সুগত বসু।
পশ্চিমের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়ার খোঁজে কলকাতায় আসে। মেধা টানতে এ বার বাংলার জেলায় জেলায়, এমনকী দেশের নানা প্রান্তে যাওয়ার জন্য প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়কে পরামর্শ দিলেন মেন্টর গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তৃণমূল সাংসদ সুগত বসু। তাঁর মতে, শিক্ষা-মান বাঁচাতে, শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ বজায় রাখতে এটা ছাড়া পথ নেই।
রবিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনের শেষে সুগতবাবু বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘আউটরিচ’ বাড়াতে হবে। জেলায় এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বহু মেধাবী পড়ুয়া রয়েছে। তাদের কাছে গিয়ে বলতে হবে, কলকাতায় এমন একটি বিশ্ববিদ্যালয় আছে, যেখানে তারা আসতে পারে। মেধা তুলে আনতে হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি আকৃষ্ট করতে হবে তাদের।’’
মেন্টর-প্রধানের এই পরামর্শের ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়েছে শিক্ষাজগৎ ও প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনীদের মধ্যে। এ বছর সেখানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে ৩০০ আসন খালি থাকায় শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। প্রেসিডেন্সির শিক্ষা-মান নিয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষা শিবির। প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অমল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অতীতে প্রেসিডেন্সিতে ভর্তি হতে ভিড় উপচে পড়ত। এখন আসন ভরাতে তাদের প্রচারে নামতে হবে শুনেই খারাপ লাগছে। শিক্ষা-মানের অবনমনই এর প্রধান কারণ।’’ অর্থনীতিবিদ অনুপ সিংহের মতে, এই প্রস্তাব ‘হাস্যকর ও অবাস্তব’। কেননা মেধাবীরা জানেন, কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে কী হচ্ছে।
শিক্ষা শিবিরের বক্তব্য, ভর্তিরও তো নির্দিষ্ট পদ্ধতি থাকা দরকার। জেলা ঢুঁড়ে মেধা জোগাড় করে কোন প্রক্রিয়ায় তাদের ভর্তি করা হবে?
ভর্তির চালু পদ্ধতি নিয়ে পরোক্ষে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সুগতবাবু। তিনি বলেন, ‘‘জয়েন্ট বোর্ডের মাধ্যমে ভর্তি হলেও প্রতিটি উচ্চ মানের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অ্যাডমিশন অফিস থাকা উচিত। মূলত পড়ুয়াদের কাছে পৌঁছতে হবে।’’ প্রেসিডেন্সির রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর চেয়ার প্রফেসর স্বপন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রবেশিকা যাতে সময়ে হয়, সে-দিকে নজর রাখতে হবে। তা হলেই আসন খালি থাকার সমস্যা অনেকটা মিটবে।’’
উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়ার মতে, সুগতবাবুর প্রস্তাব খুবই ভাল। আনুষ্ঠানিক ভাবে সেই প্রস্তাব এলে তাঁরা অবশ্যই রূপায়ণ করবেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে সুগতবাবুর মন্তব্য যথার্থ বলে মন্তব্য করলেও প্রাক্তনী সংসদের সাধারণ সম্পাদক বিভাস চৌধুরী জানান, বিদেশেও যার সুনাম আছে, সেই প্রেসিডেন্সিকে যদি পড়ুয়ার খোঁজে নামতে হয়, তা হলে সেটা খুবই দুঃখের।
সুগতবাবু জানান, এই বিষয়ে উপাচার্য, শিক্ষক, প্রাক্তনী, পড়ুয়াদের সঙ্গেই কথা বলতে চান তাঁরা। অমর্ত্য সেনের সঙ্গে কথা হয়েছে। মেন্টর গ্রুপেও আলোচনা চলছে। ২০১১-র পর থেকে প্রেসিডেন্সি কোথায় দাঁড়িয়ে, তার মূল্যায়ন-রিপোর্ট দেওয়া হবে মুখ্যমন্ত্রীকে। সংস্কার করতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘হেরিটেজ’ নষ্ট করার যে-অভিযোগ উঠছে, সেই বিষয়েও প্রাক্তনীদের সঙ্গে কথা বলতে চান সুগতবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy