E-Paper

অস্ত্র ভান্ডারের সঙ্গে ‘চিনা’ যোগ, সন্দেহ সিবিআইয়ের

প্রাথমিক ভাবে গোয়েন্দা-কর্তাদের অনুমান, বাংলাদেশ থেকে জলপথ বা স্থলপথে সীমান্ত পেরিয়ে ওই অস্ত্র এ দেশে আনা হয়। যে ভাবে অস্ত্র লুকিয়ে রাখা হয় তাও যথেষ্ট সন্দেহজনক।

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০২৪ ০৬:৫৪
সন্দেশখালি থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রশস্ত্র।

সন্দেশখালি থেকে উদ্ধার হওয়া অস্ত্রশস্ত্র। —ফাইল চিত্র।

শেখ শাহজাহানের ‘ডেরা’ থেকে শুক্রবার বিদেশি পিস্তল-সহ আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ, বোমা উদ্ধার করেছে সিবিআই। এ বার সেই আগ্নেয়াস্ত্রের সঙ্গে ‘চিনা’ যোগ আছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলছেন গোয়েন্দারা। সূত্রের দাবি, সন্দেশখালিতে শাহজান ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতার আত্মীয়ের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া বিদেশি পিস্তল এবং রিভলভারে চিনা ভাষায় প্রস্তুতকারক সংস্থার নাম ও সিরিয়াল নম্বর লেখা আছে। সেখান থেকেই এই সন্দেহ জোরালো হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে দেখে তদন্তকারীদের একাংশের দাবি, ওই পিস্তল এবং রিভলভার নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে থাকা নাইন এমএম পিস্তল এবং রুগার রিভলভারের সমকক্ষ। বিষয়টি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকেও জানানো হয়েছে। প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা কর্তারা এ ব্যাপারে সিবিআইয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

প্রাথমিক ভাবে গোয়েন্দা-কর্তাদের অনুমান, বাংলাদেশ থেকে জলপথ বা স্থলপথে সীমান্ত পেরিয়ে ওই অস্ত্র এ দেশে আনা হয়। যে ভাবে অস্ত্র লুকিয়ে রাখা হয় তাও যথেষ্ট সন্দেহজনক। তবে সীমান্ত পেরিয়ে অস্ত্র আমদানি করা হলেও কেন বিএসএফ তা টের পেল না সেই প্রশ্নও তুলেছেন কেউ কেউ।

এক সিবিআই অফিসার বলছেন, সাধারণত স্থানীয় দুষ্কৃতীরা বিহারের মুঙ্গেরে তৈরি ‘নকল’ ৯ এমএম অথবা ৭.২ এমএম পিস্তল ব্যবহার করে। এ ছাড়াও আছে ‘ওয়ান শটার’ বা দেশি পিস্তল। তাই এই অস্ত্র ভান্ডার স্থানীয় দুষ্কৃতীদের নয় বলেই সন্দেহ করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে কী কারণে এই অস্ত্র আনা হয়েছিল তা খতিয়ে দেখার প্রয়োজন আছে। এই ধরনের অস্ত্র আমদানি দেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও উদ্বেগজনক বলে ওই অফিসারের দাবি। প্রসঙ্গত, শাহজাহানের বিরুদ্ধে জনরোষ সামনে আসার পরে জঙ্গি সংশ্রবের অভিযোগও তুলেছিলেন কেউ কেউ। এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা সেই অভিযোগের সপক্ষে জোরালো প্রমাণ না পেলেও এই অস্ত্রের সূত্র ধরে জঙ্গি সংশ্রবের তদন্ত শুরু হবে কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে।

শাহজাহানের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তে নেমে সন্দেশখালির বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছে। সূত্রের খবর, সেই অনুসন্ধান পর্বেই ওই অস্ত্র ভান্ডারের খোঁজ মেলে। বাড়িটি আবু তালেব বলে এক ব্যক্তির। তিনি স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য হাফিজুলের ভগ্নিপতি। আবু তালেবের সঙ্গে বাংলাদেশের এবং গরু পাচারের যোগ আছে বলে এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ। তদন্তকারীদের একাংশের মতে, তালেবের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগ প্রমাণিত হলে জঙ্গি সংশ্রবের অভিযোগ আরও জোরালো হতে পারে। তালেবের বন্ধ থাকা ওই বাড়িতে শুক্রবার তল্লাশি চালানোর সময় কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়াও অস্ত্র এবং বিস্ফোরক অনুসন্ধানে এনএসজি-কে নিয়ে যাওয়া হয়। স্নিফার ডগের পাশাপাশি নামানো হয় রোবটও। দিনভর অভিযানের শেষে অস্ত্র, কার্তুজ এবং বোমা উদ্ধার করা হয়। এ ব্যাপারে জেল হেফাজতে থাকা শাহজাহান, তাঁর ভাই আলমগীর এবং বাকিদেরও জেরা করা হবে বলে সিবিআই সূত্রের দাবি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

sandeshkhali Shahjahan Sheikh TMC CBI

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy