পঠনপাঠনের নির্ধারিত কাজকর্ম তো আছেই। তার সঙ্গে নিত্যই নতুন প্রকল্পের কাজের দায়দায়িত্ব চাপছে তাঁদের কাঁধে। কিন্তু এ রাজ্যে প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন দেওয়া হচ্ছে সেই পুরনো হারেই।
চার বছর আগে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক-পদে নিয়োগের যোগ্যতামান বেড়েছে। কর্মরত যে-সব প্রাথমিক শিক্ষক বা শিক্ষিকার সেই যোগ্যতা ছিল না, তাঁদের অনেকে আবার রীতিমতো পড়াশোনা করে যোগ্যতামান বাড়িয়েও নিয়েছেন। অথচ সংশোধিত হারে বেতন জুটছে না তাঁদের। অন্য অনেক রাজ্যে নতুন বেতনক্রম চালু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে এখনও মাধ্যমিক পাশ যোগ্যতামান অনুযায়ী নির্দিষ্ট পুরনো হারের বেতনেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে আড়াই লক্ষ প্রাথমিক শিক্ষককে।
স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, মাদ্রাসার চেয়েও প্রাথমিকের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন কম। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কাছে দরবার করেও বেতন-জটের সুরাহা হয়নি। এপ্রিলে ফের বেতন কমিশনের দ্বারস্থ হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনগুলি।
প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বাড়েনি কেন?
সরাসরি জবাব এড়িয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের আশ্বাস, ‘‘বর্ধিত গ্রেডের ভিত্তিতে বেতন দেওয়ার জন্য শিক্ষা দফতর দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।’’
আগে প্রাথমিকের শিক্ষক-পদে ন্যূনতম যোগ্যতামান ছিল মাধ্যমিক পাশ। বেতন ছিল পাঁচ হাজার ৪০০ থেকে ২৫ হাজার ২০০ টাকা এবং গ্রেড পে ছিল দু’হাজার ৬০০ টাকা। এনসিটিই-র নিয়ম অনুযায়ী ২০১২ সাল থেকে প্রাথমিক শিক্ষকদের যোগ্যতামান হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিকে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ নম্বর অথবা স্নাতক। সেই সঙ্গে দু’বছরের ডিপ্লোমা কোর্স (ডিএলএড)-এর প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক। নতুন নিয়মে নিয়োগ চালু হলেও বেতন মিলছে সেই পুরনো কাঠামোতেই।
মাধ্যমিক পাশ করে যাঁরা শিক্ষকতা করছিলেন, তাঁদেরও অনেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে ডিএলএড প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। কিন্তু তাঁদেরও সেই পুরনো মাধ্যমিক পাশের কাঠামোতেই বেতন হচ্ছে।
প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনগুলির নেতাদের বক্তব্য, পড়াশোনা ছাড়াও জনগণনা, মিড-ডে মিল, বিভিন্ন বিষয়ে সমাজ সচেতনতা বাড়ানোর প্রকল্পে বাড়তি কাজ করতে হয় প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। অথচ তাঁদের বেতন দেওয়া হচ্ছে পুরনো হারে। অবিলম্বে এই বেতন-সমস্যা মেটানোর দাবি তুলেছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy