শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের বকেয়া মেটানোর কাজ শুরু করল শিক্ষা দফতর। — ফাইল চিত্র।
সরকারি স্কুলের শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের বকেয়া মেটানোর কাজ শুরু করে দিল শিক্ষা দফতর।
স্কুলে নতুন কোনও শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মী কাজে যোগদানের পরে জেলা শিক্ষা আধিকারিকের (ডিআই) অফিস তাঁর যোগদান সংক্রান্ত কাগজপত্র তৈরির কাজে দেরি করলে তাঁর বেতন-সহ নানা ভাতা পেতে বিলম্ব হয়। এ ক্ষেত্রে যত দিন ওই শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীরা নিজেদের প্রাপ্য পাননি, সেই বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার কথা নির্দেশিকায় বলা হয়েছে। আবার কোনও শিক্ষক বদলি হলে, নতুন ডিআই তাঁর যোগদানের প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করলে, সে ক্ষেত্রেও বেতন-সহ ভাতা সংক্রান্ত পাওনা আটকে যায়। এমন কোনও বিষয় আটকে থাকলে, সেই বকেয়াও মিটিয়ে দিতে বলা হয়েছে।
সাধারণত শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীরা ১০ থেকে ২০ বছর অন্তর একটি বেতনবৃদ্ধির সুযোগ পান। কোনও কারণে সেই শিক্ষক বা শিক্ষাকর্মীরা ওই বেতনবৃদ্ধির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হলে, তাঁরা এ বার নিজের বকেয়া পেয়ে যাবেন। কোনও সহ-শিক্ষক প্রধানশিক্ষক পদে উন্নীত হলে তাঁর বেতনও বেড়ে যায়। দায়িত্ব নেওয়ার পরেও কোনও প্রধানশিক্ষকের বেতন বৃদ্ধি না হয়ে থাকলে এ বার সেই বকেয়াও পেয়ে যাবেন সহ-শিক্ষক থেকে প্রধানশিক্ষকের দায়িত্ব নেওয়া ব্যক্তি। সঠিক সময়ে বিএড না করার ফলে বেতন বৃদ্ধি আটকে রয়েছে প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষকের। নতুন এই নির্দেশিকার ফলে এই বিপুলসংখ্যক শিক্ষকেরা তাঁদের বকেয়া পেয়ে যাবেন। এই বকেয়া না পাওয়ার ফলে বেশ কিছু মামলাও হয়ে ছিল। কিন্তু নতুন এই নির্দেশিকার ফলে সেই আইনি ঝামেলাও মিটে যেতে পারে বলেই মনে করছেন বিকাশ ভবনের একাংশ আধিকারিক।
যে কোনও ধরনের পাওনা ডিআইয়ের অনুমোদিত মেমো স্বাক্ষর না করার ফলে যে সব বকেয়া আটকে ছিল, তা-ও এ বারের নির্দেশিকায় মিটিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তে খুশি শিক্ষকমহল। পশ্চিমবঙ্গ মাধ্যমিক তৃণমূল শিক্ষক সমিতির কার্যকরী সভাপতি বিজন সরকার শিক্ষা দফতরের এই নির্দেশিকাকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়ের সরকার অনেক ভাল ভাল কাজ করেছেন। চাইল্ড কেয়ার লিভে সবেতন ছুটি ৭৩০ দিন এবং ৪ ধরনের বদলির সুযোগ, আগে এই দুটির কোনওটিই ছিল না। অনলাইন পিএফ চালু করা হয়েছে। কন্যাশ্রীর মতো প্রকল্প চালু করার ফলে কম বয়সে মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার প্রবণতা কমেছে। স্কুলছুট কমেছে। নারী পাচারও কমেছে। মেয়েরা উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে পারছে। গরিব বাড়ির ছেলেমেয়েরা, টাকার অভাবে যারা পড়াশোনা করতে পারত না, আজ তাদের হাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড তুলে দিয়েছেন। তাই আজ কারও পড়াশোনা টাকার অভাবে বন্ধ হয়ে যায় না। মমতার সরকার মুখে বলে না, কাজে করে দেখায়।’’ তবে বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির দাবি, তাঁদের দাবির ফলেই শিক্ষা দফতর শিক্ষকদের বকেয়া মেটাতে রাজি হয়েছে। সংগঠনের নেতা স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘আমরা ফেব্রুয়ারি মাসেই শিক্ষা দফতরকে লিখিত আকারে শিক্ষকদের বকেয়া মেটানোর কথা বলেছিলাম। দেরিতে হলেও, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তে আমরা খুশি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy