Advertisement
E-Paper

Sand Arts: অবসাদে বাঁধ দিতে বালি-শিল্প দামোদরের চরে

রঙ্গাজীবের দাবি, ‘‘অনেক ছাত্রছাত্রী, অভিভাবকদের দেখছি, করোনা-কালে মানসিক সমস্যায় পড়ছেন। অবসাদে নিজেদের শিল্প-সত্তাকে হারিয়ে  ফেলেছেন।”

সুপ্রকাশ চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২২ ০৬:০১
দামোদরের বালির চরে রঙ্গাজীব রায়ের শিল্পকর্ম। নিজস্ব চিত্র

দামোদরের বালির চরে রঙ্গাজীব রায়ের শিল্পকর্ম। নিজস্ব চিত্র

করোনা-কালে বাড়িতে বেশি সময় কাটাতে বলছেন ডাক্তারেরা। এই পরিস্থিতিতে মানসিক অবসাদ যাতে না বাড়ে, সে জন্য দামোদর নদের বালির চরে শিল্পকর্ম (ভাস্কর্য) ফুটিয়ে তুলে, তার ছবি ছাত্রছাত্রী ও পরিচিতদের পাঠাচ্ছেন পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর এক বেসরকারি কলেজের ফাইন আর্টসের শিক্ষক রঙ্গাজীব রায়।

বছর ৩৪-এর রঙ্গাজীবের বাড়ি, খণ্ডঘোষের গৈতানপুর চরমানায়। এই মুহূর্তে কলেজে অনলাইনে ক্লাস চলছে। বাকি সময়ে তিনি তাঁর ভাই কৃষ্ণ ও গ্রামেরই যুবক ভোলা সানাকে সঙ্গী করে বালিতে ফুটিয়ে তুলছেন ভাস্কর্য। সোম ও মঙ্গলবার প্রায় তিন-চার ঘণ্টা ধরে বালিতেই নানা ধরনের ভাস্কর্য গড়েছেন রঙ্গাজীব। মঙ্গলবার প্রায় ৫০ মিটার দীর্ঘ একটি মডেল তৈরি করেন।

কেন এ কাজ? রঙ্গাজীবের দাবি: ‘‘অনেক ছাত্রছাত্রী, অভিভাবকদের দেখছি, করোনা-কালে মানসিক সমস্যায় পড়ছেন। অবসাদে তাঁরা নিজেদের শিল্প-সত্তাকে হারিয়ে ফেলেছেন। সামাজিক মাধ্যমে তাঁদের এই শিল্পকর্মের ছবি পাঠিয়ে দিচ্ছি। সঙ্গে বলছি, অবসরে, নিজেদের যা ভাল লাগে, তাই করুন। অবসাদ কাটাতে শিল্পের থেকে ভাল সঙ্গী আর কিছু হয় না।”

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মনোরোগের চিকিৎসক অমিতাভ দাঁ-র পর্যবেক্ষণ, “ওই শিল্পীর এই উদ্যোগের ফলে, অনেকেই জীবন সম্পর্কে ইতিবাচক মানসিকতা ফিরে পাবেন। একাকিত্ব, অবসাদ কাটাতে, যাঁর যা ভাল লাগে, সে বিষয়গুলিকে সময় দেওয়া উচিত।”

রঙ্গাজীবের বাড়িতে রয়েছেন বাবা, মা ও ভাই। কৃষ্ণ বলেন, “ছোট থেকেই দাদা শিল্প নিয়ে থাকতে ভালবাসে। ওর কাজের সঙ্গে জুড়তে পেরে ভাল লাগছে।” রঙ্গাজীব জানান, তিনি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত একটি বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে ফাইন আর্টসে স্নাতকোত্তর করেছেন। পাশাপাশি, হুগলির এক সংস্থা থেকে শিখেছেন মাটি, বালি নিয়ে শিল্পকর্ম গড়ার পদ্ধতি।

বালু-শিল্প (স্যান্ড-আর্ট) বা ভাস্কর্য দীর্ঘদিনের শিল্পমাধ্যম। ওড়িশার শিল্পী সুদর্শন পট্টনায়ক এ বিষয়ে বহু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে চলেছেন। সম্প্রতি তালসারিতে বিশ্বজিৎ শ্যামল, পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের দুই ভাই অনিমেষ রায়, জীবনানন্দ রায়েরাও এ বিষয়ে কাজ করছেন। সে তালিকাতেই সংযোজিত রঙ্গাজীবও। রঙ্গাজীব যে শিল্প-প্রতিষ্ঠান থেকে পড়াশোনা করেছেন, সে কলেজের অধ্যক্ষ তথা বিশিষ্ট শিল্পী ঠাকুরানন্দ পাল বলেন, “রঙ্গাজীব জেলার অত্যন্ত প্রতিভাবান শিল্পী। এ ধরনের কাজ আগেও করেছে। প্রদর্শনীও হয়েছে।” তিনি জানান, বালু-শিল্প দু’ধরনের হয়। বালি তুলে এনে শিল্পকর্ম এবং ‘সাইট স্পেসিফিক আর্ট’। সে ধরনের কাজই করছেন রঙ্গাজীব। ঠাকুরানন্দ বলেন, ‘‘এ ধরনের শিল্পকর্ম ফুটিয়ে তুলতে ধৈর্যের পাশাপাশি, দরকার হয় দরদি চোখের। বালু-ভাস্কর্যকে অবসাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার চেষ্টায় ছাপ রয়েছে রঙ্গাজীবের দরদি মনের।’’

Sand Art East Bardhaman Fine Arts
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy