রাজনীতির লড়াইয়ে কুকথার স্রোতে নিজেকে যেন স্থির রাখেন জামাই। জামাইষষ্ঠীর সকালে আশীর্বাদের সঙ্গে এমনই পরামর্শ দিলেন শাশুড়ি।
এমনিতেই ব্যস্ত জামাই, তায় নতুন দায়িত্ব পেয়েই দিল্লি ছুটতে হয়েছে। তাই ষষ্ঠী করতে শ্বশুরবাড়ি আসার যে উপায় নেই, তা বোঝেন শ্বশুর-শাশুড়ি। বুধবার তাই সাতসকালে ষষ্ঠীপুজো সেরে জামাইকে ফোন করলেন শাশুড়ি। ফোনে আশীর্বাদ ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বললেন আরও দুটো কথা। সে কথা পরে নিজমুখেই শোনালেন শাশুড়ি। বললেন, “আমার জামাই এমনিতে খুবই ভালমানুষ। এখন বড় দায়িত্ব পেয়েছে। এ দিন আশীর্বাদ করে বললাম, জীবনে যত বড়ই হও, সৎ থেকো, আর মুখের ভাষা যেন মার্জিত থাকে।’’
বুধবার সকালে জলপাইগুড়ির কামারপাড়ার শ্বশুরবাড়ি থেকে ফোনে এমনিই পরামর্শ গিয়েছে সদ্য কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া সুকান্ত মজুমদারের কাছে। বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত জলপাইগুড়ি শহরের জামাই। বুধবার দুপুরে কামারপাড়ার টিনের চাল ছাওয়া ছিমছাম একতলা বাড়ির ঘরে বসে সুকান্তের শাশুড়ি শীলা চৌধুরী বললেন, “সেই যেদিন থেকে সুকান্ত সাংসদ হয়েছে, তখন থেকে একবারও ষষ্ঠী করতে আসতে পারেনি। এখন তো মন্ত্রী হয়েছে। এখন আসা তো আরও কষ্টকর।”
জানা গেল, সাংসদ হওয়ার আগে সুকান্ত মজুমদার অবশ্য ষষ্ঠী করতে আসতেন। সুকান্তের শ্বশুর দেবাশিস চৌধুরী বন দফতর থেকে অবসর নিয়েছেন। পেশায় আইনজীবী দেবাশিসবাবু এ দিন বললেন, “আমাদের জামাইয়ের খাবারের বায়নাক্কা তেমন নেই। ষষ্ঠীতে আমিই বাজার করতাম।” শাশুড়ির সংযোজন, “ভাতের সঙ্গে ডাল শুকনো দিলেও ভাল করে খায়। ইলিশ মাছ খেতে ভালবাসে।” রাজনৈতিক কর্মসূচিতে জলপাইগুড়ি এসে একাধিকবার শ্বশুরবাড়িতে ঢুঁ মারেন সুকান্ত। তবে তাঁর শ্বশুরের কথায়, “সঙ্গে এত পুলিশ, লোকজন থাকে যে, ভাল করে কথাই বলা যায় না।”
কামারপাড়ার চৌধুরী দম্পতির দুই মেয়ে। দুই জামাই কর্মসূত্রে বাইরে। দু’জনের কেউই আসতে পারেননি এ বার। দু’জনকেই সকালে পুজো সেরে ফোন করেছিলেন শীলা চৌধুরী। দু’জনকেই আশীর্বাদ জানিয়েছেন। সঙ্গে মন্ত্রী জামাই সুকান্তের জন্য দুটো বিশেষ পরামর্শ। সুকান্তর শাশুড়ির কথায়, “এখন চারপাশে রাজনীতিতে যা দেখি, শুনি। চারদিকে কুকথা, অবক্ষয়। তাই ভয় করে। আমি তো জামাইকে বললাম, তুমি এখন মন্ত্রী হতে পারো, তবে আমার জামাই, এটা স্থায়ী পদ। আজীবন সৎ থেকো, ভাষা মার্জিত রেখো।” বিষয়টি নিয়ে সুকান্তকে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)