Advertisement
E-Paper

পশ্চিমবঙ্গেও প্রভাব, বাতিল তিরিশ খনি

কয়লাখনি বণ্টন নিয়ে শীর্ষ আদালতের সিদ্ধান্তে যে রাজ্যগুলিতে সব থেকে বেশি প্রভাব পড়বে, তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ অন্যতম। বাতিল হওয়া ২১৪টির মধ্যে রাজ্যের মোট ৩০টি কয়লাখনি রয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট কী রায় দেয়, তার জন্য রাজ্যের সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যুৎ সংস্থার কর্তারা রুদ্ধশ্বাসে অপেক্ষা করছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:২৫

কয়লাখনি বণ্টন নিয়ে শীর্ষ আদালতের সিদ্ধান্তে যে রাজ্যগুলিতে সব থেকে বেশি প্রভাব পড়বে, তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ অন্যতম। বাতিল হওয়া ২১৪টির মধ্যে রাজ্যের মোট ৩০টি কয়লাখনি রয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট কী রায় দেয়, তার জন্য রাজ্যের সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যুৎ সংস্থার কর্তারা রুদ্ধশ্বাসে অপেক্ষা করছিলেন। কারণ ওই খনিগুলির কয়লা থেকেই রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম, সিইএসসি, ডিভিসি-র মতো সংস্থাগুলি তাপ বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। তাদের প্রয়োজনীয় কয়লার তিন ভাগের এক ভাগই আসে এই সব কয়লাখনি থেকে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের ফলে তাদের কয়লা জোগানে ঘাটতি দেখা দিলে, আগামী দিনে বিদ্যুৎ উৎপাদনেও সমস্যা তৈরি হবে কি না, সেই প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।

১৯৯৩ থেকে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলির নিজস্ব প্রয়োজনে কয়লাখনি বণ্টন করা শুরু হয়। প্রথম যে কয়লাখনিগুলি বণ্টন হয়েছিল, তার মধ্যেও পশ্চিমবঙ্গের কয়লাখনি ছিল। কয়লা মন্ত্রকের হিসেব বলছে, ১৯৯৩ সালে আসানসোলের কাছের সরিষাথালিতে প্রথম যে কয়লাখনি বণ্টন হয়, তা আরপিজি-গোষ্ঠীর সিইএসসি-কে দেওয়া হয়েছিল। সিইএসসি-র তাপ বিদ্যুৎ কারখানার অর্ধেক কয়লাই আসে ওই খনি থেকে। ওই খনি বণ্টন বাতিল হলে তার প্রভাব কী পড়বে, তা নিয়ে অবশ্য আরপিজি-গোষ্ঠীর মুখপাত্র কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

সরকারি-বেসরকারি সংস্থার নিজস্ব প্রয়োজনে বিলি হওয়া কয়লা খনিগুলির মধ্যে যেখানে প্রথম উৎপাদন শুরু হয়, সেটিও পশ্চিমবঙ্গে। রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমকে দেওয়া আসানসোলের জামুরিয়ায় তারা ইস্ট ও ওয়েস্ট খনিতে প্রথম কয়লা উৎপাদন শুরু হয় ১৯৯৮ সালে। বাতিলের তালিকায় সেটিও রয়েছে। এ ছাড়াও গঙ্গারামচক, গঙ্গারামক-ভাদুলিয়া, বড়জোর, ঝাড়খণ্ডে নিগমেরই খনি পাচোয়ারা (উত্তর) খনিগুলিও বাতিল হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পাচোয়ারা খনিটি থেকে গত বছরই খননের কাজ শুরু করেছে নিগম। তবে প্রশাসন সূত্রে খবর, বাতিলের তালিকায় বীরভূমের দেওচা-পাঁচামি নামে নতুন খনিটি নেই। কারণ বেআইনি ভাবে বণ্টন করা হয়েছে বলে যে ২১৮টি খনির তালিকা

তৈরি করা হয়েছিল, তাতে দেওচার নাম ছিল না। রাজ্যের বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থার কর্তাদের বক্তব্য, তাদের প্রয়োজনের ৩০ শতাংশ কয়লাই আসে নিজস্ব কয়লা খনিগুলি থেকে। বাকি কয়লার জোগান দেয় কোল ইন্ডিয়া। ডিভিসি-র প্রয়োজনের ১০ শতাংশ কয়লা আসে তাদের খনি থেকে।

কয়লাখনি বণ্টন দুর্নীতিতে সিবিআই তদন্ত করছে। পশ্চিমবঙ্গের কয়লা খনি বণ্টনের ক্ষেত্রেও তদন্ত করা হচ্ছে। আজ সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, খনি বণ্টন বাতিল হয়ে গেলেও সিবিআই নিজের তদন্ত চালিয়ে যাবে। কয়লাখনিগুলি বন্টন হয়েছিল বাম জমানায়। সিপিএম নেতৃত্বের বক্তব্য, রাজ্যে শিল্প ও বিনিয়োগ টানতে তারা রাজ্যের সংস্থার হাতে কয়লাখনিগুলি তুলে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। যাতে শিল্প সংস্থাগুলির জন্য প্রয়োজন মতো খনি বণ্টন করা সম্ভব হয়। সেই হিসেবে ছয়টি কয়লাখনি রাজ্য সরকারের মিনারেল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ট্রেডিং কর্পোরেশনকে দেওয়া হয়। এগুলিতে প্রায় ১৩০০ মিলিয়ন টন কয়লা মজুত ছিল। এর মধ্যে জিন্দাল গোষ্ঠীর ইস্পাত কারখানার জন্য খনি বণ্টন করা হয়। রেশমি মেটালিকস, জয় বালাজি, আধুনিক স্টিল, রামস্বরূপ স্টিলের মতো সংস্থাকেও খনি বণ্টন করা হয়েছিল। সিবিআই এই কয়লাখনিগুলি বণ্টনের ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে।

খনিগুলি বাতিলের তালিকায় চলে যাওয়ায় এর ফলে কী পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যুৎ উৎপাদনের কোনও সমস্যা হতে পারে? পশ্চিমবঙ্গের এক বিদ্যুৎ কর্তা জানাচ্ছেন, এখনই বিদ্যুৎ উৎপাদনে কোনও প্রভাব পড়বে না। আগামী ছয় মাস ওই খনিগুলি থেকে কয়লা তোলা যাবে। তার পর যদি কোনও খনি থেকে কয়লা না পাওয়া যায়, তখন কিছু সমস্যা হতে পারে।

coalgate coal block cancellation latest news online news
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy