Advertisement
E-Paper

সালিশির জেরে অগ্নিদগ্ধ যুবক মৃত, অধরা দুষ্কৃতী

সালিশির জেরে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে অগ্নিদগ্ধ যুবকের মৃত্যু হল। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই যুবককে মালদহ মেডিক্যাল থেকে বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতার এসএসকেএম হাসপতালে ভর্তি করানো হয়। রবিবার বিকেলে হাসপাতালেই মৃত্যু হয় তাঁর। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম কামাল হুসেন (২০)।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫ ০১:৩০
মৃত কামাল হুসেন। নিজস্ব চিত্র।

মৃত কামাল হুসেন। নিজস্ব চিত্র।

সালিশির জেরে গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে অগ্নিদগ্ধ যুবকের মৃত্যু হল। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই যুবককে মালদহ মেডিক্যাল থেকে বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতার এসএসকেএম হাসপতালে ভর্তি করানো হয়। রবিবার বিকেলে হাসপাতালেই মৃত্যু হয় তাঁর। পুলিশ জানায়, মৃতের নাম কামাল হুসেন (২০)।

এ দিকে সালিশি সভায় বদনামের লজ্জা ঢাকতেই তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ জানিয়েছিলেন তাঁর পরিবারের লোক। তার তিন দিন পরেও মূল অভিযুক্ত ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা-সহ অভিযুক্তদের কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় এলাকায় ক্ষোভ ছিলই। বিকেলে যুবকের মৃত্যুর ঘটনা জানার পরে ক্ষোভ আরও বেড়েছে। ক্ষুব্ধ হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক তজমুল হোসেনও। পুলিশ অভিযুক্তদের আড়াল করতে চাইছে কি না প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও।

অবশ্য এ দিনও অভিযুক্ত ফব নেতা নুর আলম চৌধুরীর দাবি, ‘‘সালিশির কোনও ঘটনা ঘটেনি। শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে ঝামেলার জেরেই ও আত্মহত্যার চেষ্টা করে বলে শুনেছি। পুলিশ তদন্ত করলেই সব স্পষ্ট হয়ে যাবে।’’

সদ্য ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বিধায়ক তজমুল হোসেন। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘এখনও পুলিশ কাউকে কেন গ্রেফতার করতে পারল না সেটা স্পষ্ট নয়। আশা করছি পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।’’

চাঁচলের এসডিপিও রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গাফিলতির অভিযোগ ঠিক নয়। প্রত্যেকেই এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পর আমি নিজেও একাধিক বার তাদের খোঁজে তল্লাশি চালিয়েছি। তল্লাশি চলছে।’’

১৫ ডিসেম্বর আলিনগর এলাকায় ওই সালিশির ঘটনাটি ঘটে। হরিশ্চন্দ্রপুরের মসজিদপাড়ার যুবক কামাল হুসেন আগের দিন গাঙনদিয়া এলাকায় মেলা দেখতে গিয়ে এক তরুণীকে উত্যক্ত করেন বলে অভিযোগ। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তরুণীকে সহবাসের উদ্দেশ্যে নির্জন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে সালিশিতে দোষী সাব্যস্ত করে তাঁর কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। টাকা দিতে না পারায় তাঁর মোটরবাইক ও মোবাইল ফোনও কেড়ে নেওয়া হয়। এক সপ্তাহ পরে মঙ্গলবার রাতে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই যুবক।

যুবকের বাবা শেখ মফিজুদ্দিনের অভিযোগ ছিল যে, মেলায় পরিচিত এক তরুণীর সঙ্গে কথা বলে বাড়ি ফেরার সময় ছেলেকে হরিশ্চন্দ্রপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধক্ষ নুর আলম চৌধুরীর নির্দেশে রাস্তা থেকে কয়েক জন তুলে নিয়ে যায়। সারা রাত ক্লাবে আটকে মারধরের পর দিন সালিশি ডেকে তাঁকে মিথ্যে বদনাম দিয়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। টাকা দিতে না পারায় শ্বশুরবাড়ি থেকে পাওয়া মোটরবাইক ও মোবাইল ফোনটিও নুর আলম তাঁর কাছে রেখে দেন বলে অভিযোগ। অভিযোগ, তার পর থেকেই জরিমানার টাকা দেওয়ার জন্য ওই ফব নেতা ক্রমাগত ফোনে হুমকি দিচ্ছিলেন। এ দিকে সালিশির জেরে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকেরাও বিচ্ছেদ চেয়ে বিয়েতে দেওয়া সব যৌতুক ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দিয়েছিলেন। পুলিশের কাছে অভিযোগে ফব নেতার পাশাপাশি কামালের শ্বশুরের নামও আছে। সঙ্গে দেওয়া হয়েছে সালিশি সভায় সিদ্ধান্তের লিখিত সালিশিপত্রও।

state news suicide firing
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy