Advertisement
E-Paper

Students Evaluation: অ্যাক্টিভিটি টাস্ক নম্বরহীন, সঙ্কটে শিক্ষক-পড়ুয়ারা

প্রশ্নের পূর্ণ মানের উল্লেখ না-থাকায় অ্যাক্টিভিটি টাস্কের মাধ্যমে পড়ুয়াদের মূল্যায়ন করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০২১ ০৭:১৯
সমস্যায় পড়েছেন শিক্ষকরা।

সমস্যায় পড়েছেন শিক্ষকরা। ফাইল চিত্র

কত নম্বরের প্রশ্ন, সেটা প্রশ্নের পাশে উল্লেখ করা নেই। অথচ সেই প্রশ্নের উত্তর যাচাইয়ের ভিত্তিতেই কত নম্বর দেওয়া যায়, তা ঠিক করে নিয়ে নির্ধারণ করতে হবে গ্রেড। কিন্তু প্রশ্নের পূর্ণ মানের উল্লেখ না-থাকায় অ্যাক্টিভিটি টাস্কের মাধ্যমে পড়ুয়াদের মূল্যায়ন করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। অন্য দিকে, পড়ুয়ারাও জানাচ্ছে, নম্বর না-থাকায় তারা বুঝে উঠতে পারছে না, কোন প্রশ্নের কতটা দীর্ঘ, কত বিশদ ভাবে উত্তর লিখতে হবে। অ্যাক্টিভিটি টাস্ক নিয়ে তাই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে শিক্ষক ও পড়ুয়া দু’পক্ষকেই।

করোনার প্রকোপে প্রায় দেড় বছর ধরে স্কুল বন্ধ। ছাত্রছাত্রীরা বাড়িতে কেমন পড়াশোনা করছে, তা জানতে এখন মিড-ডে মিলের সামগ্রীর সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ের প্রশ্নপত্র বা অ্যাক্টিভিটি টাস্ক দিচ্ছে রাজ্যের শিক্ষা দফতর। অভিভাবকেরা সেই অ্যাক্টিভিটি টাস্ক স্কুল থেকে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছেন। পড়ুয়াদের দিয়ে উত্তর লিখিয়ে নিয়ে তাঁরাই তা ফেরত দিচ্ছেন স্কুলে। শারীরিক ভাবে নির্দিষ্ট কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষার ব্যবস্থা বাতিল হওয়ায় এই অ্যাক্টিভিটি টাস্কের গুরুত্ব বেড়েছে। ফের যদি পরীক্ষা বাতিল হয়, তা হলে এই অ্যাক্টিভিটি টাস্কের উপরে নির্ভর করেই পড়ুয়াদের মূল্যায়নের ভিত্তিতে নতুন ক্লাসে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। শিক্ষা দফতর তাই অ্যাক্টিভিটি টাস্কের উত্তরের ভিত্তিতে পড়ুয়াদের গ্রেড দিতে বলেছে। কিন্তু নম্বরের অভাবে জট সেখানেও।

“অ্যাক্টিভিটি টাস্কের প্রশ্নের পাশে নম্বর না-থাকলে কী ভাবে মূল্যায়ন করে গ্রেড দেব পড়ুয়াদের? কিছু শিক্ষক নিজেদের মতো করে প্রশ্ন-পিছু পূর্ণ নম্বর ধরে নিয়ে নম্বর দিচ্ছেন। কিন্তু সেই ‘ধরে নেওয়া নম্বর’ তো সব শিক্ষকের কাছে সমান হচ্ছে না। ফলে মূল্যায়নে সমতা থাকছে না,” সমস্যা ব্যাখ্যা করলেন হাওড়ার দুইল্যা পাচপাড়া স্কুলের শিক্ষিকা সুমনা সেনগুপ্ত। তাঁর অভিযোগ, সব বিষয়ের অ্যাক্টিভিটি টাস্কের প্রশ্নও তো সমান নয়। হয়তো দেখা গেল, অঙ্কের প্রশ্নগুলিতে নিজেরা নম্বর বসিয়ে যোগ করে মোট নম্বর দাঁড়াচ্ছে ৪০। আবার ইংরেজির ক্ষেত্রে সেটা ২৫ হয়ে যাচ্ছে। সুমনাদেবী বলেন, “সব বিষয়ের অ্যাক্টিভিটি টাস্কের প্রশ্ন যদি সমমানের হত, তা হলে পড়ুয়ার সার্বিক মূল্যায়ন করতে সুবিধা হত।”

দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির পাঁচুয়াখালি হাইস্কুলের শিক্ষক কিংশুক হালদার জানাচ্ছেন, অ্যাক্টিভিটি টাস্কের প্রশ্নগুলিতে সঙ্গে নম্বর না-থাকায় শুধু শিক্ষক নয়, পড়ুয়াদেরও অসুবিধা হচ্ছে। ‘‘কোন প্রশ্নের সর্বোচ্চ নম্বর কত, তা জানতে না-পারায় কতটা উত্তর লেখা উচিত, সেটা ঠিক করে উঠতে পারছে না তারা। বিশেষ করে সমস্যা হচ্ছে বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস, ভূগোলের মতো বিষয়ে,” বলেন কিংশুকবাবু।

পূর্ব মেদিনীপুরের মেচেদার গোপালগঞ্জ প্রিয়নাথ বাণী ভবন স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক সরোজকুমার শীট জানান, এই জটিলতায় অনেক শিক্ষকই গ্রেড দিতে পারছেন না। শুধু খাতাগুলো দেখা হচ্ছে। ফলে মূল্যায়ন সম্পূর্ণ হচ্ছে না। অ্যাক্টিভিটি টাস্কের প্রশ্নের পাশে কোনও নম্বর না-থাকায় মূল্যায়ন কী ভাবে করবেন, সেই বিষয়ে তাঁরা যে এখনও সিদ্ধান্ত নিয়ে উঠতে পারেননি, তা স্বীকার করছেন ডায়মন্ড হারবারের পঞ্চগ্রাম প্রমথনাথ হাইস্কুলের শিক্ষিকা সুমনা ভট্টাচার্যও। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বক্তব্য, বহু গ্রামীণ এলাকাতেই অনলাইনে ঠিকমতো পড়াশোনা হয় না। সেখানে পড়ুয়ারা কেমন পড়াশোনা করছে, তা জানতে অ্যাক্টিভিটি টাস্কই ভরসা। তাই অ্যাক্টিভিটি টাস্কের কাজটা আরও নিবিড় পরিকল্পনার সঙ্গে করা দরকার।

শিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, অ্যাক্টিভিটি টাস্কের সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আরও বেশি করে একাত্ম হতে বলা হচ্ছে। ‘‘অ্যাক্টিভিটি টাস্কের প্রশ্নের নম্বর তো শিক্ষক-শিক্ষিকারাই দিতে পারেন। সে-ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের মূল্যায়ন করতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তা সত্ত্বেও যদি কোনও অসুবিধা হয়, তা হলে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব,” বলেন ওই শিক্ষাকর্তা।

Evaluation Teachers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy