Advertisement
E-Paper

ছেলেধরার গুজবে গণপ্রহার ঠেকিয়ে হেনস্থা শিক্ষকের

পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন স্কুল থেকে বেরোনোর পর ওই যুবককে রাস্তায় খারুই বাজারে কিছু লোক ছেলেধরা সন্দেহে আটকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৫৮
প্রধান শিক্ষক অনুপম জানা (বাঁ-দিকে) এবং প্রহৃত যুবক অশোক রাও

প্রধান শিক্ষক অনুপম জানা (বাঁ-দিকে) এবং প্রহৃত যুবক অশোক রাও

এক দিকে স্বঘোষিত ‘দেশভক্ত’দের দাপাদাপি, অন্য দিকে একের পর এক গুজব আর ভুয়ো খবরের বাড়বাড়ন্তে গণধোলাইয়ের রমরমা। রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে সামাজিক অশান্তির এই আবহে এক যুবককে জনরোষের হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে নিজেই জনরোষের মুখে পড়লেন এক প্রধান শিক্ষক। মঙ্গলবার দুপুরে তমলুকের খারুই গ্রামে ওই ঘটনায় খারুই ইউনিয়ন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অনুপম জানা হতাশ এবং আতঙ্কিতও।

অভিযোগ, এক যুবককে জনতার হাত থেকে বাঁচানোর ‘অপরাধে’ হেনস্থা হতে হয় তাঁকে। পরে পুলিশ ও স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

অনুপমবাবু পরে বলেন, ‘‘রাজস্থানের বাসিন্দা ওই যুবক আমাদের স্কুলে হাতের কাজের প্রশিক্ষণ দিতে এসেছিলেন। আমরা ওঁকে বৃত্তিমূলক শাখায় পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু ছাত্রছাত্রীরা জানায়, ভাষা সমস্যার জন্য ওই যুবকের কথা বোঝা যাচ্ছে না। তাই তাঁকে সুযোগ দেওয়া যায়নি।’’ তিনি জানান, পরে ওই যুবককে মারধর করা হচ্ছে জানতে পেরে তিনি ছুটে যান। লোকজনকে বুঝিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে স্কুলে নিয়ে আসেন। কিন্তু এর জন্য যে তাঁকেই হেনস্থা করা হবে, ভাবতে পারেননি।

পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন স্কুল থেকে বেরোনোর পর ওই যুবককে রাস্তায় খারুই বাজারে কিছু লোক ছেলেধরা সন্দেহে আটকে জিজ্ঞাসাবাদ করছিল। কিন্তু হিন্দিভাষী ওই যুবকের কথাবার্তা বুঝতে না পারায় তাদের সন্দেহ বাড়ে। এর পরেই ছেলেধরার গুজব ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে ওই যুবককে মারধর শুরু করে। খবর পেয়ে অনুপমবাবু ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে ওই যুবককে উদ্ধার করে স্কুলে নিয়ে যান। তাঁর কাছে খবর পেয়ে পরে ওই যুবককে স্কুল থেকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

কিন্তু এর পরই গোল বাধে। ‘ছেলেধরা’ ওই যুবককে কেন ছেড়ে দেওয়া হল, প্রশ্ন তুলে স্থানীয় জনতা হাইস্কুলে ঢুকে অনুপমবাবুর উপরে চড়াও হয়। তাঁকে হেনস্থাও করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ ও পঞ্চায়েত প্রধানের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। পুলিশ জানিয়েছে, অশোক রাও নামে ওই যুবকের বাড়ি রাজস্থানে।

প্রসঙ্গত, সোমবার রাতেও তমলুকের চনসরপুর গ্রামে ছেলেধরা সন্দেহে এক যুবককে মারধরের ঘটনা ঘটে। বার বার একই ঘটনা কেন ঘটছে, প্রশ্ন করা হলে তমলুকের এসডিপিও সব্যসাচী সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘গুজবের জেরে এই ধরনের ঘটনা রুখতে প্রচার চালানো হচ্ছে। যে দু’টি ঘটনা ঘটেছে, পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। তদন্তও শুরু হয়েছে।’’ সোমবার মুখ্যমন্ত্রী নিজেও প্রতিটি থানাকে কড়া হতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

Lynching Harassment Crime
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy