Advertisement
০২ মে ২০২৪
Private Buses

করোনাকালে বসে থাকা বেসরকারি বাসের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন, পরিবহণ দফতরের দ্বারস্থ মালিকেরা

বাস মালিক সংগঠনের দাবি, কোভিড সংক্রমণের সময় লকডাউনে দু’বছর যে বাসগুলি রাস্তায় চলাচল করেনি, বয়সের ভিত্তিতে সেই সব বাসের বাতিল দু’বছর করে পিছিয়ে দেওয়া হোক।

The application for extension of the period of private buses not running during the COVID period is in the transport department

করোনাকালে বেসরকারি বাস পরিষেবা ভেঙে পড়েছে বলেই অভিযোগ বাস মালিকদের সংগঠনগুলির। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০২৩ ১৩:৩৪
Share: Save:

করোনাকালে চলাচল না করা বেসরকারি বাসের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন জানানো হল পরিবহণ দফতরে। এই আবেদনটি জানিয়েছে জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেট। সোমবার তারা জোড়া দাবি সনদ জমা দিয়েছে পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর অফিসে। সেই দাবিপত্রের একটি অংশে বলা হয়েছে, যে বাসগুলি কোভিড-এর জন্য চলতে পারেনি তাদের বয়সের ভিত্তিতে বাতিল দু’বছর করে পিছিয়ে দেওয়া হোক। বেসরকারি বাস মালিক সংগঠনের যুক্তি, কোভিড সংক্রমণের সময় যে লকডাউন হয়েছিল তাতে ওই দু’বছর বাসগুলি রাস্তায় চলাচল করেনি। অথচ এমন অনেক বেসরকারি বাস রয়েছে যাদের মেয়াদ কাল ২০২৩-২৪ অর্থ বর্ষের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু ওই দু’বছর বেসরকারি বাস রাস্তায় চলাচল না করায় বাস মালিকদের আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়েছে, তা ছাড়া বাসগুলি ওই দু’বছর না কাজ করায় এখনই তা বাতিল করার জায়গায় নেই। সঙ্গে কোভিড সংক্রমণের ফলে যে আর্থিক ধাক্কা বেসরকারি বাস মালিকদের সহ্য করতে হয়েছে, তাতে নতুন বাস নামানো অনেকটাই আর্থিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন বাস মালিকেরা। তাই তাঁরা বসে থাকা বাসের মেয়াদ দু’বছর বাড়ানোর আর্জি জানিয়েছেন পরিবহণ দফতরের কাছে।

তবে পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, বেসরকারি বাস মালিকদের এমন দাবি মানা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ ২০০৯ সালের ৩১ জুলাই কলকাতা হাইকোর্ট এক নির্দেশে বলেছিল, কলকাতা মিউনিসিপাল এলাকায় ১৫ বছরের মেয়াদ উত্তীর্ণ গাড়ি চালানো যাবে না। সঙ্গে গ্রিন ট্রাইবুনালের রায়েও প্রায় একই কথা বলা হয়েছে। যার ফলে চলতি অর্থবর্ষে পরিবহণ দফতরের ১১ হাজার গাড়ি বাতিল হতে চলেছে। বেসরকারি বাস সংগঠনের ওই দাবি মেনে নেওয়ার অর্থ কলকাতা হাইকোর্টের রায়কে উপেক্ষা বা অবমাননা করা। তা ছাড়া মেয়াদ উত্তীর্ণ বাসগুলিকে অতিরিক্ত সময় দেওয়ার কোনও নির্দিষ্ট আইন নেই পরিবহণ দফতরের কাছে। তাই ১৫ বছরের ঊর্ধ্বে বাসের সময়সীমা বাড়ানো কোনও ভাবেই সম্ভব নয় বলেই জানাচ্ছে পরিবহণ দফতরের একটি সূত্র।

তবে নিজেদের দাবির স্বপক্ষে জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের নেতা তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “২০১৮ সালের পর থেকে আর বাসভাড়া বাড়েনি। আর ২০২০ সালে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে বেসরকারি বাস মালিকদের কোমর ভেঙে গিয়েছে। আমরা তাই আমাদের দাবির স্বপক্ষে যুক্তি দেখিয়েই বাসের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন জানিয়েছি।” এ ক্ষেত্রে বেসরকারি বাস মালিকদের আরও যুক্তি, ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে পুরনো বাস বাতিল হয়ে গেলে তাদের আবার নতুন বাস রাস্তায় নামাতে হবে।

বর্তমানে একটি ডিজেল চালিত বাস রাস্তায় নামাতে গেলে তার মূল্য প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা। আর ইলেকট্রিক চালিত বাস কিনতে গেলে দাম পড়তে পারে ৬০-৬৫ লক্ষ। করোনা সংক্রমণে যে আর্থিক ধাক্কা বাস মালিকরা খেয়েছেন তাতে আগামী কয়েক বছরে এই ধরনের বড় বিনিয়োগ করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয় বলেই দাবি করেছেন মিনি বাস অপারেটর ইউনিয়নের নেতা স্বপন ঘোষ। তিনি বলেন, “বাসের মেয়াদ বৃদ্ধির যে দাবি তোলা হচ্ছে তা একেবারেই যুক্তিযুক্ত। ফিরহাদ হাকিম পরিবহনমন্ত্রী থাকাকালীন আমরা এই দাবি তাঁর কাছে রেখেছিলাম। তিনি বিষয়টি যথাসময়ে খতিয়ে দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। তবে এ ক্ষেত্রে বাস মালিকদের আবেদন হাইকোর্ট বা গ্রিন ট্রাইবুনাল শুনবে না। পরিবহন দফতর যদি নিজের ইচ্ছায় বিষয়টি নিয়ে তাদের কাছে দরবার করেন। তাহলে অবশ্যই আমরা বাস চালানোর জন্য অতিরিক্ত সময় পেতে পারি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Private Buses West Bengal Transport Department
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE