Advertisement
E-Paper

বেআইনি বাজি নিয়ে ক্ষুব্ধ পরিবেশ আদালত

রাজ্যে হাজার হাজার বাজি কারখানা বেআইনি ভাবে চলছে, এই অভিযোগে মামলা গত দু’বছর যাবৎ চলছে জাতীয় পরিবেশ আদালতে। বাজি কারখানা তৈরির অনুমোদন কোন শর্তে, কী ভাবে দেওয়া হবে, কে বা কারা দেবে, কোথায় কারখানা তৈরি হবে, কোথায় যাবে না, এ সব উল্লেখ করে রাজ্যকে হলফনামা জমা দিতে বলেছিল আদালত।

সুরবেক বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:১০
গড়িয়াহাটে রবিবার। —নিজস্ব চিত্র।

গড়িয়াহাটে রবিবার। —নিজস্ব চিত্র।

একেই বাজির ধোঁয়া থেকে বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে রাজ্যের উদ্যোগ নেই। সুপ্রিম কোর্ট দিল্লিতে কার্যত বাজিহীন দেওয়ালি পালনের নির্দেশ দেওয়ার পরেও নয়। নিষিদ্ধ শব্দবাজির রমরমা তো আছেই। বেআইনি বাজি তথা বাজির বেআইনি কারখানা আটকানোর জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সদিচ্ছা আদৌ আছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল খোদ জাতীয় পরিবেশ আদালত। এই নিয়ে রাজ্যের ‘শিথিল’ ও ‘ঢিলেঢালা’ মনোভাবে পরিবেশ আদালত হতাশা ব্যক্ত করেছে। সেই সঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাজ্যকে।

রাজ্যে হাজার হাজার বাজি কারখানা বেআইনি ভাবে চলছে, এই অভিযোগে মামলা গত দু’বছর যাবৎ চলছে জাতীয় পরিবেশ আদালতে। বাজি কারখানা তৈরির অনুমোদন কোন শর্তে, কী ভাবে দেওয়া হবে, কে বা কারা দেবে, কোথায় কারখানা তৈরি হবে, কোথায় যাবে না, এ সব উল্লেখ করে রাজ্যকে হলফনামা জমা দিতে বলেছিল আদালত।

বার বার বলার পর ১১ অগস্ট রাজ্য যে হলফনামা পেশ করে, তাতে আদালত সন্তুষ্ট হয়নি। আদালতের মনে হয়েছে, সেটা দায়সারা। ২১ সেপ্টেম্বর শুনানিতে বিচারপতি এসপি ওয়াংদি এবং বিশেষজ্ঞ সদস্য পিসি মিশ্রকে নিয়ে গড়া জাতীয় পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চলীয় বেঞ্চ তীব্র ভর্ৎসনা করে রাজ্যকে। তাঁরা বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশের পরেও রাজ্যের পদক্ষেপে আমরা হতাশ। সরকারের শিথিল, ঢিলেঢালা মনোভাব আদালতের নির্দেশের প্রতি তাচ্ছিল্য ও উদাসীনতার প্রতিফলন।’’ রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে পরিবেশ আদালত বলে, ‘‘এটা আমাদের নির্দেশ অমান্য করার অপরাধের সমান। ২০১০-এর জাতীয় পরিবেশ আদালত আইন অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া যেত।’’ আদালতের কথায়, ‘‘এখনও আমরা নিজেদের ওই চরম পদক্ষেপ করা থেকে বিরত রাখছি।’’ রাজ্যকে আর একটা সুযোগ দেওয়া হলো বলে জাতীয় পরিবেশ আদালত জানিয়েছে। পরবর্তী শুনানি ৭ নভেম্বর।

মামলা যিনি করেন, সেই পরিবেশকর্মী বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, এই উদাসীনতায় বেআইনি বাজি প্রস্তুতকারকেরা উৎসাহ পান আর সৎ ভাবে যাঁরা ব্যবসা করছেন, তাঁরা নিরুৎসাহ হয়ে পড়ছেন। দীর্ঘতর হচ্ছে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণে মৃত্যুর মিছিল। বিশ্বজিৎবাবুর কথায়, ‘‘২০০৯ থেকে এখনও পর্যন্ত বহু বেআইনি বাজির কারখানায় বিস্ফোরণ বা আগুন লেগে ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত ৭৩ জন। মৃতদের একাংশ শিশু শ্রমিক।’’

বাজি ব্যবসায়ীদের একাংশ হিসেব দিচ্ছেন, রাজ্যে বাজি কারখানার সংখ্যা ৩০ হাজারের বেশি। বিশ্বজিৎবাবুর দাবি, এর মধ্যে খুব বেশি হলে ১৫টি বৈধ। পরিবেশকর্মী নব দত্তর কথায়, ‘‘কারখানা বেআইনি হলে তাতে তৈরি বাজিও বেআইনি, তার বিক্রি ও ব্যবহারও বেআইনি। এর ভিত্তিতেই রাজ্যে সব রকম বাজির উপর নিষেধাজ্ঞা আনা যায়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের সম্ভবত দরকার নেই।’’

Illegal Firecrackers National Environment Court শব্দবাজি পরিবেশ আদালত
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy