Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Mobile for Students

ট্যাবের অর্থ পেয়েও কত সংখ্যক ছাত্রছাত্রী উচ্চ মাধ্যমিকে বসবেন না, জানতে চাইল শিক্ষা দফতর

সম্প্রতি স্কুলগুলির কাছে একটি নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। সেই নির্দেশে বলা হয়েছে, ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে ট্যাব বা মোবাইল কেনার অর্থ পেয়েও কত সংখ্যক পড়ুয়া পরীক্ষায় বসছেন না তা জানাতে হবে।

‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে প্রশ্ন।

‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে প্রশ্ন। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৪ ১৩:২৬
Share: Save:

কোভিড সংক্রমণের সময় থেকে ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্প নাম দিয়ে রাজ্যের মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ছাত্রছাত্রীদের ট্যাব বা মোবাইল কেনার জন্য অর্থ দেওয়ার কাজ শুরু করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনাকাল কেটে গেলেও, রাজ্য সরকারের সেই প্রকল্প এখনও চলছে। এ বার সেই প্রকল্পে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে কত ছাত্রছাত্রী অর্থ পেয়েও পরীক্ষায় বসছেন না, তা জানতে উদ্যোগী হল শিক্ষা দফতর। সম্প্রতি উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে স্কুলগুলির কাছে একটি নির্দেশ পাঠানো হয়েছে, সেই নির্দেশে বলা হয়েছে, ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে ট্যাব বা মোবাইল কেনার অর্থ পেয়েও কত সংখ্যক ছাত্রছাত্রী এ বারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসছেন না তা নির্দিষ্ট ভাবে জানাতে হবে। নির্দেশের সঙ্গে স্কুলে একটি ফর্ম পাঠানো হয়েছে। সেই ফর্মে ছাত্রছাত্রীদের নির্দিষ্ট সংখ্যা লিখে তা শিক্ষা দফতরকে জানাতে হবে সংশ্লিষ্ট স্কুলকে।

করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে রাজ্যের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ব্যাহত হচ্ছিল পঠনপাঠন প্রক্রিয়া। ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে রাজ্য মন্ত্রিসভা ছাত্রছাত্রীদের ট্যাব বা মোবাইল কেনার জন্য ১০ হাজার টাকা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সে ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের যুক্তি ছিল, ছাত্রছাত্রীরা যাতে অনলাইনে সঠিক ভাবে পড়াশোনা করতে পারেন, সেই কারণেই এই অর্থ দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য সরকারি স্কুলগুলিতে বেশির ভাগ পড়াশোনা করেন গরিব এবং প্রান্তিক পরিবারের ছেলেমেয়েরা। তাঁদের পড়াশোনায় উৎসাহ দিতেই নতুন এই নীতি গ্রহণ করেছিল রাজ্য। কিন্তু শেষ কয়েক বছরে শিক্ষা দফতর প্রত্যক্ষ করেছে, ট্যাব বা মোবাইল কেনার অর্থ পাওয়ার পর বহু ছাত্রছাত্রী মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে বসছেন না। শিক্ষা দফতরের নজরে ওই পড়ুয়ারা স্কুলছুট হিসেবে গণ্য হচ্ছেন। গত বছর নভেম্বর মাসেই এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসা ছাত্রছাত্রীদের ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে অর্থ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ বার শিক্ষা দফতর জানতে চাইছে কত সংখ্যক পরীক্ষার্থী সেই অর্থ নিয়েও পরীক্ষা দিচ্ছেন না।

বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন বঙ্গীয় শিক্ষক এবং শিক্ষা কর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডলের দাবি, “করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের সময় সত্যি সত্যিই স্কুলে স্কুলে পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছিল। সেই সময় ছাত্রছাত্রীদের জন্য মোবাইল অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল। তাই সেই সময় সরকারি সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। কারণ, অনলাইনে পড়াশোনা করতে গেলে ট্যাব বা মোবাইল আবশ্যিক হয়ে পড়েছিল। কিন্তু এখন পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে। সব কিছুই অফলাইনে করা সম্ভব, তাই এ ভাবে স্কুলের কাছে হিসেব না চেয়ে বরং ছাত্রছাত্রীদের অর্থ দেওয়া বন্ধ হোক।” পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির কার্যকরী সভাপতি বিজন সরকার বলেন, “সব সময় শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়কে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে না দেখে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই দেখা উচিত বলে আমরা মনে করি। হয়তো ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্প একটি বিশেষ সময়ের মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছিল, কিন্তু আচমকা তা বন্ধ করে দেওয়া একেবারেই যুক্তিযুক্ত নয়। কোভিডের পরবর্তী সময়ে দেশ বা সারা বিশ্বের পড়াশোনা অনেক বেশি প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে গিয়েছে। কোনও গরিব এবং প্রান্তিক পরিবারের ছেলেমেয়ে, যাদের মোবাইল বা ট্যাব কেনার পয়সা নেই, তারা সরকারি অর্থে মোবাইল বা ট্যাব কিনে বড় পরীক্ষার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে পারবে। প্রযুক্তিই তাকে সেই জায়গা করে দেবে। বিষয়টিকে এ ভাবে দেখলেই ছাত্রছাত্রীদের জন্য প্রকল্পটি যুক্তিযুক্ত মনে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Tab mobile Students Higher Secondary
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE