প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বছর ঘুরে ফের দুর্গাপুজো দোরগোড়ায়।
এক বছর দু’মাস বেতন পাচ্ছেন না রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগমের পূর্ব বর্ধমানের যমুনাদিঘী মৎস্য প্রকল্পের দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মীরা। কেবল যমুনাদিঘীই নয়, নিগমের অধীনে রাজ্যের বেশির ভাগ মৎস্য প্রকল্পের প্রায় চারশো জন অস্থায়ী কর্মী কেউ পাঁচ মাস, কেউ বা সাত মাস ধরে বেতন না পাওয়ায় চরম অনটনে দিন কাটাচ্ছেন।
অথচ নিয়মিত কাজ করে চলেছেন তাঁরা। কেন করছেন কাজ? উত্তরে জানাচ্ছে, তাঁদের আশা, সরকার নিশ্চয়ই টাকা মিটিয়ে দেবে। তাঁদের প্রশ্ন, পুজোয় রাজ্যের ক্লাবগুলোকে ৭০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার টাকা থাকলে তাঁদের কেন দেওয়া হচ্ছে না? কী করে চলছে সংসার? উত্তরে জানাচ্ছেন, ধার করে, লোকের কাছে চেয়েচিন্তে চলছে।
পূর্ব বর্ধমানের যমুনীদিঘীতে ২৫ হেক্টর জলাশয়ে মাছ চাষ হয়। এ ছাড়াও এখানে অতিথিনিবাস রয়েছে। যমুনাদিঘীতে কর্মরত ৫৩ জন অস্থায়ী কর্মী এক বছরের বেশি সময় ধরে বেতন ছাড়াই কাজ করে চলেছেন। এক কর্মীর কথায়, ‘‘ধারদেনা করে সংসার চলছে। গত বছরের দুর্গাপুজো থেকে বেতন, পুজোর বোনাস সবই বন্ধ। বাড়ির সম্পত্তি বন্ধক রেখে, ধারদেনা করে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ছে। পুজোর আগে আমাদের বকেয়া বেতন মিটিয়ে দিলে ভাল হয়।’’
প্রায় একই অবস্থা পূর্ব বর্ধমানের মেমারি, পূর্ব মেদিনীপুরের দীঘা, শঙ্করপুর, আলমপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফ্রেজারগঞ্জ, বাঁকুড়া, কলকাতার গোলতলার মৎস্যপ্রকল্পের। বিভিন্ন জেলায় মাছচাষের প্রকল্পগুলিতে বর্তমানে স্থায়ী কর্মীর সংখ্যা কমে এসেছে। দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মীদের উপরে ভরসা করে এই সমস্ত প্রকল্পে মাছ চাষ হয়ে থাকে। টাকা না-পেয়ে কমবেশি সকলেই ফুঁসছেন।
রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগমের শাসকদলের কর্মচারী সংগঠনেরই সভাপতি নারায়ণচন্দ্র মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘বকেয়া বেতন মিটিয়ে দিতে আমরা মন্ত্রীকে বারবার বলা সত্ত্বেও কাজ হচ্ছে না। এ বার ভুক্তভোগী কর্মীদের নিয়ে জঙ্গি আন্দোলনে নামতেই হবে।’’
রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের অভিযোগ, ‘‘ক্লাবগুলো দুর্গাপুজো উপলক্ষে ৭০ হাজার টাকা তো পাচ্ছে। তা হলেই হবে। এই সরকার ফুর্তিতে আছে, উচ্ছ্বাসে আছে। খেলা, মেলা, উৎসব আর অনুদানে আছে। এই রাজ্যে শ্রমের মূল্য নেই। শ্রমিকের মর্যাদা নেই। সৎ পথে উপার্জনের সুযোগ নেই। এই নিয়েও কি সরকারের মন্ত্রীরা কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কথা বলবেন?’’
বেতন কেন মিলছে না, সে বিষয়ে মৎস্য দফতরের সচিব অবনীন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, ‘‘যা বলার মন্ত্রী বলবেন।’’ একাধিক বার ফোন ও মেসেজ করা হলেও উত্তর মেলেনি মন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরীর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy