পড়াশোনায় ডুবে থাকলেও মনের জানলা খোলা রেখেছিল এ বছরের কৃতী পরীক্ষার্থীরা। তাই আর জি কর-কাণ্ড থেকে পহেলগামের হামলা, ব্যথিত করেছে ওদের। সকলেরই সাফ কথা, সমাজে যারা ঘৃণা ছড়ায়, তারা ওদের বন্ধু নয়।
রানিকুঠির বাসিন্দা, ফিউচার ফাউন্ডেশন স্কুলের ছাত্রী সৃজনী আইএসসি-তে সমস্ত বিষয়ে ১০০ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করেছে। এতটা আশা না করলেও এর কাছাকাছি পাওয়ার কথা ভেবেছিল সে। সৃজনী পদবি ব্যবহার করে না। বিজ্ঞানের এই ছাত্রী ভবিষ্যতে গণিত বা পদার্থবিদ্যা নিয়ে গবেষণা করতে চায়। সৃজনীর মতে, পাঠ্যবই খুঁটিয়ে পড়লে ভাল নম্বর পেতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়।
তার মা গোপা মুখোপাধ্যায় বললেন, “মেয়ে শুধু পড়াশোনাই করে না, বাইরের জগতের অনেক খবরাখবরও রাখে। তা নিয়ে সুস্পষ্ট মতামতও আছে ওর। এটা দেখে খুব ভাল লাগে। আমার মেয়ে আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে মিছিলেও হেঁটেছে। রাত দখলের জমায়েতে গিয়ে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগানও দিয়েছে। সেই সঙ্গে পড়াশোনাটাও চালিয়ে গিয়েছে।’’ খবরের কাগজ পড়া এবং খবর শোনাও নিয়মিত অভ্যাস সৃজনীর। সম্প্রতি কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার পরে চতুর্দিকে যে ঘৃণার আবহ তৈরি হয়েছে, তা কোনও মতেই মানতে পারছে না এই ছাত্রী। সমাজমাধ্যমে এ নিয়ে লিখেছে সে।
ডিপিএস, নিউ টাউনের ছাত্রী সোহেলা ঘোষ আইএসসি-তে ৯৯.৭৫ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। তার বিষয় ছিল হিউম্যানিটিজ়। এর পরে সে ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়তে চায়। সাম্প্রতিক অনেক ঘটনা সোহেলাকেও নাড়া দিয়েছে। যেমন, সে যখন দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী, তখনই ঘটেছিল আর জি কর-কাণ্ড। সোহেলা বলল, ‘‘আর জি করের ঘটনার পরে আমাদের ভিআইপি রোডের বাগুইআটি এলাকায় যতগুলি মোমবাতি মিছিল হয়েছে, প্রায় সব ক’টিতেই আমি হেঁটেছি। ওই ঘটনার বিচার চেয়ে সরব হয়েছি।’’ তার মতে, পাঠ্যবই ভাল ভাবে পড়লে এবং অনুশীলন করলে, ভাল নম্বর উঠবেই। আইএসসি-তে বাঁশদ্রোণীর দে পল স্কুলের শ্রেয়সী বিশ্বাস এবং সাউথ সিটি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের আরুশি খেতাওয়াত পেয়েছে ৯৯.৭৫ শতাংশ।
অন্য দিকে, আইসিএসই-তে পাঁচশোয় পাঁচশো পেয়েছে ডিপিএস মেগাসিটির দেবোত্রি মজুমদার। বেস্ট অব ফাইভের প্রতিটি বিষয়েই ১০০ পেয়েছে সে। ভবিষ্যতে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে চায় দেবোত্রি। পড়াশোনার পাশাপাশি গান গায় সে। সাম্প্রতিক বেশ কিছু ঘটনা তাকেও নাড়া দিয়েছে। আইসিএসই-তে সেন্ট জেমস স্কুলের শ্রেষ্ঠ চান্ডগোটিয়া পেয়েছে ৯৯.৮ শতাংশ। রামমোহন মিশন স্কুলের সৌরীশ চক্রবর্তী ও মৈনাক বসু পেয়েছে ৯৯.২ শতাংশ নম্বর।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)