Advertisement
E-Paper

হেলেদুলে বেরোলেন শুভা, তবে মুখে তালা

এ যেন এক অন্য শুভাপ্রসন্ন! চব্বিশ ঘণ্টা আগে, শুক্রবার বিকেলে বাড়ির দরজার সামনে গাড়ি থেকে নেমে তিনি কার্যত লাফ দিয়ে ঘরে ঢুকে গিয়েছিলেন। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ঘরের দরজা। মাত্র এক ঝলক দেখা গিয়েছিল তাঁকে। শনিবার দুপুরে তাঁকেই দেখা গেল একেবারে অন্য মেজাজে। সদরের সেই দরজা খুলে তিনি বেরিয়ে এলেন ধীর পায়ে। কোনও চাঞ্চল্য নেই। তাঁর এক হাতে মোবাইল ফোন। মনিবকে বেরোতে দেখে বাড়ির পোষা কুকুরটা ঘেউ ঘেউ করে উঠলে তিনি অন্য হাতে তাকে শান্ত করলেন পরম যত্নে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৪ ০২:২৭
সল্টলেকের বাড়ির বাইরে শুভাপ্রসন্ন। শৌভিক দে-র তোলা ছবি।

সল্টলেকের বাড়ির বাইরে শুভাপ্রসন্ন। শৌভিক দে-র তোলা ছবি।

এ যেন এক অন্য শুভাপ্রসন্ন!

চব্বিশ ঘণ্টা আগে, শুক্রবার বিকেলে বাড়ির দরজার সামনে গাড়ি থেকে নেমে তিনি কার্যত লাফ দিয়ে ঘরে ঢুকে গিয়েছিলেন। বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ঘরের দরজা। মাত্র এক ঝলক দেখা গিয়েছিল তাঁকে। শনিবার দুপুরে তাঁকেই দেখা গেল একেবারে অন্য মেজাজে। সদরের সেই দরজা খুলে তিনি বেরিয়ে এলেন ধীর পায়ে। কোনও চাঞ্চল্য নেই। তাঁর এক হাতে মোবাইল ফোন। মনিবকে বেরোতে দেখে বাড়ির পোষা কুকুরটা ঘেউ ঘেউ করে উঠলে তিনি অন্য হাতে তাকে শান্ত করলেন পরম যত্নে।

তবে হ্যাঁ, শুক্রবারের মতো এ দিনও সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি শুভাপ্রসন্ন। তবু হাবেভাবে পরিবর্তনটা ছিল চোখে পড়ার মতো। যা এ দিন দেখা গেল বাড়ির অন্য সদস্যদের মধ্যেও। গত কয়েক দিন শুভাপ্রসন্নকে খুঁজতে সাংবাদিকরা বারবার হানা দিয়েছেন তাঁর সল্টলেকের বাড়িতে। কাক-আঁকিয়ে শিল্পীকে না পেয়ে কথা বলতে চেষ্টা করেছেন তাঁর স্ত্রী শিপ্রা ভট্টাচার্যের সঙ্গে। তিনিও হতাশ করেছেন যথারীতি। সাংবাদিক দেখে কখনও সপাটে জানলা বন্ধ করে দিয়েছেন। কখনও কোনও উত্তর না দিয়ে মুখ ঘুরিয়ে অন্তরালে চলে গিয়েছেন। এ দিন সেই শিপ্রাদেবীও সবাইকে অবাক করে দিয়ে সাংবাদিকদের চা খাওয়ার প্রস্তাব দিলেন। তবে ঘরে ডেকে নয়, দরজার বাইরে।

সারদা-কাণ্ডে ইডি গত সোমবার তাঁকে দেখা করতে বলার পর থেকেই দিন কয়েক উধাও ছিলেন শুভাপ্রসন্ন। কখনও শোনা গিয়েছে, তিনি আছেন দিল্লিতে। আবার দিল্লি থেকে তিনি কিষানগঞ্জ হয়ে নেপাল চলে গিয়েছেন, এমন সন্দেহও করেছিলেন কেউ কেউ। শুক্রবার সেই শুভাপ্রসন্নকেই তাঁর বাড়ির দরজার সামনে খুঁজে পান সাংবাদিকেরা। গাড়ি থেকে নেমে এক লহমায় বাড়ির ভিতরে সেঁধিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। দু-একটা প্রশ্ন ছোড়া হয়েছিল, উত্তর দেননি কাক-শিল্পী। রাত পর্যন্ত আর দেখাও যায়নি তাঁকে।

আর এ দিন তাঁর যেন কোনও তাড়াহুড়োই নেই। দুপুর ১টা নাগাদ গেরুয়া পাঞ্জাবি পরা ছোটখাটো চেহারার মানুষটি দরজার ও পারে সাংবাদিক দেখেও মুখ লুকোনোর চেষ্টা করলেন না। ধীর পায়ে এগিয়ে গেলেন গাড়ির দিকে। আচমকা তাঁকে দেখে ঝাঁকে ঝাঁকে প্রশ্ন উড়ে এল এখন কোথায় যাচ্ছেন? ইডির কাছে কবে যাবেন? শুক্রবারের মিছিলে আপনাকে দেখা গেল না কেন? আপনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন কেন? অচঞ্চল শুভাপ্রসন্ন কোনও প্রশ্নেরই উত্তর না দিয়ে গাড়িতে উঠে গেলেন। দ্রুত গতিতে গাড়ি ছুটে গেল করুণাময়ীর দিকে।

কেন এই পরিবর্তন, তার উত্তর অবশ্য দিনভর পাওয়া যায়নি।

এর আগে, বেলা ১১টা নাগাদ গাড়ি করে বাড়ি ফেরেন শিপ্রাদেবী। প্রথমে নিজের মুখ কাপড় দিয়ে ঢাকার চেষ্টা করলেও পরক্ষণেই আড়াল সরিয়ে নেন। তাঁকে দেখে সাংবাদিকরা জানতে চান, শুভাবাবু বাড়ি আছেন? প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে সাংবাদিকদের পাল্টা প্রশ্ন করেন তিনি, “আপনারা চা খাবেন?”

সল্টলেকের বিএইচ ব্লকে দুপুরের নির্জন রাস্তায় সাংবাদিক ছাড়া তখন দেখা গিয়েছে টহলদারি পুলিশের একটি জিপকেও। সেটি শুভাপ্রসন্নর বাড়ির আশপাশে চক্কর কাটছিল।

কিন্তু ভরদুপুরে শিল্পী গেলেন কোথায়? কারও মুখে কোনও উত্তর নেই। শুভাপ্রসন্ন বেরিয়ে যেতেই বাড়ি আবার আগের মতো নিস্তব্ধ। চারপাশে কয়েকটা কাকের কা কা ডাক ছাড়া আর কিছুই শোনা যায়নি। বাড়ির গেট সেই যে বন্ধ হয়েছে, বিকেল পর্যন্ত আর খোলেনি। পরে ওই বাড়ির ল্যান্ডলাইনে ফোন করে কোনও সাড়া মেলেনি। শুভাপ্রসন্নর মোবাইল ফোনও বেজে গিয়েছে অনেক বার। এসএমএস করেও উত্তর মেলেনি।

মেজাজ বদলালেও কাক-শিল্পীর এই ফোন না-ধরার রেওয়াজে অন্তত শনিবারেও কোনও বদল নেই।

saradha scam Subhaprasanna salt lake cbi not speak reporters house sudipta sen tmc state news online news
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy