ডানকান গোষ্ঠীর একটি চা বাগানে মৃত্যু হল আরও এক চা শ্রমিকের। জহুরান নায়েক (৫০) নামে ওই চা শ্রমিক দীর্ঘ দিন ধরে যক্ষ্মায় ভুগছিলেন বলে তাঁর পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে। তিনি কাজ করতেন ডানকান গোষ্ঠীর নাগেশ্বরী চা বাগানে। বাগানের ২ নম্বর লাইনের বাসিন্দা জহুরানবাবু শুক্রবার তাঁর বাড়িতেই মারা যান। পরের দিন, শনিবার মৃত্যু হয়েছে বেঞ্জামিন মুন্ডা (৫৭) নামে স্থানীয় আর এক ব্যক্তির। বেঞ্জামিন অবশ্য স্থায়ী শ্রমিক ছিলেন না। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভিক্ষা করেই সংসার চলত তাঁর। তিনিও অনেক দিনই অসুস্থ ছিলেন। অসুস্থতা বাড়লে চালসার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যান বেঞ্জামিন।
ডানকান গোষ্ঠীর মোট ১৬টি চা বাগান রয়েছে উত্তরবঙ্গে। চলতি বছরের মার্চ থেকে বাগানগুলি ধুঁকতে শুরু করে। শ্রমিকদের মজুরি, রেশন বকেয়া পড়তে থাকে। কিছু দিন পর থেকেই বাগরাকোট, ধুমচিপাড়া, নাগেশ্বরী-সহ বিভিন্ন চা বাগানে শ্রমিকদের মৃত্যুর খবর আসতে শুরু করে। অক্টোবরে পরিস্থিতির অবনতি হয়। এখনও ডানকানের ডুয়ার্সের বাগানগুলিতে শ্রমিক এবং শ্রমিকদের পরিবারের ৫৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। এর মধ্যে ডুয়ার্সের মালবাজার মহকুমার বাগরাকোটেই মৃত্যু হয়েছে ২৫ জনের। ধুমচিপাড়া চা বাগানে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, নাগেশ্বরীতে মারা গিয়েছেন ৪ জন।
চা বাগানে একের পর এক এই শ্রমিক-মৃত্যুর ঘটনাকে বিধানসভা ভোটের আগে হাতিয়ার করতে চাইছে বামেরা। চা বাগানের প্রতি রাজ্য সরকারের উদাসীনতার প্রতিবাদে ১ ডিসেম্বর ইতিমধ্যেই বাগানে ধর্মঘটের ডাক দিয়ে রেখেছে সিটু। তার আগে চলতি মাসের শেষে প্রতীকী অনশনও হবে দু’দিনের। চা বাগানে গিয়ে শ্রমিক পরিবারগুলির সঙ্গে কথা বলার জন্য রাজ্য কমিটির নেতাদের পাঠানোর ব্যাপারেও আলোচনা শুরু হয়েছে সিপিএমে। এরই মধ্যে আরও দু’জনের মৃত্যুর ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে প্রধান বিরোধী দল। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র এ দিন দিল্লি থেকে টুইটে অভিযোগ করেছেন, ‘‘উত্তরবঙ্গের চা-বাগানে অনাহারে আরও দু’টি মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। কখনও শারদোৎসব, কখনও খাদ্যোৎসব, কখনও ফিল্মোৎসব— মুখ্যমন্ত্রী উৎসব নিয়েই ব্যস্ত! তার মধ্যে মানুষের যন্ত্রণা বেড়েই চলেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy