Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Suvendu Adhikari On Ujjwala Cooking Gas

উজ্জ্বলার গ্যাস নিতে দেওয়া হচ্ছে না বাংলার মানুষকে! নবান্নে ‘নালিশ’ শুভেন্দুর, জবাব এল, মোদীকে বলুন

সোমবার শুভেন্দু ওই চিঠি পাঠিয়েছিলেন নবান্নে রাজ্যের মুখ্যসচিব ভগবতী প্রসাদ গোপালিকের দফতরে। চিঠিতে শুভেন্দু লিখেছেন, তাঁর স্থির বিশ্বাস, রাজনৈতিক কারণেই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা নিতে দেওয়া হচ্ছে না।

—ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৪ ১৪:৪৩
Share: Save:

কম দামে রান্নার গ্যাস দেওয়ার কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্প চালু রয়েছে। অথচ সেই প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করাতে গেলেই নাকি মুখের উপর বলে দেওয়া হচ্ছে, এই সুবিধা বন্ধ রয়েছে বাংলায়! অভিযোগ রাজ্যের বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। সোমবার তিনি এই মর্মে নবান্নে একটি চিঠি দিয়েছেন। শুভেন্দুর সেই চিঠিতে জানতে চেয়েছেন, কেন্দ্রীয় সরকারি সুবিধা থেকে কেন বাংলার মানুষকে বঞ্চিত করা হচ্ছে? কেন প্রধানমন্ত্রীর উজ্জ্বলা যোজনায় নাম নথিভুক্ত করতে পারছেন না বাংলার সাধারণ মানুষ? চিঠিতে কিছুটা হুঁশিয়ারির সুরে শুভেন্দু এ-ও জানিয়েছেন যে, রাজ্য সরকার এ ব্যাপারে পদক্ষেপ না করলে তিনি তাঁর মতো পদক্ষেপ করবেন। পাল্টা রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল শুভেন্দুকে পরামর্শ দিয়েছে, তাঁর যা বলার তিনি বরং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেই বলুন।

সোমবার শুভেন্দু ওই চিঠি পাঠিয়েছিলেন নবান্নে রাজ্যের মুখ্যসচিব ভগবতী প্রসাদ গোপালিকের দফতরে। চিঠিতে শুভেন্দু লিখেছেন, তাঁর স্থির বিশ্বাস, রাজনৈতিক কারণেই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা নিতে দেওয়া হচ্ছে না বাংলার মানুষকে। কারণ, সরকারের আশঙ্কা কেন্দ্রীয় সুযোগ-সুবিধা হাতে পেলে বাংলার সাধারণ মানুষ কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন দলের প্রতি অনুরক্ত হয়ে পড়তে পারেন। শুভেন্দু জানিয়েছেন, তাঁর বিশ্বাস এই জন্যই কেন্দ্রীয় প্রকল্প নিয়ে ভুল তথ্য দেওয়া হচ্ছে বাংলার মানুষকে, ভুল বোঝানোও হচ্ছে। যদিও শুভেন্দুর এই বক্তব্যের পাল্টা রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেছেন, ‘‘মুখ্যসচিবকে চিঠি না লিখে শুভেন্দুর উচিত প্রধানমন্ত্রীকেই চিঠি লেখা।’’

কারণ ব্যাখ্যা করে কুণাল বলেন, ‘‘শুভেন্দু যে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কথা বলছেন, তাতে মানুষ এক বার গ্যাস পাওয়ার পর দ্বিতীয় বার আর পাচ্ছে না। মানুষকে যা অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে, তার জন্য দায়ী কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার। এখানে বাংলার সরকারের ভূমিকা কী? শুভেন্দুর উচিত প্রধানমন্ত্রীকেই বলা, ‘আপনার প্রকল্পে মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে’।’’

চিঠিতে শুভেন্দু লিখেছিলেন, তিনি নিজে রান্নার গ্যাসের ডিস্ট্রিবিউটরদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছেন, তাঁদের কাছে এ ব্যাপারে মৌখিক নির্দেশ এসেছে জেলাশাসকের তরফে। বলা হয়েছে, কোনও ভাবেই যেন উজ্জ্বলা যোজনার আবেদনপত্র গ্রহণ না করা হয়। একই সঙ্গে চিঠিতে উজ্জ্বলা প্রকল্পের জনপ্রিয়তার কথাও সবিস্তারে জানিয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা। তথ্য-সহ লিখেছিলেন বাংলায় উজ্জ্বলা প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন কতগুলি পরিবার। শেষে মুখ্যসচিবকে তিনি এ-ও বলেছিলেন যে, ‘‘যদি আপনি পদক্ষেপ করতে ব্যর্থ হন, তবে বুঝতে হবে বাংলার মানুষকে প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার নেপথ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যই কাজ করছে।’’ বিরোধী দলনেতার সেই বক্তব্যের জবাব এসেছে রাজ্য সরকারের তরফেও।

মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এক্স হ্যান্ডলে শুভেন্দুর দাবি খারিজ করে লিখেছেন, ‘‘শুভেন্দু যে প্রকল্পের কথা বলছেন, সেটি মোদী সরকারের অন্যতম ব্যর্থ প্রকল্প। এই প্রকল্পে বণ্টন করা গ্যাস সিলিন্ডার পুনরায় ভর্তি করানোর ক্ষেত্রে গাফিলতি দেখা গিয়েছে গত দু’বছরে। উজ্জ্বলা যোজনার অধীনে থাকা ১১ লক্ষ ৮০ হাজার বাংলার মানুষ সিলিন্ডার তো দূর অস্ত্‌, একটি এলপিজির বোতলও পাননি গত আর্থিক বছরে। ৯ লক্ষ ২০ হাজার উজ্জ্বলা ‘সুবিধাপ্রাপ্ত’ গ্যাস ছেড়ে আবার উনুনের রান্নায় ফিরেছেন ২০২১-২০২২ অর্থবর্ষে। কমেছে সরকারি ভর্তুকির পরিমাণও। ২০১৮-১৯ সালে যেখানে ৩৭ হাজার ২০৯ কোটি টাকা ভর্তুকি হিসাবে দিত কেন্দ্রীয় সরকার, সেখানে ২০২৩-২৪ সালে ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে মাত্র ৬ হাজার ৯৫৬ কোটি টাকা।’’ অরূপ লিখেছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের ওই ব্যর্থ প্রকল্প নিয়ে দাবি করার আগে শুভেন্দু যেন এই তথ্যগুলিও ভুলে না যান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE