীনই অধ্যক্ষকে ফোনে বৈদ্যুতিন মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে শোনা গিয়েছে। ফলে ফোনেই তিনি কেন পুলিশকে খবর দিলেন না, সেই প্রশ্ন উঠছে। অধ্যক্ষের নিজের দাবি, ‘‘খুব কম সময়ের মধ্যে ঘটনাগুলো ঘটায়, পুলিশ ডাকার সুযোগ পাইনি।’’

ছ’জন টিএমসিপি কর্মীর নামে এ দিন অভিযোগ দায়ের করে ছাত্র পরিষদ। তাঁদের মধ্যে শেখ মুন্না, অসীম মাইতি এবং সানোয়ারকে রাতে ধরে পুলিশ।

মুখ্যমন্ত্রী ‘নিজেদের মধ্যে ধস্তাধস্তি’র কথা বলায় তার কড়া বিরোধিতা করেছেন সবংয়ের কংগ্রেস বিধায়ক মানসবাবু। তাঁর অভিযোগ, ‘‘অসত্য বলে মুখ্যমন্ত্রী বিভ্রান্ত করতে চাইছেন। ওখানে তৃণমূলের গুন্ডারা কয়েক দিন ধরেই উত্তেজনা ছড়াচ্ছিল। তারাই এ দিন কলেজে ঢুকে ছাত্র পরিষদের সমর্থককে খুন করেছে। আর এখন অন্তর্দ্বন্দ্ব-সহ নানা রকম গল্প ছড়ানো হচ্ছে!’’ কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান বলেন, ‘‘এ বারও ঘটনাটাকে গুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে সরকার।’’ যদিও টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্র বলেন, ‘‘এখন যে কোনও ব্যাপারে টিএমসিপি-র নাম জড়ানোর প্রবণতা তৈরি হয়েছে। পুলিশ দেখবে ঠিক কী হয়েছে।’’

সবংয়ে ছাত্র পরিষদ এবং বাম ছাত্র সংগঠন একসঙ্গে ঘটনার প্রতিবাদ করছে। এসএফআই এবং ছাত্র পরিষদ আজ, শনিবার রাজ্য জুড়ে ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ‘‘রাজ্যের সব ছাত্র-যুব এবং অভিভাবকদের কাছে আবেদন, আপনারা এ ঘটনার প্রতিবাদ করুন। দরকারে স্কুল, কলেজ বন্ধ করে প্রতিবাদ করুন।’’ ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি আশুতোষ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শনিবার বিভিন্ন জায়গায় পথ অবরোধ করা হবে।’’

ছোট ছেলে কৃষ্ণপ্রসাদের মৃত্যুতে কথা বলার অবস্থায় ছিলেন না সবংয়ের দাঁকড়দা-বাটিটাকি গ্রামের বাসিন্দা ভানুভূষণ জানা। নিহত ছাত্রের মা যমুনাদেবী বলেন, ‘‘যারা খুন করল, তাদের ফাঁসি হওয়া উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE