Advertisement
E-Paper

প্যারিসে রহস্য মৃত্যু তরুণ বাঙালি গবেষকের

পরিবারের দাবি, প্যারিস থেকে তাঁদের জানানো হয়— রবিবার সকালে অনেক ক্ষণ দরজা না খোলায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়েছিল। দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকে পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে থাকা চিকিত্সক স্নিগ্ধদীপকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তিনিই জানান, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে স্নিগ্ধদীপের মৃত্যু হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১২:০১
মৃত গবেষক স্নিগ্ধদীপ দে। ছবি ফেসবুক।

মৃত গবেষক স্নিগ্ধদীপ দে। ছবি ফেসবুক।

জীবনের বিকাশ নিয়ে গবেষণায় দ্রুত এগিয়ে চলছিলেন কৃতিত্বের সঙ্গে। গবেষণার জন্যই বছর চারেক আগে প্যারিস চলে গিয়েছিলেন উত্তরপাড়ার ছেলে। সেখানেই রহস্যজনক ভাবে থেমে গেল স্নিগ্ধদীপ দে-র জীবন। মাত্র ৩৭ বছর বয়সে।

গত শনিবার উত্তরপাড়ার বাড়িতে টেলিফোনে শেষ বার কথা হয়েছিল স্নিগ্ধদীপের। তার পর থেকে আর কোনও যোগাযোগ করা যায়নি। রবিবার সারাদিন ফোনে না পেয়ে, প্যারিসে তাঁর বাড়িওয়ালি ন্যানলি নোয়েলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনিই পরিবারকে জানান, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে স্নিগ্ধদীপের মৃত্যু হয়েছে।

পরিবারের দাবি, প্যারিস থেকে তাঁদের জানানো হয়— রবিবার সকালে অনেক ক্ষণ দরজা না খোলায় পুলিশে খবর দেওয়া হয়েছিল। দরজা ভেঙে ঘরে ঢোকে পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে থাকা চিকিত্সক স্নিগ্ধদীপকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তিনিই জানান, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে স্নিগ্ধদীপের মৃত্যু হয়েছে।

আরও পড়ুন: খোঁজ মিলল পালিয়ে যাওয়া পাঁচ পড়ুয়ার

স্নিগ্ধদীপের প্যারিসে থাকা বন্ধুরা কিন্তু একদম আলাদা কথা বলছে বলে জানাচ্ছে তাঁর পরিবার। বন্ধুদের দাবি, বাড়ির মালিক ওই মহিলাই ঘরের দরজা খুলে স্নিগ্ধদীপের দেহ দেখতে পান। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে দেহ উদ্ধার করেনি। কোনটা সত্যি? পুলিশ আসার আগেই স্নিগ্ধদীপের মৃতদেহ উদ্ধার হলে, কেন অন্য কথা বললেন বাড়ির মালিক? এখানেই সন্দেহ দানা বেঁধেছে পরিবারের মনে।

তা ছাড়া, খেলাধূলা করা এবং রীতিমতো শরীর সচেতন স্নিগ্ধদীপের হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কথা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না পরিবার বা বন্ধুবান্ধব।

স্নিগ্ধদীপের বন্ধুরা ভারতীয় বিদেশমন্ত্রককে টুইট করে পুরো ঘটনার কথা জানিয়েছেন। যোগাযোগ করা হয়েছে প্যারিসের ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গেও। দু’জায়গা থেকেই সব রকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে স্নিগ্ধদীপের পরিবার।


ভেঙে পড়েছেন স্নিগ্ধদীপের স্ত্রী। নিজস্ব চিত্র।

ছোট থেকেই পড়াশোনা কৃতি ছিলেন স্নিগ্ধদীপ। পড়াশোনার পাশাপাশি ক্রিকেটও খেলতেন। পড়তেন উত্তরপাড়া গভর্নমেন্ট স্কুলে। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি ছাড়িয়ে মন দেন গবেষণার কাজে। জীবনের বিবর্তন এবং বাস্তুতন্ত্র (ইভোলিউশন এবং ইকোলজি) ছিল তাঁর বিষয়। ফ্রান্সে যাওয়ার আগে গবেষণার কাজে বেশ কিছু দিন পর্তুগালেও ছিলেন। গত চার বছর পোস্ট-ডক্টরাল ফেলোশিপ নিয়ে তিনি গবেষণার কাজ করছিলেন প্যারিসের ‘ইকোল নরমালে সুপেরিয়ের’-এ। ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন প্যারিসের রু জঁ মারমোস-এ। জীবনের বিকাশ নিয়ে স্নিগ্ধদীপের গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে দেশবিদেশের বহু বিখ্যাত সায়েন্স জার্নালে।

২০১৬ সালের ডিসেম্বরে স্নিগ্ধদীপের বিয়ে হয় হুগলিরই চুঁচুড়ার মেয়ে পায়েলের সঙ্গে। কয়েক মাস আগে প্যারিস যান পায়েল। ফেরেন গত ৫ ডিসেম্বর। পরদিনই জন্ম দেন কন্যাসন্তানের। আড়াই মাসও বয়স হয়নি তার।

সামনের জুনেই প্যারিসে গবেষণার কাজ শেষ করে ফিরে আসার কথা ছিল স্নিগ্ধদীপের। কিন্তু তার আগে আচমকাই সব শেষ। পরিবার অপেক্ষায় তাঁর মৃতদেহের জন্য। আর সত্যিই কী ভাবে মৃত্যু হল তাঁর, সেটুকু জানার জন্য।

Unnatural Death Snigdhadeep Dey Bengali Scientist
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy