Advertisement
E-Paper

তমন্না হত্যা মামলা: ৮২ দিন পরেও জমা পড়ল না চার্জশিট! পুলিশ সুপারের অফিসে ধর্নায় মা-বাবা, উঠল ৪৫ মিনিট পর

পুলিশ কবে চ়ার্জশিট জমা দেবে, সে ব্যাপারে পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা গিয়ে তাঁর দফতরের সামনে ধর্নায় বসলেন নিহত ন’বছরের বালিকার মা-বাবা।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৭:৫৭
পুলিশ সুপারের দফতরের সামনে ধর্নায় তমন্না খাতুনের মা-বাবা।

পুলিশ সুপারের দফতরের সামনে ধর্নায় তমন্না খাতুনের মা-বাবা। —নিজস্ব চিত্র।

ঘটনার পর ৮২ দিন কেটে গেলেও, নদিয়ার তমন্না খাতুন খুনের মামলায় এখনও চার্জশিট জমা জমা পড়েনি আদালতে। পুলিশ কবে চ়ার্জশিট জমা দেবে, সে ব্যাপারে পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে তাঁর দফতরের সামনে ধর্নায় বসলেন নিহত ন’বছরের বালিকার মা-বাবা।

গত জুন মাসে কালীগঞ্জ উপনির্বাচনের ফলপ্রকাশের দিনে তৃণমূলের বিজয় মিছিল থেকে ছোড়া বোমায় তমন্নার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনার পর পরিবারের তরফে ২৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। তবে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন ১০ জন। বাকিদের দ্রুত গ্রেফতার এবং তদন্ত শেষ করে যাতে দ্রুত আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়, সেই দাবি জানাতেই বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা নাগাদ কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপারের দফতরে যান তমন্নার মা-বাবা। সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বও। তাঁদের দেখে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীরা এসপির দফতরের মূল ফটক বন্ধ করে দেন। পরে পুলিশ জানায়, এসপি এখন দফতরে নেই। অন্য পুলিশকর্তারা শুধু তমন্নার মা-বাবার সঙ্গেই দেখা করবেন। বাকিদের সঙ্গে নয়।

কিন্তু তমন্নার মা-বাবার দাবি, তাঁরা সকলকে নিয়েই পুলিশ সুপারের দফতরে যেতে চান। পুলিশকর্মীরা তা রাজি না হওয়ায় প্রতিবাদে এসপির দফতরের সামনে ধর্নায় বসে পড়েন তাঁরা। প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে অবস্থান বিক্ষোভ চলে। এর পরেই তমন্নার মায়ের সঙ্গে কথা বলেন কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার ডিএসপি শিল্পী পাল।

পুলিশকর্তার সঙ্গে সাক্ষাতের পর তমন্নার মা বলেন, ‘‘পুলিশ প্রথমে বলেছিল, ৪০ দিনে চার্জশিট দেবে। তা পিছোতে পিছোতে ৮২ দিন হয়ে গেল। পুলিশেরই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বুধবার চার্জশিট দেওয়ার কথা ছিল। তা হয়নি বলেই কথা বলতে এসেছিলাম। পুলিশ আমাদের মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিয়েছে!’’ নিহতের মায়ের অভিযোগ, তদন্তকারী আধিকারিকেরা দুষ্কৃতীদের পক্ষ নিয়েছেন। সেই জন্যই তদন্তে এত ঢিলেমি। তমন্নার পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হলেও পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল। মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিক নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তমন্নার মা। প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের পুলিশমন্ত্রীও।

তমন্নার মা জানান, পুলিশ তাঁদের আগামী শনিবারের মধ্যে চার্জশিট জমা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘উনি আমাকে হাজার আইন-কানুন বোঝানোর চেষ্টা করলেন। আমার তো এত কিছু জানার প্রয়োজন নেই। আমি আমার মেয়ের বিচার চাই। পুলিশ এত দিন কি ঘুমোচ্ছিল?’’

পুলিশের অবশ্য বক্তব্য, সব দিক ভাল করে খতিয়ে দেখেই চার্জশিট জমা দেওয়া হবে, যাতে কোথাও কোনও খামতি থেকে না যায়। ডিএসপি বলেন, ‘‘আমরা ওঁদের অবস্থা বুঝতে পারছি। এ রকম একটা স্পর্শকাতর মামলায় অভিযুক্তেরা যাতে ছাড়া না পেয়ে যান, সেই কারণেই আঁটঘাঁট বেঁধে চার্জশিট তৈরি হচ্ছে। বাকি অভিযুক্তদেরও গ্রেফতার চেষ্টা চলছে।’’

পুলিশ সুপারের দফতরে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে ডিএসপি বলেন, ‘‘ওটা সম্পূর্ণ ভুল বোঝাবুঝি। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীরা ভেবেছিলেন কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি। সে জন্য প্রোটোকল অনুযায়ী গেট বন্ধ করা হয়েছে। পরে যখন তমন্নার মা-বাবার বিষয়টি জানতে পারি, আমরা দ্রুত গিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলি। আমরা দীর্ঘক্ষণ কথা বলেছি। ওঁদের প্রতি পুলিশের যথেষ্ট সহমর্মিতা রয়েছে। তবে গোটা ঘটনাটা অনভিপ্রেত, অনাকাঙ্ক্ষিত। ইচ্ছাকৃত ভাবে কেউ ওঁদের বাধা দেননি।’’

Nadia
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy