Advertisement
E-Paper

হাতি চলে বাজার... কী একটা কথা আছে না? নো কমেন্টস! তাপস-কাণ্ডে এটুকুই বললেন সুদীপ

মঙ্গলবার সারা দিন নীরব ছিলেন উত্তর কলকাতার প্রবীণ সাংসদ। মোবাইল ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা দেখেও জবাব দেননি সুদীপ। বুধবার বিকেলে প্রতিক্রিয়ায় বোঝালেন, তাপসের অভিযোগকে পাত্তা দিচ্ছেন না।

তাপস রায়ের অভিযোগকে পাত্তা দিতে নারাজ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।

তাপস রায়ের অভিযোগকে পাত্তা দিতে নারাজ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২২ ১৬:১৯
Share
Save

দলের বিধায়ক তাপস রায়ের কড়া আক্রমণের ২৪ ঘণ্টা পর ছোট্ট বার্তায় প্রতিক্রিয়া জানালেন তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। আবার কোনও প্রতিক্রিয়া জানালেনও না বটে! আনন্দবাজার অনলাইনের পাঠানো প্রশ্নের জবাবে বুধবার সুদীপ শুধু লিখেছেন, ‘হাতি চলে বাজার... কী একটা কথা আছে না। নো কমেন্টস।’ সঙ্গে একটি হাসির ইমোজিও পাঠিয়েছেন উত্তর কলকাতার সাংসদ তথা উত্তর কলকাতা জেলা তৃণমূলের সভাপতি।

ঘটনাচক্রে, বুধবার তাপসের বাড়িতে গিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। দলীয় সূত্রে খবর, কুণাল গিয়েছিলেন বুঝিয়েসুঝিয়ে তাপসকে ‘নরম’ করতে। দলের একাংশ অবশ্য দাবি করেছিল, তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে কোনও ‘সতর্কবার্তা’ নিয়ে কুণাল তাপসের বাড়ি গিয়েছেন। কিন্তু সুদীপ বিতর্কে কুণাল কোনও মন্তব্য করতে চাননি। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কোনও বার্তা নিয়ে এসেছেন, এমন কথাও বলেননি তিনি। প্রশ্নের উত্তরে তৃণমূল মুখপাত্র তথা রাজ্য সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, "তাপস রায়ের সঙ্গে দাদা-ভাইয়ের সম্পর্ক। আমি বিজয়া করতে এসেছিলাম। তৃণমূলে সমস্যা নেই।’’ তবে একই সঙ্গে কুণাল এ-ও বলেন যে, ‘‘তাপস’দা শীর্ষ নেতা। দলের বহু দিনের নেতা। তাপস’দার মূল্যায়ন করা উচিত।’’ পাশাপাশিই বিজেপিকে খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির পুরনো নেতাদের থুতু ফেলে ডুবে মরা উচিত! দলবদলুদের নিয়ে চলতে হবে না কি? তাপস রায় দীর্ঘ দিন ধরে এখানে রাজনীতি করেন। সব খবর সংগ্রহ করা হচ্ছে। সমস্যা কিন্তু বিজেপির। এটা ওদের সমস্যা। এবার ভাবুন কী করবেন? তাপসদার কাছে এই এলাকার সব খবর পৌঁছয়।’’

আর তাপসকে বুধবার সুদীপ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘গত কালের (মঙ্গলবারের) বক্তব্য আমার বক্তব্যই। বিজেপির অবশ্যই দৈন্যদশা! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতৃত্বে অভিষেক বন্দোপাধ্যায় আমাদের নেতা। আমাদের লাখ লাখ কর্মী। বিজেপি যেন তৃণমূল থেকে নেতা ভাঙিয়ে জয়ের খোয়াব না দেখে৷’’ তৃণমূল থেকে কোন নেতাকে ভাঙানোর কথা তাপস বলেছেন, তা অবশ্য তিনি খোলসা করেননি। তৃণমূলের একটি অংশের দাবি, নাম না-করলেও এ ক্ষেত্রেও তাপসের লক্ষ্য সেই সুদীপই। তবে এ নিয়ে কোনও পক্ষই প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে চাইছে না। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক এখন শহরে নেই। এই সপ্তাহান্তে তাঁর ফেরার কথা। তিনি ফিরলে দলের অভ্যন্তরে তাপস-সুদীপ দ্বন্দ্ব নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

প্রসঙ্গত, সোমবার রাতে উত্তর কলকাতা বিজেপির সভাপতি হিসেবে মনোনীত হন তমোঘ্ন ঘোষ। মঙ্গলবারেই সাংবাদিক বৈঠক করে সুদীপের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন তাপস। তিনি ইঙ্গিত করেন, সুদীপের কথাতেই তমোঘ্নকে উত্তর কলকাতা বিজেপির সভাপতি করা হয়েছে। তাঁর আরও অভিযোগ ছিল, ‘‘দলনেত্রীর (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) ভাবমূর্তিকে ব্যক্তিগত স্বার্থে কাজে লাগিয়ে নিজের ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার পাশাপাশি বিরোধী দল বিজেপির সঙ্গে সুসম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছেন সুদীপ।’’ পাশাপাশিই তাপস বলেছিলেন, তমোঘ্ন ও তাঁর পিতা তপন— উভয়েই সুদীপের ‘অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ’।

তাপস যে ভাবে সুদীপের বিরুদ্ধে ‘বিজেপি-ঘনিষ্ঠতা’র অভিযোগ এনেছিলেন, তাতে শোরগোল পড়েছিল রাজ্যের শাসক শিবিরে। কারণ, তাপস অভিযোগ করেছিলেন, সম্প্রতি দুর্গাপুজোর আবহে সুদীপ গিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপি নেতা কল্যাণ চৌবের সঙ্গে দেখা করেছেন। তাপস বলেছিলেন, ‘‘এ বার দুর্গাপুজোয় তমোঘ্ন ঘোষের বাড়ির পুজোয় আমন্ত্রিত ছিলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারী ও কল্যাণ চৌবে। প্রত্যেকেই একই দিনে ওই বাড়ির পুজোয় গিয়েছিলেন।’’ যদিও তাঁদের মধ্যে কোনও বৈঠক হয়েছিল কি না, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি তাপস।

তাপসের ওই অভিযোগের পর মঙ্গলবার সারা দিন নীরবই ছিলেন উত্তর কলকাতার প্রবীণ সাংসদ সুদীপ। বার বার বার্তা পাঠালেও জবাব দেননি। অবশেষে বুধবার বিকেলে তিনি সংক্ষেপে লিখলেন, ‘হাতি চলে বাজার... কী একটা কথা আছে না। নো কমেন্টস।’

Sudip Banerjee Tapas Roy TMC Leaders

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}