নিজেদেরই বাড়ির বাগানের গাছ থেকে আম পাড়তে গিয়ে দাদা, বৌদি ও ভাইপোর মারে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে আহত হয়েছেন তাঁর স্ত্রী-ও। শনিবার বেলার দিকে ঘটনাটি ঘটেছে নিউ টাউনের টেকনো সিটি থানার আকন্দকেশরী এলাকায়। মৃতের নাম সুশান্ত রায় (৩৯)। এই ঘটনায় তাঁর দাদা, বৌদি ও তাঁদের ছেলেকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন গাছ থেকে আম পাড়া নিয়ে গোলমালের সূত্রপাত। অভিযোগ, সেই গোলমালের জেরে সুশান্ত ও তাঁর স্ত্রী সুশীলাকে মারধর করেন সুশান্তের দাদা, বৌদি ও তাঁদের ছেলে। মারের চোটে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন গুরুতর জখম সুশান্ত। ঘটনার কথা শুনে পড়শি এবং আত্মীয়েরা সেখানে ছুটে আসেন। অচৈতন্য সুশান্ত এবং আহত সুশীলাকে নিয়ে যাওয়া হয় বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে। সেখানে সুশান্তকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক। তাঁর স্ত্রীকে অবশ্য প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমের সামনে সুশীলার অভিযোগ, এ দিন নিজেদেরই আম গাছের নীচে দাঁড়িয়ে আম পাড়ছিলেন সুশান্ত। সেই সময়ে হঠাৎই পিছন থেকে এসে তাঁকে বাঁশ দিয়ে পেটাতে শুরু করেন অভিযুক্ত তিন জন। আচমকা এই হামলায় প্রতিরোধ করতে পারেননি সুশান্ত। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। সুশীলা বাঁচাতে এলে তাঁকেও পেটানো হয়। কিন্তু সামান্য আম পাড়া নিয়ে এমন গোলমাল কেন? সুশীলার অভিযোগ, সমস্ত সম্পত্তি নিজের দখলে রাখতে চান তাঁর ভাশুর। এমনকি, আম গাছে হাত দিলেও আপত্তি করতেন তিনি। অথচ, ভাশুরের পরিবার তাঁদের ঘর থেকে অবলীলায় জিনিসপত্র নিয়ে চলে যেত। কিছু বলতে গেলে প্রাণে মারার হুমকিও দেওয়া হত বলে অভিযোগ। তা নিয়ে থানায় অভিযোগও জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। সুশীলার আরও অভিযোগ, এই ঘটনার নেপথ্যে তাঁর শ্বশুরবাড়ির একাংশ এবং আরও অনেকের ভূমিকা রয়েছে। দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান তিনি।
এ দিন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় টেকনো সিটি থানার পুলিশ। মৃতের দাদা, বৌদি এবং তাঁদের ছেলেকে আটক করে তারা। সুশান্তের দেহটি ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হবে পুলিশ। তবে, প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল সুশান্তকে।
এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, দুই ভাইয়ের মধ্যে সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ লেগেই ছিল। সেই তথ্য যাচাই করে দেখা হচ্ছে। পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনাস্থল থেকে বাঁশের টুকরো সংগ্রহ করা হয়েছে। এক পুলিশকর্তা জানান, অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। তিন জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। লিখিত অভিযোগ জমা পড়লে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)