Advertisement
E-Paper

মমতার কাউন্সেলিং নিদান তাঁকেই ফেরালেন সূর্যকান্ত

রাজ্যে যে কোনও ছোট ঘটনাকে সংবাদমাধ্যমে বড় করে দেখানো হচ্ছে। আর বিরোধীরাও অযথা তা নিয়ে হইচই করছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই অভিযোগে এ বার নতুন সংযোজন কাউন্সেলিং তত্ত্ব। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ভাইঝি রাস্তায় আইন ভাঙার পরেও তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টে সে দিনের কর্তব্যরত ট্র্যাফিক কনস্টেবলকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৫ ০৪:০০

রাজ্যে যে কোনও ছোট ঘটনাকে সংবাদমাধ্যমে বড় করে দেখানো হচ্ছে। আর বিরোধীরাও অযথা তা নিয়ে হইচই করছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই অভিযোগে এ বার নতুন সংযোজন কাউন্সেলিং তত্ত্ব।

মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ভাইঝি রাস্তায় আইন ভাঙার পরেও তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টে সে দিনের কর্তব্যরত ট্র্যাফিক কনস্টেবলকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এই বিতর্ক নিয়ে মুখ খুলেই মঙ্গলবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘‘বাচ্চা মেয়েদের একটা ঘটনা ঘটেছে। এর জন্য পুলিশ তাদের লাইসেন্স সিজ করে নেবে?’’ সেই সঙ্গেই তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘আমি পুলিশের কাজে হস্তক্ষেপ করছি না। পুলিশ তদন্ত করুক। কিন্তু মনে করি, সকলেরই কাউন্সেলিং দরকার।’’

কেন কাউন্সেলিং তত্ত্ব তিনি খাড়া করছেন, তার ব্যাখ্যাও দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘পুলিশের মধ্যে একাংশ মাথা ঠান্ডা করে কাজ করে। আর একটা অংশ উত্তেজিত হয়। মাথা ঠান্ডা করে কাজ করলে কাজ ভাল হয়।’’ শুধু পুলিশের কাউন্সেলিংয়ের নিদান তিনি দিয়েছেন, তা নয়। প্রকারান্তরে তিনি বিরোধীদেরও কাউন্সেলিংয়ের পরামর্শ দিয়েছেন বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা। কেননা, পুলিশের কথা প্রসঙ্গেই মমতা বলেছেন, ‘‘রাজনীতিবিদদের মধ্যেও ১০০ শতাংশ সৎ নন। শান্ত হয়ে কাজ করলে কাজ ভাল হয়। কিন্তু ১শতাংশের কাজের জন্য অন্যদেরও কথা শুনতে হয়।’’

ঘটনা পরম্পরায় ‘উত্তেজিত’ হয়ে ওই কনস্টেবল মেয়রের ভাইঝির গাড়ি দাঁড় করিয়ে ‘অপরাধ’ করেছেন বলে মুখ্যমন্ত্রী প্রমাণ করার চেষ্টা করলেন বলে বিরোধীরা সরব হয়েছেন। ঘটনাচক্রে এ দিন মুখ্যমন্ত্রীকে ঝাঁঝাঁলো ভঙ্গিতে বক্তৃতা করতে দেখে কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া সভায় বলেন, ‘‘আপনি এত রাগছেন কেন?’’ মমতা অবশ্য মানসবাবুকে পাল্টা বলেন, ‘‘আপনি সংবাদমাধ্যমকে শোনানোর জন্য বলছেন, তাই না!’’ বিরোধীদের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী নিজেই উত্তেজনার বশে এই সব মন্তব্য করেছেন। পাশাপাশি তাঁদের প্রশ্ন, নিয়ম মেনে কর্তব্য করেও কেন পুলিশ কর্মী ‘অপরাধে’র শিকার হবেন? এর প্রেক্ষিতে বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র মমতারই কাউন্সেলিংয়ের প্রয়োজন বলে পাল্টা কটাক্ষ করেছেন। সভার পরে তাঁর মন্তব্য, ‘‘ওঁর নিজেরই কাউন্সেলিং দরকার। তার সঙ্গে ওষুধপত্র লাগলেও আপত্তি নেই। উনি তো নিজে আবার স্বাস্থ্যমন্ত্রীও!’’ প্রসঙ্গত, মানসবাবু এবং সূর্যবাবু দু’জনেই আদতে চিকিৎসক!

শুধু ঘটনাকে ‘লঘু’ করার প্রবণতাই নয়, বিধানসভার কোনও সূচি যে মমতা মানেন না, সেই অভিযোগ তুলে সূর্যবাবু বলেন, ‘‘বিধানসভায় কখন কী হবে, কখন কী বলতে হবে আগে থেকে তা স্থির হয় কার্যবিবরণীতে। সভার কার্যবিবরণীর বাইরে উনি ওঁর সুবিধামতো সময়ে এসে বক্তৃতা করেন।’’ সূর্যবাবুর যুক্তি, অধিবেশনের উল্লেখ পর্বে বা জিরো আওয়ারে উত্থাপিত কোনও প্রসঙ্গের জবাব দিতে হয় দু’মিনিটে। মুখ্যমন্ত্রী একে তো বিধানসভার সূচি মানেন না। তার উপরে জিরো আওয়ারের জবাবে এ দিন দীর্ঘ বক্তৃতা করেছেন। ফলে বিধানসভার কার্য-পদ্ধতি বা পরিষদীয় নিয়ম-নীতি বোঝার জন্যও মমতার কাউন্সেলিং প্রয়োজন।

Surya Kanta Mishra Mamata Bandopadhyay counselling trinamool tmc mayor police sovan chattopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy