E-Paper

স্লোগানে হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর, দিলীপের মন্তব্যকেও সমর্থন

দলের পরবর্তী রাজ্য সভাপতি কে হবেন, তা নিয়ে চর্চার মধ্যেই শুভেন্দুর ডাকে বিধানসভায় গিয়ে দলীয় বিধায়কদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন দিলীপ। সে দিন দুই নেতার সম্পর্কে দৃশ্যত ‘উষ্ণতা’ও ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৫ ০৮:৩৪
(বাঁ দিকে) শুভেন্দু অধিকারী এবং দিলীপ ঘোষ (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) শুভেন্দু অধিকারী এবং দিলীপ ঘোষ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ খড়্গপুরে তৃণমূল কংগ্রেসের মহিলা কর্মীদের ‘কুকথা’ বলে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন। এমনকি, সেই মন্তব্যে অনড় থেকে ‘তৃণমূলকে ঘরে ঢুকে মারা’র হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন তিনি। দিলীপের মন্তব্যকেই এ বার সমর্থন করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই সঙ্গে দিলীপের মুখে যে হুঁশিয়ারির সুর শোনা গিয়েছিল, এ বার তাকেও সপ্তমে চড়িয়ে শুভেন্দু স্লোগান দিলেন, ‘ঔরঙ্গজ়েবের চামড়া, গুটিয়ে নেব আমরা’! পুরো বিষয়টিকে বিজেপি নেতৃত্বের ‘কুকথা’র প্রতিযোগিতা বলে তোপ দেগেছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। পাশাপাশি, ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দিয়ে বিভাজনের রাজনীতির অভিযোগ তুলেছে সিপিএম।

দলের পরবর্তী রাজ্য সভাপতি কে হবেন, তা নিয়ে চর্চার মধ্যেই শুভেন্দুর ডাকে বিধানসভায় গিয়ে দলীয় বিধায়কদের সঙ্গে দেখা করেছিলেন দিলীপ। সে দিন দুই নেতার সম্পর্কে দৃশ্যত ‘উষ্ণতা’ও ছিল। তার পরে রবিবার হলদিয়ার দুর্গাচকের নিউ মার্কেট এলাকায় গিয়ে দিলীপের মন্তব্য প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা বলেছেন, “উনি ওই এলাকার সাংসদ ছিলেন। সাংসদ তহবিলের টাকা দিয়ে এলাকার রাস্তা কেমন হচ্ছে, তা পরিদর্শন করতে গিয়েছিলেন। তৃণমূলের পরিচিত দুই মহিলা সেখানে যাবেন কেন? দুই মহিলা যে আচরণ করেছিলেন,
তারই প্রত্যুত্তরে দিলীপদা যেটা করেছেন, তাকে শুধু আমি নই, পশ্চিমবঙ্গবাসীও সমর্থন করবেন।” কলকাতা হাই কোর্টের বেঁধে দেওয়া শর্ত অনুযায়ী এ দিন হলদিয়ায় মিছিল ও সভা করেছেন শুভেন্দু।

রামনবমীর মিছিল কী ভাবে হবে, তার রূপরেখাও এ দিন ঠিক করে দিয়েছেন শুভেন্দু। এই সূত্রে রাম-জন্মভূমি আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন। পাশাপাশি, দোলের সময়ে ‘হামলা’র অভিযোগ তুলে এ দিনের সভা থেকে শুভেন্দু স্লোগান তুলেছেন, ‘ঔরঙ্গজ়েবের চামড়া, গুটিয়ে নেব আমরা!’ শুভেন্দু এ দিন বিভিন্ন প্রেক্ষিতে রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনকেও নিশানা করেছেন। উত্তর ২৪ পরগনায় দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের গলাতেও এ দিন হুঁশিয়ারির স্বর শোনা গিয়েছে। তিনি বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী রামনবমী নিয়ে অশান্তির চেষ্টা করছেন। ইট মারলে পাটকেল দিয়ে জবাব দিতে হবে।”

প্রসঙ্গত, বিজেপির পরবর্তী রাজ্য সভাপতি ঘোষণার আগে বঙ্গ-বিজেপির বিভিন্ন শিবিরের মধ্যে বিভাজন সরানোর বার্তা দিয়েছিলেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। শুভেন্দুর ডাকে বিধানসভায় দিলীপের যাওয়া এবং তার পরে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতির বক্তব্যকে ‘সমর্থন’ সেই বার্তারই ফলশ্রুতি কি না, তা নিয়ে জল্পনা রয়েছে বিজেপির অন্দরে।

তৃণমূল যদিও বিজেপি নেতৃত্বের ‘কুকথা’কেই নিশানা করেছে। দলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারের কটাক্ষ, “কুকথায় কেউ কারও থেকে পিছিয়ে পড়লে তিনি বিজেপিতে গুরুত্ব হারাবেন। তাই কুকথাকে সমর্থন করা ছাড়া ওঁদের কারও উপায় নেই।” এই আবহে সরব হয়েছে সিপিএম-ও। দিল্লিতে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের ফাঁকে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, “কুকথার স্রোত এক জায়গায় এসেই মিলবে। তৃণমূলের অনুশীলনে অভ্যস্ত শুভেন্দু এবং সঙ্ঘের দিলীপের বক্তব্যের ফারাক হবে না, এটাই স্বাভাবিক।” এই সূত্রেই শুভেন্দুর স্লোগান প্রসঙ্গে ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দিয়ে সুজন আরও বলেছেন, “ঔরঙ্গজেবের পতনের পরে একশো বছর মরাঠা শাসন ছিল। বিভাজনের রাজনীতি উস্কে দিতে এখন ওঁরা নানা রকম বলছেন।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

BJP Dilip Ghosh Suvendu Adhikari TMC

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy