Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
NEET Exams

NEET Exam: অতিমারি মাথায় নিয়ে নিট দিয়ে আশ্বস্ত পড়ুয়ারা

পরীক্ষার জন্য ছেলেকে নিয়ে কলকাতায় এসেছেন মালদহের মহম্মদ মোজাফ্ফর আলি।

স্বাস্থ্যবিধি শিকেয়: সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষা (নিট) কেন্দ্রের বাইরে পরীক্ষার্থীদের বাড়ির লোকের ভিড়।

স্বাস্থ্যবিধি শিকেয়: সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষা (নিট) কেন্দ্রের বাইরে পরীক্ষার্থীদের বাড়ির লোকের ভিড়। রবিবার কলকাতার রাজডাঙায়। ছবি: দেশকল্যাণ চৌধুরী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৭:৪৯
Share: Save:

করোনার উদ্যত থাবার মধ্যেই তাঁদের কেউ এসেছেন মুর্শিদাবাদ থেকে, কেউ বা এসেছেন মালদহ থেকে। কেউ ডায়মন্ড হারবার থেকে তো কেউ কেউ উত্তর দিনাজপুর থেকে।

রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সর্বভারতীয় মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষা (নিট) দিতে কলকাতায় এসে ওই ছাত্রছাত্রীরা জানান, সংক্রমণের রক্তচক্ষুর মধ্যেও পরীক্ষা দিতে পেরে তাঁরা আশ্বস্ত। অতিমারিতে এক বার পিছিয়ে যাওয়ার পরে অফলাইনে এই পরীক্ষা দেওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন তাঁরা। পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ায় তাঁরা প্রস্তুতির সময় বেশি পেয়েছেন ঠিকই, কিন্তু এ বার পরীক্ষা না-হলে সঙ্কল্প, ‘মোটিভেশন’ বা মনোযোগ
নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল বলে জানালেন মালদহের তথাগত দেব। কসবার একটি স্কুলে পরীক্ষা দিতে ঢোকার আগে তিনি বলেন, “করোনার মধ্যে মালদহ থেকে আসার পথে একটু ভয় ছিল। ট্রেনে একটি বারও মাস্ক খুলিনি। ট্রেনেও ঘনঘন হাত স্যানিটাইজ় করেছি। নিউ নর্মালে এগুলো তো মানতেই হবে।”

পরীক্ষার জন্য ছেলেকে নিয়ে কলকাতায় এসেছেন মালদহের মহম্মদ মোজাফ্ফর আলি। তিনি বলেন, “করোনার মধ্যে পরীক্ষা নিয়ে কোনও ভীতি নেই। তবে এই পরিস্থিতিতে পরীক্ষার সেন্টারগুলো এত দূরে না-করে যদি বাড়ির কাছে হত, তা হলে স্বস্তি পাওয়া যেত। কলকাতায় করোনা সংক্রমণ অনেক বেশি বলেই জানি। তবে অফলাইনে পরীক্ষা দিতে পেরে ছেলে খুব খুশি।”

বালিগঞ্জ কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ থেকে আসা দেবলীনা পালের অভিভাবক বললেন, “পরীক্ষা দিতে গেলে হয় কলকাতায়, নয় শিলিগুড়ি যেতে হবে। যাতায়াতের সুবিধার জন্য আমি কলকাতার সেন্টারকেই পছন্দ করেছি। করোনা আবহে কাছাকাছি সেন্টার হলে অনেক ভাল হত।”

দাদা মারা গিয়েছেন গত বছর। ভাইপোর চোখে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন। লালগোলা থেকে ভাইপো নুর আলমকে নিয়ে কলকাতায় এসেছেন প্রৌঢ়া আনোয়ারা বিবি। তিনি জানান, বিরাটিতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে উঠেছেন। “ট্রেনে আসতে অসুবিধা হয়নি। কিন্তু কলকাতায় তো সংক্রমণ বেশি। আমাদের মতো বয়স্ক মানুষদের ভয় একটু বেশিই লাগে। সারা দিন কি আর করোনা বিধি মেনে চলা সম্ভব? কাছাকাছি সেন্টার হলে ছেলেটাকে এত দূরে পরীক্ষা দিতে আসতে হত না,” বললেন আনোয়ারা বিবি।

প্রায় একই ছবি দেখা গিয়েছে হিন্দু স্কুলের সামনে। দূরদূরান্তর থেকে আসা ছাত্রছাত্রীরা ট্রেন থেকে নেমে সরাসরি পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে গিয়েছেন। পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনেই কোথাও বসে সামান্য খাওয়াদাওয়া করে ঢুকে গিয়েছেন পরীক্ষা দিতে।

করোনা বিধি মেনে প্রার্থীদের পরীক্ষার হলে ঢোকানো হলেও বাইরে জটলা দেখা গিয়েছে অভিভাবকদের। ডিপিএস রুবি পার্কের সামনে দেখা গেল, পুলিশ অভিভাবকদের জটলা করতে বার বার বারণ করা সত্ত্বেও অনেকেই তা মানছেন না।

পরীক্ষার হলে মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার, জলের বোতল এবং প্রয়োজনীয় নথিপত্র ছাড়া আর কিছু নিয়ে ঢোকা নিষিদ্ধ। প্রতিটি কেন্দ্রেই পরীক্ষার্থীদের দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষা করে এবং হাত স্যানিটাইজ় করে ঢোকানো হয়েছে। দূরত্ব-বিধি মেনেই বসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল বলে জানান পরীক্ষা দিয়ে বেরোনো প্রার্থীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

NEET Exams COVID-19 Pandemic
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE