Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Duttapukur Blast

দত্তপুকুরের বাজি কি যেত চোরাশিকারে

দত্তপুকুরের মোচপোলের এক বাজি ব্যবসায়ীর দাবি, এই কারখানায় যে সব পটকা বা বাজি তৈরি হত, তার একটা বড় অংশ ‘আছাড় বোমা’, স্থানীয় ভাষায় যাকে আলু বাজি বলা হয়।

বিস্ফোরণের পর দত্তপুকুরের সেই বাড়ি। যার ভিতরে চলত বাজি বানানোর কাজ। —ফাইল চিত্র।

বিস্ফোরণের পর দত্তপুকুরের সেই বাড়ি। যার ভিতরে চলত বাজি বানানোর কাজ। —ফাইল চিত্র।

ঋষি চক্রবর্তী
দত্তপুকুর শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২৩ ০৬:০৯
Share: Save:

কী ধরনের পটকা তৈরি হত দত্তপুকুরের কারখানায়? সে সব কিনতই বা কারা?

গোয়েন্দাদের একটি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, এই কারখানায় ‘লো ইনটেনসিটি এক্সপ্লোসিভ’ বা কম ক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরক তৈরি হত। প্রাথমিক ভাবে একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, এখানে তৈরি পটকার একটি বড় অংশ লাগানো হত চোরাশিকারের কাজে। যে ভাবে জঙ্গলে হাতি তাড়াতে বনকর্মীরা বাজি বা পটকা ফাটান, তেমনই চোরাশিকারি ও কাঠচোরেরা এই পটকা বা বাজি ব্যবহার করত তাদের ‘কাজে’। সূত্রের আরও দাবি, এই কাজের জন্য দত্তপুকুরের বাজি যেত উত্তরবঙ্গের বড় অংশে। কিছুটা সম্ভবত জঙ্গলমহল ও সুন্দরবনেও যেত। তার সঙ্গে অসম, ত্রিপুরা, বিহার, ছত্তীসগঢ়, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, কেরল ও মধ্যপ্রদেশেও
যেত এই বাজি।

দত্তপুকুরের মোচপোলের এক বাজি ব্যবসায়ীর দাবি, এই কারখানায় যে সব পটকা বা বাজি তৈরি হত, তার একটা বড় অংশ ‘আছাড় বোমা’, স্থানীয় ভাষায় যাকে আলু বাজি বলা হয়। এই বাজি ছুড়ে মারলে বিকট শব্দে ফাটে। প্রচুর ধোঁয়া বেরোয়। বন দফতরের একটি অংশের দাবি, হাতি তাড়াতে কিছু ক্ষেত্রে এই ধরনের বাজি ফাটানো হয়। ওই বাজি ব্যবসায়ীর দাবি, এই বাজি কেনে চোরাশিকারি এবং জঙ্গলের চোরাকারবারিরা।

ওই বাজি ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘রকেট, চকোলেট বোমা, কালীপটকা, তুবড়ি যায় উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, ছত্তীসগঢ় ও ঝাড়খণ্ডে। বিয়ে ও পুজোয় সেখানকার বাসিন্দারা এই বাজি ব্যবহার করেন। তবে মূল কারবারটা আছাড় বোমার। যা আনন্দ-উৎসবে ফাটানো হয় না।’’

অসম-বাংলা সীমানায় এক চোরাই কাঠ ব্যবসায়ীর দাবি, জঙ্গলে যারা পশু শিকারে বা কাঠ কাটতে যায়, তারা এই বাজি সঙ্গে রাখে। এই পটকা ফাটালে বন্যপ্রাণীরা আর কাছে ঘেঁষে না। বন দফতর সূত্রের খবর, চোরাশিকারিরাও ‘আছাড় বোমা’ ব্যবহার করে।

হাতি বিশেষজ্ঞ পার্বতী বড়ুয়া অবশ্য উত্তরবঙ্গে আছাড় বোমার ব্যবহার কম হয় বলেই জানান। তাঁর কথায়, “কয়েক দশক ধরে পশ্চিমবঙ্গ এবং অসমের বন দফতরকে চকলেট বোমাই ব্যবহার করতেই দেখেছি। ওটাই হাতি তাড়ানোর জন্য সেরা।” তবে জলপাইগুড়ির বন দফতর সূত্রে বলা হচ্ছে, জঙ্গল লাগোয়া লোকালয়ের বাসিন্দারা নিজেরাই ফসল, বাড়ি
রক্ষা করতে পটকা কেনেন। সেগুলি মূলত কালোবাজারের মাধ্যমেই দক্ষিণবঙ্গ থেকে আসে।

সহ-প্রতিবেদন: অনির্বাণ রায়, জলপাইগুড়ি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Duttapukur Blast Duttapukur Blast
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE