Advertisement
E-Paper

জমির সমস্যায় বিকল্প ভাবনায় রাস্তা-সেতু

প্রথম পর্যায়ে চারটি নতুন সেতুর প্রস্তাব চূড়ান্ত হয়েছে। এক পূর্তকর্তা জানান, বর্ধমানের কালনায় গঙ্গার উপরে একটি সেতু তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। এটি তৈরি হলে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে কালনা যাওয়া সহজ হবে।

সোমনাথ চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৭ ১১:৪০
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

জমির সমস্যায় থমকে যাচ্ছে উন্নয়ন। নবান্নে কান পাতলেই শোনা যায় আফসোস— একটা পিলার বসানোর জন্য যে সামান্য জমি প্রয়োজন, অনেক ক্ষেত্রে তা-ও পাওয়া যাচ্ছে না। প্রকল্প আটকে থাকছে বছরের পর বছর। অবস্থা বেগতিক বুঝেই গ্রাম বাংলায় যোগাযোগ পরিকাঠামো বাড়াতে এ বার রাস্তা ও সেতু তৈরির বিকল্প পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার। আগামী বছর পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই কাজ পুরোদমে শুরু করে দিতে চাইছে পূর্ত ও সড়ক দফতর।

কী সেই পরিকল্পনা?

পূর্তকর্তারা জানাচ্ছেন, গৃহীত নীতি মেনে গৃহস্থের জমিতে হাত দেবে না সরকার। রাস্তার জন্য জবরদখলহীন সরকারি জমিকে কাজে লাগানোর চেষ্টা হবে। জমির উপরে সেতু বা উড়ালপুল তৈরি আপাতত সম্ভব নয়। তাই যে সব সেতু তৈরি হবে, সবই হবে নদীর উপরে। কোন জেলার, কোন ব্লকে রাস্তা করলে আখেরে দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার সুযোগ তৈরি হবে— তার একটি প্রাথমিক তালিকা তৈরি করেছে পূর্ত দফতর। রাস্তাগুলি হবে মূলত ‘অ্যাপ্রোচ রোড’ ধরনের। কোথাও কোথাও রাস্তা সম্প্রসারণ করেও সড়ক যোগাযোগ তৈরি হবে।

প্রথম পর্যায়ে চারটি নতুন সেতুর প্রস্তাব চূড়ান্ত হয়েছে। এক পূর্তকর্তা জানান, বর্ধমানের কালনায় গঙ্গার উপরে একটি সেতু তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। এটি তৈরি হলে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে কালনা যাওয়া সহজ হবে।

একই ভাবে বীরভূমের জয়দেব থেকে কেঁদুলি যাওয়ার জন্য অজয় নদীর উপরে সেতু তৈরি হবে। বাঁকুড়ায় কংসাবতী নদীর উপরে একটি সেতু তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে। এর ফলে চার নম্বর রাজ্য সড়কের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি হবে।

আবার, উত্তর ২৪ পরগনার দুলদুলি থেকে হিঙ্গলগঞ্জ যাওয়ার জন্য সাহেবখালি নদীর উপর সেতু তৈরির প্রস্তাব রয়েছে। ৫০০ মিটার লম্বা এই সেতু তৈরি হলে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে হিঙ্গলগঞ্জ সহজেই জুড়ে যাবে বলে দাবি পূর্তকর্তাদের। এর বাইরেও বাংলাদেশ সীমান্ত-সংলগ্ন এলাকার রাস্তা উন্নত করার পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য। ওই পূর্তকর্তা জানান, হাসনাবাদ যাওয়ার জন্য কাটাখালি নদীর উপরে একটি সেতু তৈরি করা হচ্ছে। ৬০০ মিটার লম্বা এই সেতুর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।

কোন প্রযুক্তিতে এই সেতু হবে? এর নির্মাণ কারা করবে?

পূর্তকর্তারা জানান, পণ্যবাহী যান চলাচলের কথা মাথায় রেখে নদীর উপরে ইদানীং যে সেতু তৈরি হয়, তা দু’দিকের কেব‌্ল (মোটা তার) থেকে ঝুলে থাকে। এই প্রযুক্তি আধুনিক, যেমন দ্বিতীয় হুগলি সেতু বা নিবেদিতা সেতু নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে এই যে সেতুগুলি তৈরি করা হবে, সেগুলির এত ভার বহনের ক্ষমতা না থাকলেও চলবে। তাই এই ধরনের সেতু তৈরিতে জলের নীচ থেকেই পিলার তোলা হবে। তার উপরে বিছিয়ে দেওয়া হবে কংক্রিটের চাদর। এই প্রযুক্তি মেনেই মালদহে মহানন্দার উপরে সেতু তৈরি হচ্ছে। অতীতেও হয়েছে। পূর্তকর্তাদের দাবি, আইআইটি খড়্গপুরের বিশেষজ্ঞদের দিয়ে নকশা অনুমোদন করিয়ে সেতু নির্মাণ করবে দফতরই। সেই অভিজ্ঞতা তাদের রয়েছে।

রাস্তা ও সেতু যেখানে হবে, সেই সব এলাকায় গিয়ে পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা খরচের প্রাথমিক হিসেব-নিকেশ করেছেন। মাটি পরীক্ষার পরে নকশা তৈরির কাজ শুরু হবে শীঘ্রই। প্রশাসনের দাবি, সব মিলিয়ে প্রায় ১০০০ কোটি টাকার বাজেট। এই কাজে কেন্দ্রের টাকা পাওয়া যাবে বলে দাবি পূর্ত দফতরের।

West Bengal State Government Bridge Transportation সেতু
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy