E-Paper

দুষ্কৃতীদের মুঠোয় রাখতেই কি সাহায্য নেপালির

অস্ত্র ভাড়া দিয়ে, এমনকি দুষ্কৃতীদেরও নিজের বাড়িতে ভাড়া থাকার ব্যবস্থা করে নিজেকে তাদের কাছে ভরসাযোগ্য করে তুলছিল নেপালি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২৫ ০৯:০৪
পানিহাটির এই বাড়ি থেকেই উদ্ধার করা হয়েছে অস্ত্র।

পানিহাটির এই বাড়ি থেকেই উদ্ধার করা হয়েছে অস্ত্র। —নিজস্ব চিত্র।

শুধু অস্ত্র ভাড়া দেওয়াই নয়। বরং, দুষ্কৃতীরা যাতে গা-ঢাকা দিতে পারে, সেই বন্দোবস্ত করে দেওয়ার অভিযোগও উঠতে শুরু করেছে পানিহাটিতে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র ভান্ডারের মালিক নেপালি ওরফে নইম আনসারির বিরুদ্ধে। কিন্তু শুধুই কি তাই? বিভিন্ন সূত্রের দাবি, নিজে বড় কোনও অপরাধমূলক কাজে সরাসরি জড়িত না থাকলেও দুষ্কৃতী-সাম্রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ হাতে রাখাই ছিল নেপালির মূল লক্ষ্য। সেই কারণে অস্ত্র ভাড়া দিয়ে, এমনকি দুষ্কৃতীদেরও নিজের বাড়িতে ভাড়া থাকার ব্যবস্থা করে নিজেকে তাদের কাছে ভরসাযোগ্য করে তুলছিল নেপালি। এই সব বিষয়ই এখন আতশকাচের নীচে রেখেছে পুলিশ।

বছর সাতান্নর ওই দুষ্কৃতীকে এলাকাবাসী এবং বাইরের লোকজন সকলেই চিনতেন ‘নেপালি’ নামে। গত সোমবার আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র উদ্ধারের পরে মঙ্গলবার সকালে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এর পরেই প্রকাশ্যে আসে, নেপালির আসল নাম নইম আনসারি। সূত্রের খবর, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে পানিহাটির মৌলানা সেলিম রোডে থাকে নেপালি। তবে তার বাড়ি আদতে কামারহাটির সীমানা এলাকায় হলেও ওই পুর এলাকায় খুব একটা ঘেঁষত না সে।

প্রথমে নেপালি লোহার ছাঁটের ব্যবসা করত। তখন থেকেই কম-বেশি দুষ্কৃতীদের সঙ্গে তার ওঠাবসার শুরু। সূত্রের খবর, পরবর্তী সময়ে শাসকদলের স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে ওঠাবসা শুরু হয় নেপালির। তখন থেকে পুরোপুরি ভাবে দুষ্কৃতীদের নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠার চেষ্টা শুরু করে সে।

বাড়িতে দুষ্কৃতীদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে বছর কয়েক আগে স্থানীয়দের হাতে আক্রান্তও হয়েছিল নেপালি। তার পরে কিছু দিন চুপ থাকলেও ফের দুষ্কৃতীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে শুরু করে। পাশাপাশি, শুরু করেছিল গাড়ি ভাড়ার ব্যবসা। নিজের ‘ক্ষমতা’ জাহির করতে মোটা টাকার বিনিময়ে সে অস্ত্র ভাড়া দেওয়ার কারবারও চালাত বলে খবর। সূত্রের দাবি, প্রথমে মোট টাকা অগ্রিম নেওয়া হত। কাজ শেষে অস্ত্র ফেরত দেওয়ার সময়ে বাকি টাকা দিতে হত।

পুলিশ সূত্রের খবর, জেরায় নেপালি দাবি করেছে, চারটি বড় দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, কার্তুজ, চপার, তলোয়ার, কুঠার— সবই তার ভাই রাজার। বছর পনেরো আগে বোমা বিস্ফোরণে রাজা মারা গেলেও নেপালি ওই অস্ত্রগুলি রেখে দিয়েছিল এবং সেগুলি মাঝেমধ্যে পালিশ করত। তদন্তকারীদের অনুমান, সেই কারণে এত বছর পরেও ওই সব অস্ত্র চকচকে রয়েছে। কিন্তু শুধু কি তা-ই, নাকি নেপথ্যে অন্য কিছু রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। কারণ, চারটি আগ্নেয়াস্ত্রর মধ্যে তিনটি এখনও সক্রিয়।

সূত্রের খবর, সোমবার নেপালির বাড়িতে তল্লাশি চলাকালীন সে স্থানীয় এক নেতার কার্যালয়ে বসে ছিল। অস্ত্র উদ্ধারের খবর পেতেই গা-ঢাকা দেয়। ব্যারাকপুরের নগরপাল অজয় ঠাকুর বলেন, ‘‘ধৃতকে দফায় দফায় জেরা করা হচ্ছে। অস্ত্র ও বাড়ি ভাড়া দেওয়া এবং ভাইয়ের অস্ত্র নিজের কাছে রাখার তথ্যও যাচাই করা হচ্ছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Fire Arms police investigation

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy