Advertisement
E-Paper

কুণালের সভার ধাক্কা সামলাতে নন্দীগ্রামে নিজের এলাকায় চলে এলেন শুভেন্দু অধিকারী

সাংগঠনিক দায়িত্ব পেয়ে কুণাল যে দিন প্রথম পূর্ব মেদিনীপুরে এলেন, সে দিনই নন্দীগ্রামের দুই পুরনো বিজেপি নেতা জয়দেব দাস ও বটকৃষ্ণ দাস দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন।

আনন্দ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২২ ০৯:০৩
কুণাল ঘোষ এবং শুভেন্দু অধিকারী।

কুণাল ঘোষ এবং শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।

তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের দলীয় সভা এবং কয়েক জন স্থানীয় বিজেপি নেতার তাঁর হাত ধরে দলবদলের পরে মাত্র কয়েক ঘণ্টা কেটেছে। নন্দীগ্রামে নিজের এলাকায় চলে এলেন স্থানীয় বিধায়ক তথা বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবার রাতে এর পরে তিনি দফায় দফায় বৈঠক করেন দলীয় কর্মীদের সঙ্গে। তৃণমূলে যেতে পারেন, এমন নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টাও চলে বলে দলীয় সূত্রে খবর। এর ফলে প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি কুণালের কর্মসূচি গেরুয়া শিবিরে বড় ভাঙনের পথ খুলে দিল, আর তা আটকাতেই শুভেন্দু তড়িঘড়ি নন্দীগ্রামে গেলেন?

শুক্রবার রাতে নন্দীগ্রামে যে শুভেন্দু এসে যে বৈঠক করেছেন, তা স্বীকার করছেন বিজেপির নন্দীগ্রাম বিধানসভা কমিটির আহ্বায়ক মেঘনাদ পাল। মেঘনাদের অবশ্য দাবি, ‘‘তবে সেখানে তৃণমূলে যোগদানের প্রসঙ্গ ওঠেনি। ১০ নভেম্বর গোকুলনগরে জমি আন্দোলনের শহিদদের স্মরণসভা এবং ১৪ নভেম্বর ভেকুটিয়ায় সমবায় সপ্তাহ পালন নিয়েই আলোচনা হয়।’’ তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল অবশ্য শনিবার বলেন, ‘‘বিজেপি থেকে যাঁরা তৃণমূলে এসেছেন, তাঁরা তো পার্টি অফিসটাও বদলে দিয়েছেন। ভাঙন আর ঠেকাবেন কী করে? শুভেন্দু একটু অপেক্ষা করুন। গোটা জেলায় যাঁদের ভুল বুঝিয়ে বিজেপিতে নিয়ে গিয়েছিলেন, সবাই ফিরে আসছেন।’’

সাংগঠনিক দায়িত্ব পেয়ে কুণাল যে দিন প্রথম পূর্ব মেদিনীপুরে এলেন, সে দিনই নন্দীগ্রামের দুই পুরনো বিজেপি নেতা জয়দেব দাস ও বটকৃষ্ণ দাস দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। তাঁরা তমলুকে কুণালের সঙ্গে দেখাও করেন। এর পরেই তাঁদের তৃণমূলে যোগদানের সম্ভাবনা নিয়ে শুরু হয় জল্পনা। তবে শুক্রবার নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের সাউদখালি বাজারে তৃণমূলের সভায় কুণালের হাত ধরে জয়দেব তৃণমূলে এসেছেন। আত্মীয় মারা গিয়েছেন, এই কথা জানিয়ে বটকৃষ্ণ আসেননি। জয়দেবের সঙ্গে কয়েক জন কর্মী-সমর্থকও তৃণমূলে যোগ দেন। কুণালের দাবি, প্রায় ৫০০ জন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে এসেছেন। দলের তরফে ৩৩ জনের তালিকা দেওয়া হয়।

এর পর শুক্রবার রাতেই নন্দীগ্রামে যান শুভেন্দু। দলীয় সূত্রের খবর, নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের হরিপুরে ও নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের রেয়াপাড়ায় বিজেপি অফিসে দলের ব্লক ও মণ্ডল নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। রাত ৯টা থেকে প্রায় ১১টা পর্যন্ত বৈঠক চলে। জানা যাচ্ছে, হরিপুরের বৈঠকে জয়দেবের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার প্রসঙ্গ ওঠে। শুভেন্দু বিজেপি নেতাদের কাছে জানতে চান, তাঁদের কিছু বলার আছে কি না। পাশাপাশি এই দলত্যাগে কোনওরকম গুরুত্ব না দেওয়ার পরামর্শ দেন। নন্দীগ্রামের এক বিজেপি নেতা বলেন, ‘‘কুণাল ঘোষ তাঁকে নিয়ে যে সব মন্তব্য করেছেন, তাতেও গুরুত্ব দিতে মানা করেছেন শুভেন্দু। পাশাপাশি ব্লকে দলের বিভিন্ন সাংগঠনিক কর্মসূচি পালনে জোর দিতে বলেছেন।’’

গোকুলনগর গ্রামে বাড়ি জয়দেব ও বটকৃষ্ণের। দু’জনের বাড়ির সামনেই পুলিশ পাহারা বসেছে। কুণালের সভার পর থেকেই বটকৃষ্ণের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। শনিবার বাড়িতে গিয়েও পাওয়া যায়নি তাঁকে। পরে অবশ্য ফোন ধরেন বটকৃষ্ণ। বলেন, ‘‘মন বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে। ভিন্‌ রাজ্যে রয়েছি। আমি স্থির করতে পারছি না, আদৌ রাজনীতিটা করব কি না!’’ সূত্রের খবর, শুভেন্দুর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। এবং আপাতত ওড়িশায় রয়েছেন আদি বিজেপির এই নেতা। মেঘনাদ মানছেন, ‘‘শুক্রবার রাতে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে হরিপুর দলীয় কার্যালয়ে কথা হয়েছে বটকৃষ্ণের। সব ভুল বোঝাবুঝি কেটে গিয়েছে। আবার দলে ফিরছেন উনি। আপাতত ওঁকে একটু বাইরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’’

এ দিকে, জয়দেব তৃণমূলে যাওয়ার পরে তাঁর বাড়ির পিছনের বিজেপি কার্যালয়ে তৃণমূলের ব্যানার লাগানো হয়েছে। রয়েছে ঘাসফুলের পতাকাও। জয়দেব বললেন, ‘‘নতুন দলে যুক্ত হয়েছি। সকলের আশীর্বাদ নিতে পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে জনসংযোগ সারছি।’’

সহ-প্রতিবেদন: কেশব মান্না

Suvendu Adhikari Kunal Ghosh Nandigram
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy