Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Students

Economic Problem: সংসারে টান, পাথর ভাঙছে ছাত্রেরাও 

স্কুল বন্ধ থাকায় শুধুমাত্র মাসের চাল টুকুই পাওয়া যায়। পরিবারে অভাব থাকায় লেখাপড়া বন্ধ রেখে পাথর ভাঙতে হচ্ছে স্কুল পড়ুয়াদের।

বাবা-মায়ের সঙ্গে পাথর ভাঙছে স্কুলপড়ুয়া ছেলেও।

বাবা-মায়ের সঙ্গে পাথর ভাঙছে স্কুলপড়ুয়া ছেলেও। নিজস্ব চিত্র।

পাপাই বাগদি
মহম্মদবাজার শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২১ ০৫:২১
Share: Save:

টানা বন্ধ স্কুল। সংসার চালাতে তাই পড়া ছেড়ে পাথর ভাঙার কাজে যোগ দিতে হচ্ছে বহু ছাত্রকে। করোনা পরিস্থিতিতে এমনই অবস্থা বীরভূমের মহম্মদবাজার ব্লকের আদিবাসী অধ্যুষিত পাঁচামি পাথর শিল্পাঞ্চলে। হিংলো ও ভাঁড়কাটা পঞ্চায়েত এলাকার অধিকাংশই পাথর শিল্পাঞ্চল। খাদানের বড় বড় পাথর হাতুড়ি মেরে ছোট করতে হয় মেশিনে ভাঙার জন্য। আর সেই কাজেই পরিবারের সঙ্গে হাত লাগাচ্ছে এলাকার দুই স্কুল, গিরিজোড় সাঁওতাল উচ্চ বিদ্যালয় ও কাপাসডাঙা খাদেম হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের অনেক ছাত্র। তাদের পরিজনেরা বলছেন, স্কুল খোলা থাকলে পড়াশোনার সাথে সাথে দৈনিক মিড-ডে মিলের খাবারটুকু জুটত। কিন্তু স্কুল বন্ধ থাকায় শুধুমাত্র মাসের চাল টুকুই পাওয়া যায়। পরিবারে অভাব থাকায় সংসারের খরচ টানতে লেখাপড়া বন্ধ রেখে পাথর ভাঙতে হচ্ছে স্কুল পড়ুয়াদের।

দুই স্কুল সূত্রে খবর, অষ্টম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ১২ থেকে ১৫ শতাংশ ছাত্র স্কুলে ভর্তি হয়নি ২০২১ শিক্ষাবর্ষে। গিরিজোড় সাঁওতাল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শুভঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘আমরা বহুবার ছাত্রের বাড়িতে গিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাঁদের যে আর্থিক অবস্থার কথা জানাচ্ছেন, তাতে তাঁরাও নিরুপায়। স্কুল খুললেও আবার স্কুলের সেই পরিস্থিতি পাওয়া যাবে কি না সেই প্রশ্ন আমাদের মনেও রয়েছে।’’ এক ছাত্রের পিতা দুর্গা মুর্মু বলেন, ‘‘যা অবস্থা তাতে প্রতি দিন খাবারটুকুও জোটে না। বাধ্য হয়ে সংসার চালাতে ছেলেকেও কাজে লাগাতে হচ্ছে।’’ খাদান সূত্রে খবর, দৈনিক ১০০ থেকে ১২০ টাকা মজুরি হারে অথবা গাড়ির পিছু সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা হারে কাজ করে পড়ুয়ারা।

স্কুলে গুগল মিট ও হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে কিছুটা পড়াশোনা চললেও বেশিরভাগ ছাত্রদের হাতেই নেই স্মার্টফোন। কাপাসডাঙ্গা খাদেম হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হরিচরণ গড়াই বলেন, ‘‘অনলাইন ক্লাস হলেও এই এলাকার ছেলেমেয়েদের কাছে অনলাইন ক্লাসের গুরুত্বই নেই। সকলের কাছে স্মার্টফোন না থাকায় অনলাইন ক্লাস করতেও পারছে না ছেলেমেয়েরা। ফলে এ বছর অনেকটাই বেড়ে গেছে স্কুলছুটের সংখ্যা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Students Labour
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE