বছর তিনেক আগে দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের কালদিঘি এলাকাতে দুর্গাপুজোর মণ্ডপের ভিতরেই গণধর্ষণ করা হয় এক মূক ও বধির তরুণীকে। ঢাকের শব্দে চাপা পড়ে গিয়েছিল সেই তরুণীর আর্তনাদ। এ বার বৃহস্পতিবার বর্ষবরণের রাতে চারপাশে উৎসবের আবহের মধ্যেই মালবাজারের নিউ গ্লাঙ্কো চা বাগানে গণধর্ষণের শিকার হল এক নাবালিকা।
লোকলজ্জার ভয়ে ওই কিশোরী প্রথমে কাউকে কিছু বলেনি। কিন্তু শনিবার রাতে তার মা ধরে ফেলেন, মেয়ের কিছু হয়েছে। তখনই সে সব কথা খুলে বলে। রবিবার দুপুরে ওই কিশোরী মালবাজার থানায় সাত জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করে। তাদের তিন জন নাবালক। বাকি চার জনের দু’জনের স্ত্রী-সন্তান রয়েছে। ২০১২ সালে গঙ্গারামপুরের ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পুলিশ মাস দু’য়েক লাগিয়ে দিয়েছিল। মালবাজারের ঘটনায় রবিবারই অভিযুক্তদের সকলকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
অভিযুক্তেরা সকলেই ওই বাগানেরই বাসিন্দা। ওই নাবালিকা পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছে। অভিযুক্তেরাও তাই। সকলেই দিন মজুর। পরস্পরকে তারা চিনত। বর্ষবরণের রাতে বাগানের কুলি মহল্লায় কাছাকাছির মধ্যেই কয়েকটি জায়গায় সাউন্ড বক্সে গান বাজানো হচ্ছিল। পিকনিকের আয়োজনও ছিল। সেই উৎসবের আবহে ওই কিশোরীও বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। সঙ্গে ছিল দুই বান্ধবীও। এর মধ্যে রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ ওই কিশোরী অন্ধকার রাস্তা ধরে একটু এগিয়ে গেলে ওই সাত জন তাকে ধরে ফেলে। যেখানে নাচ-গান হচ্ছিল, সেখান থেকে ঘটনাস্থল শ’খানেক মিটার দূরে। কিন্তু ওই কিশোরীর আর্তনাদ চাপা পড়ে যায় সাউন্ড বক্সের শব্দে। মালবাজারের এসডিপিও নিমা নরবু ভুটিয়া জানান, ওই কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হবে। পূর্ণাঙ্গ তদন্তও করবে পুলিশ।
এলাকার বাসিন্দারাও খুবই ক্ষুব্ধ। তাঁদের অনেকে জানান, ওই রাতে সকলে মিলে আনন্দ করছিল। নিজের উদ্যোগেই গানবাজনার ব্যবস্থা করেন কেউ কেউ। তার মধ্যেই যে কয়েকজন ওই কাণ্ড ঘটাবে, তা তাঁরা ভাবতেও পারেননি। ওই এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আমাদের মধ্যে এমন ছেলেরা রয়েছে জেনে খুবই দুঃখ পেয়েছি।’’