Advertisement
E-Paper

অধরা শেখ সইফুল কাঁকসায় খুনে ধৃত তিন জন

বিজেপি কর্মী সন্দীপ ঘোষ (২২) খুনের ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত শেখ সইফুল এখনও অধরা। বিজেপি-র অভিযোগ, শাসক দলের ঘনিষ্ঠ, এলাকায় বালি মাফিয়া বলে পরিচিত সইফুলকে গ্রেফতার না করে পালানোর ব্যবস্থা করে দিচ্ছে পুলিশ। পুলিশ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:১৬
আদালতের পথে। নিজস্ব চিত্র

আদালতের পথে। নিজস্ব চিত্র

বিজেপি কর্মী সন্দীপ ঘোষ (২২) খুনের ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত শেখ সইফুল এখনও অধরা। বিজেপি-র অভিযোগ, শাসক দলের ঘনিষ্ঠ, এলাকায় বালি মাফিয়া বলে পরিচিত সইফুলকে গ্রেফতার না করে পালানোর ব্যবস্থা করে দিচ্ছে পুলিশ। পুলিশ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

রবিবার রাত সাড়ে ১০ টা নাগাদ কাঁকসার সরস্বতীগঞ্জ ও রূপগঞ্জের মাঝে জঙ্গলের রাস্তায় গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হন বিজেপি-র বুথ সভাপতি সন্দীপ। দলের জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের অভিযোগ, বিজেপি-কে আটকাতে বালি ও কয়লা মাফিয়াদের দিয়ে এমন কাজ করিয়েছে তৃণমূল। টুইটে রাজ্য বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা জেলার বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়ও একই অভিযোগ করেছিলেন। যদিও কাঁকসায় দলের তরফে দায়িত্বপ্রাপ্ত দুর্গাপুরের তৃণমূল নেতা প্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শেখ সইফুল বলে আমাদের দলে কেউ নেই।’’

এই ঘটনায় মোট ন’জনের নামে কাঁকসা থানায় অভিযোগ করেছেন সন্দীপের সঙ্গী বিজেপি কর্মী জয়দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগপত্রে ওই ন’টি নামের প্রথম দু’জন জাহারুল মিদ্যা ওরফে কাংলা ও শেখ সইফুলের হাতের বন্দুক থেকেই গুলি চলেছিল বলে অভিযোগ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে হামলাকারী দলে আরও ২৫-৩০ জন থাকার কথাও বলা হয়েছে। তবে অভিযোগপত্রে তাদের নাম নেই।

সোমবার রাতে বাড়ি থেকেই গ্রেফতার করা হয় জাহারুল মিদ্যা, শেখ হিরণ ও সুকুমার সাহাকে। কিন্তু মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত সইফুলের নাগাল পায়নি পুলিশ। মঙ্গলবার বিজেপি-র জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই অভিযোগ করেন, ‘‘এক যুবক খুন হয়ে গেলেন। অথচ শাসক দলের পক্ষ থেকে কেউ নিন্দা পর্যন্ত করলেন না! উল্টে সইফুলের মতো দুষ্কৃতীদের আড়াল করতে পুলিশ সময় নষ্ট করে তাদের পালানোর সময় দিচ্ছে।’’

কিন্তু কে এই সইফুল? স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জাটগড়িয়ার বাসিন্দা শেখ সইফুলের বিরুদ্ধে বাম আমলে বেআইনি কয়লার কারবারে যুক্ত থাকার অভিযোগ ছিল। এলাকাবাসীর দাবি, সেই সময়ে সিপিএমের ঘনিষ্ঠ ছিল সে। সিপিএম যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

তবে সিপিএম থেকে তৃণমূলের আশ্রয়ে যাওয়াটা সইফুলের পক্ষে সহজ হয়নি বলে এলাকাবাসীর একাংশ ও বিজেপি-র স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মত। তাঁদের মতে, রাজ্যে পালাবদলের পরে চাপে পড়ে যায় সইফুল। পরে একটি খুনের মামলায় নাম জড়ায় সইফুলের। শেষমেশ কারবার বদল করে কয়লার বদলে বালিকে বেছে নেয় সইফুল। বিজেপি-র অভিযোগ, নির্বিঘ্নে কারবার চালাতে এর পরেই তৃণমূলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে সইফুলের।

গত পঞ্চায়েত ভোটে সেই ‘ঘনিষ্ঠতা’ আরও বাড়ে বলে অভিযোগ বিজেপি ও সিপিএমের। এলাকায় বিজেপি-র বাড়বাড়ন্ত রুখতে ও নানা কারণে প্রবীণ তৃণমূল কর্মীদের ক্ষোভ সামাল দিতে পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় মলানদিঘি ও বিদবিহার অঞ্চলে ‘নামানো হয়’ শেখ সইফুলকে। এই এলাকায় শাসক দলের পঞ্চায়েত ভোট বৈতরণী পার করতে সে বিশেষ ভূমিকা নেয় বলেও বিজেপি-র অভিযোগ। শেখ সইফুলের মোবাইলে বারবার ফোন করা হলেও তিনি উত্তর দেননি।

মঙ্গলবার ধৃত তিন জনকে দুর্গাপুর আদালতে তোলা হলে তাদের ন’দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। তবে বিজেপি-র অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ।

আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা বলেন, ‘‘তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের জেরা করা হচ্ছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে‌ তল্লাশি চলছে।’’

Murder Arrest BJP Kanksa
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy