Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Power Plant

দূষণ রোধে বিদ্যুৎকেন্দ্রে যন্ত্র বসেনি সাত বছরেও

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম আর কেন্দ্রীয় সরকারের এনটিপিসি এবং ডিভিসি এ রাজ্যে তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন করে। উৎপাদন করে বেসরকারি সংস্থাও।

পরিবেশবিদেরা জানান, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নির্গত গুঁড়ো ছাই এবং সালফার ডাই-অক্সাইড বাতাসে মিশলে বায়ুদূষণের মাত্রা বাড়ে।

পরিবেশবিদেরা জানান, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নির্গত গুঁড়ো ছাই এবং সালফার ডাই-অক্সাইড বাতাসে মিশলে বায়ুদূষণের মাত্রা বাড়ে। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:৫৪
Share: Save:

পশ্চিমবঙ্গে দূষণ নিয়ন্ত্রণে, বিশেষত বিভিন্ন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দূষণ রোধে অন্তহীন গড়িমসির ছবি ফুটে উঠেছে একটি গবেষণা সংস্থার সমীক্ষায়। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দূষণ ঠেকাতে সাত বছর আগে বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহারের (ফ্লুইড গ্যাস ডি-সালফারাইজ়েশন) নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক। একটি শক্তি ও পরিবেশ গবেষণা সংস্থার সাম্প্রতিক রিপোর্ট বলছে, বঙ্গের কোনও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রেই সেই প্রযুক্তি কার্যকর হয়নি অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট দূষণ রোধক যন্ত্র বসেনি। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু করার জন্য তিন বার সময় বাড়ানো হয়েছে। চলতি মাসেই তৃতীয় দফার সময়সীমা শেষ হবে। কিন্তু যা পরিস্থিতি, তাতে সেই সময়ের মধ্যে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে ওই প্রযুক্তি চালু হবে কি না, সংশয় আছে।

সমীক্ষক সংস্থা ‘সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার’ জানাচ্ছে, রাজ্যের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির মধ্যে ৪০ শতাংশ ওই বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য আদৌ উদ্যোগীই হয়নি। বাকি ৬০ শতাংশ উদ্যোগী হলেও এখনও ওই প্রযুক্তি প্রয়োগ করে উঠতে পারেনি।

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম আর কেন্দ্রীয় সরকারের এনটিপিসি এবং ডিভিসি এ রাজ্যে তাপবিদ্যুৎ উৎপাদন করে। উৎপাদন করে বেসরকারি সংস্থাও। কয়লা পুড়িয়ে সেই তাপশক্তিকে বিদ্যুতে পরিণত করে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র। সমীক্ষক সংস্থার তথ্য বলছে, গত সাত বছরে পশ্চিমবঙ্গে বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে ২৩ শতাংশ কয়লার ব্যবহার বেড়েছে। যার সূত্র ধরে পরিবেশবিদদের অনেকেই বলছেন, কয়লা বেশি পোড়ার অর্থ দূষণের মাত্রাও বেড়েছে। সেই দূষণ ঠেকাতেই ওই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে বলা হয়েছিল।

পরিবেশবিদেরা জানান, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নির্গত গুঁড়ো ছাই এবং সালফার ডাই-অক্সাইড বাতাসে মিশলে বায়ুদূষণের মাত্রা বাড়ে। এবং তার কুপ্রভাব পড়ে জনস্বাস্থ্যে। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র যে-হেতু বন্ধ করা যাবে না, তাই দূষণে রাশ টানতে ওই প্রযুক্তির কথা বলেছে কেন্দ্র। ওই প্রযুক্তির ফলে ৮৬ শতাংশ পর্যন্ত দূষণ কমানো সম্ভব বলে কেন্দ্রের দাবি।

অনেকেই বলছেন, বিদ্যুৎ বর্তমানে সমাজে অপরিহার্য এবং জরুরি পরিষেবা। তাই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি বিভিন্ন সময়ে নিয়ম ভাঙলেও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বা পরিবেশ দফতর তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে পারে না। এ বার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দূষণ ঠেকানোর বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার না-করলে কোনও রকম পদক্ষেপ করা হবে কি? “সময় তো এখনও শেষ হয়নি। সময়সীমা শেষ হলে তার পরে দেখব,” বলেন পরিবেশ দফতরের এক পদস্থ কর্তা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Power Plant Pollution
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE