Advertisement
E-Paper

ক্লাস না-করলে ফেল করবেন, বললেন আচার্য

রবিবার নরেন্দ্রপুরে রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের ‘ত্রয়ী উৎসব’-এর অনুষ্ঠান শেষে মঞ্চ থেকে নামার পরে আচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফল নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। জবাবে আচার্য বলেন, ‘‘ছাত্রছাত্রীরা কলেজে যান পড়াশোনা করার জন্য। কিন্তু কলেজে গিয়ে ক্লাস না-করলে কী হবে? ফেল করবেন! এর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের মানের কোনও সম্পর্ক নেই।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪৭
নরেন্দ্রপুরে রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয়ের ৬০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী এবং নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের সম্পাদক স্বামী সর্বলোকানন্দ। রবিবার। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল।

নরেন্দ্রপুরে রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয়ের ৬০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী এবং নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের সম্পাদক স্বামী সর্বলোকানন্দ। রবিবার। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পার্ট ওয়ানে রেকর্ড সংখ্যক পরীক্ষার্থী ফেল করায় তুমুল শোরগোলের মধ্যে পড়ুয়াদের স্বার্থেই নিয়ম বদলের কথা ভাবছেন কর্তৃপক্ষ। আচার্য-রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী কিন্তু শোচনীয় ফলের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বা তাদের নীতিনিয়মকে দুষছেন না। তিনি কাঠগড়ায় তুলছেন ছাত্রছাত্রীদেরই।

রবিবার নরেন্দ্রপুরে রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের ‘ত্রয়ী উৎসব’-এর অনুষ্ঠান শেষে মঞ্চ থেকে নামার পরে আচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফল নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। জবাবে আচার্য বলেন, ‘‘ছাত্রছাত্রীরা কলেজে যান পড়াশোনা করার জন্য। কিন্তু কলেজে গিয়ে ক্লাস না-করলে কী হবে? ফেল করবেন! এর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের মানের কোনও সম্পর্ক নেই।’’

তবে স্নাতকের কলা বিভাগের ৫৭.৫০ শতাংশ পরীক্ষার্থী ফেল করার জন্য যে-নতুন নিয়মের দিকে আঙুল উঠছে, বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ সেটাকেই বদলে ফেলার ইঙ্গিত দিয়েছেন। এমনকী অকৃতকার্য হওয়া পড়ুয়াদের জন্যও ইতিবাচক কিছু করা যায় কি না, সেই বিষয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। এই নিয়ে সিন্ডিকেট দ্রুত বৈঠকে বসবে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্তা। শিক্ষা খবর, আজ, সোমবার বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) দীপক কর, রেজিস্ট্রার রাজাগোপাল ধর চক্রবর্তী এবং পরীক্ষা নিয়ামক জয়ন্ত সিংহ।

গত বৃহস্পতিবার পার্ট ওয়ানের ফল বেরোতে দেখা যায়, বিজ্ঞানে ৭১ এবং কলা বিভাগে ৪২.৫০ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাশ করেছেন। ২০১৬ সালে যেটা ছিল যথাক্রমে ৮৫ এবং ৭৫ শতাংশ। রবিবার শিক্ষামন্ত্রীর বাড়িতে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তিনি ব্যক্তিগত কাজে গিয়েছিলেন বলেই খবর। এ দিন মন্ত্রীর বাড়ি যান সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) দীপকবাবুও। সেখানেই বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে মন্ত্রীকে জানানো হয়, ২০১৬ সালের পরিবর্তিত নিয়ম সম্পর্কে পড়ুয়া তো বটেই, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ কর্তাও অবহিত নন। পড়ুয়াদের সঙ্গে এই অবিচার হওয়ায় কর্তৃপক্ষ কতটা মর্মাহত, সেটাও মন্ত্রীকে জানানো হয়।

আরও পড়ুন: ছেড়ে যাওয়া চেয়ারের খোঁজ চাইল গিনেস

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক জানান, নিয়ম বদলানো হয় ২০১৬ সালের জুন-জুলাই নাগাদ। আগের নিয়ম অনুযায়ী অনার্সের কোনও পড়ুয়া জেনারেলের দু’টি বিষয়ের কোনওটিতে পাশ না-করলেও তাঁকে অনার্সের পরবর্তী পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হত। পরে সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা দিয়ে তাঁকে পাশ করতে হত জেনারেলের ওই সব বিষয়ে। কিন্তু ২০১৬ সালের নতুন নিয়ম বলা হয়, অনার্সের পড়ুয়াকে বাধ্যতামূলক ভাবে জেনারেলের দু’টি বিষয়ের মধ্যে যে-কোনও একটিতে পাশ করতেই হবে। যাঁরা সেটা করতে পারেননি, এ বার তাঁদেরই আটকে দেওয়া হয়েছে।

একই ভাবে পুরনো নিয়মে জেনারেলের কোনও পড়ুয়া তিনটির মধ্যে একটি বিষয়ে পাশ করলেই তাঁকে পরবর্তী পরীক্ষার যোগ্য বলে ধরে নেওয়া হত। পরে সাপ্লিমেন্টারি দিয়ে পাশ করতে হত তাঁদের। কিন্তু নতুন নিয়মে তিনটি বিষয়ের মধ্যে অন্তত দু’টি বিষয়ে পাশ করা বাধ্যতামূলক। সেটা করতে না-পারায় এত পড়ুয়া অকৃতকার্য হয়েছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাদের অভিমত।

এক কর্তা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুসারে উপাচার্যে ৯/৬ ধারার বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে কোনও রেগুলেশন জারি করতে পারেন। ২০১৬-য় তৎকালীন কর্তৃপক্ষ সেই ভাবেই নিয়ম পরিবর্তন করেছিলেন। তাঁর দাবি, সিন্ডিকেটে এই বিষয়ে আলোচনা হয়নি। তখন অস্থায়ী উপাচার্য ছিলেন সুগত মারজিত। এ বিষয়ে সুগতবাবুর বক্তব্য জানার জন্য তাঁকে ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। এসএমএসেরও উত্তর দেননি তিনি।

তৎকালীন সিন্ডিকেটের এক সদস্য জানান, উপাচার্য যে-ক্ষমতাই প্রয়োগ করুন না কেন, সিন্ডিকেটে সেটা পেশ করতে হয়। সেটা করাও হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনপাঠনের মান আরও উন্নত করার জন্য সর্বসম্মত ভাবেই এই পদক্ষেপ করা হয়। এখন সোমবারের বৈঠকের দিকেই তাকিয়ে আছেন পড়ুয়ারা।

Keshari Nath Tripathi Education Ramakrishna Mission Vidyalaya Narendrapur কেশরীনাথ ত্রিপাঠী রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম ত্রয়ী উৎসব
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy