মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (বাঁ দিকে) এবং শুভেন্দু অধিকারী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
দিল্লিতে আগামী বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মমতা জানিয়েছেন, বৈঠকে বাংলার বঞ্চনা এবং প্রাপ্য আদায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীীর সঙ্গে কথা বলবেন তিনি। শুক্রবার রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানালেন, একই দিনে বাংলার বঞ্চনা নিয়ে পথে নামবে রাজ্য বিজেপিও। দরকারে রাজভবনের গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখবেন তাঁরা।
সোমবার তিন দিনের সফরে দিল্লি যাচ্ছেন মমতা। সফরের শেষ দিনে মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়ার কথা তাঁর। তার আগে শুক্রবার শুভেন্দু ঘোষণা করেছেন, একই দিনে তাঁদের পাল্টা কর্মসূচির কথা। একই সঙ্গে শুভেন্দু এ-ও জানিয়েছেন যে, মোদী-মমতা সাক্ষাতের নেপথ্যে অন্য কোনও ‘তত্ত্ব’ খুঁজে লাভ নেই। সাক্ষাতপ্রার্থী মুখ্যমন্ত্রীকে সময় দিয়ে প্রধানমন্ত্রী আসলে রাজধর্ম পালন করছেন মাত্র। শুভেন্দু কোন ‘তত্ত্ব’-এর দিকে ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন? বাংলার রাজনীতির বৃত্তে ঘোরাফেরা করাদের একাংশের মতে, লোকসভা ভোটের আগে ওই বৈঠককে ইতিমধ্যেই কেউ কেউ ‘সমঝোতা বৈঠক’ বলে কটাক্ষ করেছেন। শুভেন্দু সেটাকেই খণ্ডন করে বোঝাতে চেয়েছেন, অন্য ‘তত্ত্ব’ খুঁজে লাভ নেই।
শুক্রবার একটি সভার শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন শুভেন্দু। সেখানেই তাঁকে মোদী মমতার বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন করা হলে শুভেন্দু বলেছেন, "দিল্লিতে নরেন্দ্র মোদী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎ হচ্ছে না। দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে মুখ্যমন্ত্রী সময় চেয়েছিলেন। তিনি সেই সময় দিয়েছেন।”
এর আগেও মোদী মমতার বৈঠক নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর রাজধর্ম পালনের যুক্তি দিয়েছিল বঙ্গ বিজেপি। শুক্রবার শুভেন্দুও বলেছেন, "মোদীজি রাজধর্ম পালন করেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চোখে এক জন বিজেপির বিধায়ক শুধু বিধায়ক নন, তিনি বিরোধী দলের বিধায়ক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আমাদের পঞ্চায়েত হল বিরোধী দলের পঞ্চায়েত। বিডিওরাও এখানে সেই পঞ্চায়েত সদস্যের সঙ্গে কথা বলেন না। কিন্তু মোদীজি তা করেন না। তিনি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো বজায় রাখেন। তাই মুখ্যমন্ত্রী আগেও যখন সময় চেয়েছেন দিয়েছেন। এখনও দিচ্ছেন।’’
দেশের প্রধান মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসার কারণ জানিয়ে মমতা নিজেই কিছু দিন আগে বলেছিলেন, "প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে তাঁর কাছে ১৮, ১৯ বা ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে যে কোনও এক দিন সাক্ষাতের সময় চেয়েছি। ১০০ দিনের টাকা, বাংলার বাড়ি, গ্রামীণ রাস্তা— এই সমস্ত খাতে বাংলার প্রাপ্য টাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সে নিয়েই কথা বলার আছে। ওরা জিএসটির টাকা তুলে নিয়ে যাচ্ছে বাংলা থেকে। অথচ বাংলার প্রাপ্য সব টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। ভাগের টাকা পাচ্ছি না। সে ব্যাপারেই কথা বলব প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে।’’ সূত্রের খবর সেই বৈঠকের জন্য ২০ তারিখ সময় দিয়েছেন মোদী। শুভেন্দুও শুক্রবার সে কথা জানিয়েছেন। তবে একই সঙ্গে বিরোধী দলনেতা জানিয়েছেন, মমতা যে দিন দিল্লিতে বৈঠক করবেন, তখন বিজেপিও বাংলার বঞ্চনার কথা জানিয়ে পথে নামবে কলকাতায়। শুভেন্দুর কথায় "পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি তথা বিরোধী সাংসদ, বিধায়ক, পঞ্চায়েত সদস্য এবং কাউন্সিলরদের বঞ্চনার বিরুদ্ধে আগামী ২০ তারিখে আমরাও পথে নামব।"
কিন্তু বিজেপি বাংলার বকেয়া টাকা নিয়ে কথা বলবে কি? জবাবে শুভেন্দু বলেন, "চোরেরা যত দিন না জেলে যাচ্ছে ১০০ দিনের একটা টাকা পাবে না। আগে চোরেরা জেলে যাবে, আবাস যোজনা থেকে তোলামূলের নাম বাদ যাবে তার পরে টাকার প্রশ্ন আসবে।" কিছুটা ব্যাখ্যা করেই বিজেপি বিধায়ক বলেন, "আগে বলত সব তো দিদি দিচ্ছে। দিদিই যদি দেবেন তবে এখন মোদীর সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন কেন? ইডি সিবিআই টাইট দিয়ে দিয়েছে। তাই এখন টাকা টাকা টাকা করতে হচ্ছে।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy