E-Paper

দশ বাঙালির শেরপাহীন আরোহণ অজানা মন্টোয়

দক্ষিণ-পূর্ব লাদাখে মন্টো শৃঙ্গের এক দিকে তিব্বত সীমান্ত, অন্য দিকে হিমাচলের স্পিতি জেলা। লেহ থেকে ২১০ কিলোমিটার দূরে,সোমো রিরি হ্রদের পাশে করজোক গ্রাম থেকে ওই শৃঙ্গের দিকে এগোতে হয়।

স্বাতী মল্লিক

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৮:২৯
শেরপাহীন এই অভিযানের মাধ্যমেই মন্টো ৪ শৃঙ্গের শীর্ষে এই প্রথম কোনও মানুষের পা পড়ল।

শেরপাহীন এই অভিযানের মাধ্যমেই মন্টো ৪ শৃঙ্গের শীর্ষে এই প্রথম কোনও মানুষের পা পড়ল। —প্রতীকী চিত্র।

প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কাকে সঙ্গী করেই লাদাখের পাহাড়ে অভিযান করতে এগিয়েছিলেন তাঁরা। টানা বৃষ্টি ও তুষারপাতের মধ্যে সাত-আট দিন ধরে তাঁবুতে বসেই দিন গুনছিলেন। তুষারাবৃত তাঁবু ঝেড়ে আর তাস পিটিয়েই বরফের দেশে দিন কাটছিল তাঁদের। অবশেষে আবহাওয়া ভাল হতেই গত শুক্র ও শনিবার লাদাখের মন্টো ৪ (৬০৪৮ মিটার) শৃঙ্গে দু’ভাগে সফল আরোহণ করেছেন পর্বতারোহী রুদ্রপ্রসাদ হালদার এবং তাঁর ১০ জনের দলবল। শেরপাহীন এই অভিযানের মাধ্যমেই মন্টো ৪ শৃঙ্গের শীর্ষে এই প্রথম কোনও মানুষের পা পড়ল।

শেরপা ছাড়া এই অভিযানে ‘অ্যালপাইন’ পদ্ধতিতে আরোহণের পরিকল্পনাই ছিল অভিযাত্রী দলের। সেই মতো গত শুক্রবার দলের চার সদস্য— সপ্তশৃঙ্গজয়ী এবংসহকারী দলনেতা সত্যরূপ সিদ্ধান্ত, নৈতিক নস্কর, দেবাশিস মজুমদার ও অনির্বাণ তালুকদার শীর্ষের উদ্দেশে রওনা দেন। ওই দিন সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ তাঁরা সামিটে পৌঁছন এবং প্রায় মাঝরাতে ক্যাম্পে নেমে আসেন। অভিযাত্রী দলের তরফে তখনই মেসেজ-বার্তা এসেছিল— ‘সামিট ছুঁয়ে ওঁরা চার জন এইমাত্র নেমে এসেছেন। আগামী কাল ভোরে দলের বাকি সদস্যেরা সামিটের দিকে এগোব।’ সেই মতো শনিবার ভোরে বেরিয়ে বিকেল ৪টে নাগাদ রুদ্রপ্রসাদের সঙ্গে তুহিন ভট্টাচার্য, সৌম্যকান্তি বিশ্বাস, ভাস্কর হালদার, নিরঞ্জন পাল ও ঋক রায় পৌঁছন মন্টো ৪-এর শীর্ষে। অর্থাৎ, পর পর দু’দিনে অভিযাত্রী দলের মোট ১০ সদস্যের পা পড়েছে মন্টো ৪-এ, যা এই শৃঙ্গের প্রথম সফল আরোহণ বলে দাবি।

দক্ষিণ-পূর্ব লাদাখে মন্টো শৃঙ্গের এক দিকে তিব্বত সীমান্ত, অন্য দিকে হিমাচলের স্পিতি জেলা। লেহ থেকে ২১০ কিলোমিটার দূরে,সোমো রিরি হ্রদের পাশে করজোক গ্রাম থেকে ওই শৃঙ্গের দিকে এগোতে হয়। ইতিহাস বলছে, লাদাখের ওই এলাকার একাধিক শৃঙ্গ এখনও অধরা। ২০০৩ সালে এ দেশের একটি অভিযাত্রী দল এই পাহাড়েঅভিযান চালাতে এসে দিক ভুল করায় এত দিন পর্যন্ত মন্টোর শৃঙ্গারোহণের পথ অজানাই ছিল পর্বতারোহীদের কাছে।

তবে, অজানা পথে আরোহণের প্রচেষ্টা ও সাফল্য অবশ্য রুদ্রপ্রসাদদের এই প্রথম নয়। দীর্ঘ ৪৪ বছরের খরা কাটিয়ে ২০২৩ সালে কাশ্মীরের কিস্তওয়ার জেলার ব্রহ্মা শৃঙ্গের (৬৪১৬ মিটার) শীর্ষ স্পর্শ করেছিল রুদ্রপ্রসাদের দলবল। গত বছর হিমাচলের অধরা গুপ্ত পর্বতে (৬১৫৯ মিটার) প্রথম আরোহণের নজির তৈরি করেছিল সোনারপুরের একটি পর্বতারোহণ ক্লাবের পক্ষ থেকে যাওয়া রুদ্রপ্রসাদ-সত্যরূপের এই দলবল। তবে, এ বারের অভিযানে কোনও শেরপা সঙ্গী না থাকায়অজানা পথে রুট খোলার গুরুদায়িত্বও ছিল এই অভিযাত্রীদেরই কাঁধে। তবে, মন্টো ৪-এর আশপাশে রয়েছে ছ’হাজারি মন্টোর আরও তিনটি শৃঙ্গ। তাই আবহাওয়া ভাল থাকলে এ বার সেই পথে এগোতে পারেন রুদ্রপ্রসাদেরা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Trekker adventure

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy