E-Paper

খাঁড়া ঝুলছে! সুপ্রিম কোর্ট সতর্ক করল এসএসসি-কে

বিচারপতি কুমার বলেন, হাই কোর্টের একজন বিচারপতি ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রূপায়ণের দিকটি দেখছেন। ফলে আদালত অবমাননার দিকটিও হাই কোর্ট দেখতে পারে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৭:৪৮

— ফাইল চিত্র।

গ্রিক উপাখ্যান অনুযায়ী, সিরাকিউজ়ের রাজা ডায়োনিসিস এক বার তাঁর সভাসদ ডামোক্লিজ়-কে নিজের সিংহাসনে বসতে দিয়েছিলেন। কিন্তু সিংহাসনের উপরে তিনি ঘোড়ার লোম দিয়ে ধারালো তরবারি ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। অর্থাৎ যে কোনও সময় ওই তরবারি ঘাড়ে পড়তে পারে। ‘ডামোক্লিজ়ের তরবারি’ তাই চিরকালই ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের জন্য সম্ভাব্য বিপদের প্রতীক।

আজ সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশনকে সেই ‘ডামোক্লিজ়ের তরবারি’ নিয়েই সতর্ক করে দিল। এসএসসি-র ২০১৬-র পরীক্ষায় নিযুক্ত ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট দাগিদের বেতন ফেরত, দাগি বা অযোগ্যদের ওএমআর শিট প্রকাশ এবং অযোগ্যদের পরীক্ষায় বসতে না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। রাজ্য সরকার তথা স্কুল সার্ভিস কমিশন সেই নির্দেশ মানছে না বলে অভিযোগ তুলে আদালত অবমাননার মামলা হয়। আজ সুপ্রিম কোর্ট সেই মামলা শোনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বিচারপতি সঞ্জয় কুমার স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইনজীবী জয়দীপ গুপ্তকে বলেছেন, ‘‘যদি আপনারা সুপ্রিম কোর্টের রায় পড়ে না থাকেন, তা হলে ডামোক্লিজ়-এর তরবারির মুখোমুখি হওয়ার আগে আপনার মক্কেলদের রায়টা পড়ে নিতে বলুন।’’ রাজ্য সরকার ও এসএসসি-কে তোপ দেগে বিচারপতি কুমার বলেন, ‘‘আপনারা একই নৌকার যাত্রী। আপনারা কোনও না কোনও ভাবে দাগি চাকরিহারাদের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় চোরাপাচার করে ঢোকানোর চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন।’’

সুপ্রিম কোর্ট ২৬ হাজার চাকরি বাতিল করলেও তার মধ্যে দাগিদের বাদ দিয়ে যোগ্যরা ফের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন বলে নির্দেশ দিয়েছিল। আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত ও ফিরদৌস শামিম জানান, দাগিদের বেতন ফেরত, অযোগ্যদের ওএমআর শিট প্রকাশ, দাগিদের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় না ঢোকানোর মতো নির্দেশ এসএসসি মানছে না বলে প্রথমে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা হয়। কিন্তু হাই কোর্ট জানায়, এটি হাই কোর্টের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না। সুপ্রিম কোর্টই তার রায়ের অবমাননার মামলা শুনতে পারে। আজ আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য আদালত অবমাননার অভিযোগ করেন।

বিচারপতি কুমার বলেন, হাই কোর্টের একজন বিচারপতি ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রূপায়ণের দিকটি দেখছেন। ফলে আদালত অবমাননার দিকটিও হাই কোর্ট দেখতে পারে। এসএসসি-র আইনজীবী তার বিরোধিতা করে বলেন, হাই কোর্ট নির্দেশ রূপায়ণের দিকটি দেখতে পারে। আদালত অবমাননার দিক দেখতে পারে না। বিচারপতি কুমার বলেন, ‘‘তা হলে আপনারা এখানেই কৃতকর্মের জন্য সমালোচনা শুনুন।’’ সুপ্রিম কোর্ট এসএসসি-কে তিন সপ্তাহের মধ্যে নিজের বক্তব্য জানাতে বলেছে। ২৮ জানুয়ারি শুনানি হবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Supreme Court of India SSC West Bengal School Service Commission

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy